ঝিনাইদহ জেলায় কোটি কোটি টাকার কয়েন ও দু টাকার কাগজি নোট নিয়ে বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা বিক্রেতরা। অনেক ব্যবসায়ীর হাতে ৫/ ১০ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৩০-৪০ লাখ টাকার কয়েন মজুত রয়েছে। ব্যাংক গুলো কয়েন নিচ্ছে না। মজুত কয়েন বস্তা ভরে রেখেছে ব্যবসায়ী ও দোকানদারা।
বর্তমান ৫, ২ ও ১ টাকা মানের কয়েন বাজারে চালু আছে। এসব কয়েন বৈধ মুদ্রা। কিন্তু সরকারি ও বে- সরকারি ব্যাংক কয়েন জমা নিতে চাই না। ফলে দিনের পর দিন কয়েন দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে কয়েন মজুতের পরিমান স্ফীত হচ্ছে।
শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ বাজারে মুদি ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম বলেন, তার কাছে প্রায় ৬ লাখ টাকা ৫ , ২ ও ১ টাকার কয়েন মজুত হয়েছে। বস্তা ভরে এ কয়েন রাখা হয়েছে। তিনি এত টাকার কয়েন নিয়ে উদ্বিগ্ন। ব্যাংক কয়েন নিতে রাজী হয় না। একটি সিগারেট কোম্পানীর ঝিনাইদহের টেরিটরি অফিসার এস এম সারোয়ার হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ ডিপোতে ৫০ লাখ এবং শৈলকুপা ডিপোতে ৩০ লাখ টাকা কয়েন মজুত রয়েছে। আর ২ টাকার নোট মজুত রয়েছে ৩০ লাখ টাকার।
তিনি আরো বলেন, তাদের কোম্পানীর কুষ্টিয়া এরিয়া অফিসের আওতায় ৮টি ডিপো আফিসে ৩ কোটি টাকার কয়েন ও প্রায় ২ কোটি টাকার ২ টাকার নোট মজুত পড়েছে। এ কয়েন ও নোট বস্তায় ভরে রাখা হয়েছে। এত বিপুল পরিমান নগদ টাকার নিরাপত্তা নিয়ে তারা চিন্তিত।
এ ছাড়াও ঝিনাইদহ সহ ছয়টি থানা শৈলকুপা, হরিণাকুন্ডু, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুরেও একই অবস্তা দেখা গেছে। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে লেনদেনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার সাংবাদিকদের বলেন, আমি ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী আমার দোকানে ৫টাকা ও ১ টাকার কয়েন অনেক জমা হয়ে গেছে এগুলো কোন কম্পানীর এস. আরকে দিতে গেলে তারা নিতে চাইনা কিন্তু বেঁচা কেনার জন্য আমাদেরকে নিতেই হয়।
কারণ এগারো টাকা বিল হলে এক টাকার কয়েন নিতে হয় বাধ্যতা মুলক। আবার পাঁচ টাকার কোন পন্য ক্রয় করলে কয়েন দিয়ে চলেযায়। আমার মাঝে-মাঝে মনে হয় বাংলাদেশ সরকার কি কয়েন ব্রান্ড করে দিয়েছে না কি ? যার জন্য কয়েন কেউ নিতে চাইছে না। আমাদের এই অসুবিধা যদি সরকার একটু দেখতো তাহলে আমাদের বেঁচা কেনা করা সুবিধা হত।
কোম্পানীর ওই কর্মকর্তা জানান, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের হেড অফিস থেকে কয়েন গ্রহনের আদেশ পত্র এনেছে। কিন্তু স্থানীয় ব্যাংকের শাখা গুলো কয়েন গ্রহন করছে না। কয়েন গ্রহনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ পত্র থাকলেও ইসলামী ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখা কয়েন গ্রহন করছে না।
ঝিনাইদহ সোনালী ব্যাংকের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার এম এ ওহাব বলেন, ব্যাংকের ভোল্টে এক লাখ ৩২ হাজার পিস ৫ টাকা, ১০ হাজার পিস ২ টাকা ও ৫০ হাজার পিস ১ টাকার কয়েন মজুত রয়েছে। অন্যান্য ব্যাংক শাখায় এ কয়েন দিলেও কেউ নিতে চাই না। এ কারনে সোনালী ব্যাংক এখন আর কয়েন নিচ্ছে না।