রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙ্গতে ৬ মাস সময় দিয়েছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেয়। বিজিএমইএ বহুতল ভবন ভাঙ্গতে ৩ বছরের সময় চেয়ে গত ৮ মার্চ আবেদন করা হয়। এর আগে গত ৫ মার্চ বিজিএমইএ বহুতল ভবন ভাঙ্গার আপিল বিভাগের রায় পুনঃবির্বেচনা (রিভিউ) চেয়ে আনা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ সাংবাদিকদের জানান, আদালতের বেধে দেয়া সময়ে এখন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকে তাদের সব মালামাল ও কার্যক্রম সরাতে হবে। রাজউক ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরু করবে।
হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভূমির মালিকানা স্বত্ব না থাকা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও জলাধার আইন ভঙ্গ করায় বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন অবৈধ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের ৩৫ পৃষ্ঠায় দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় গত বছর ৮ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে গতবছর ২ জুন আপিল বিভাগ বেঞ্চ সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলো। এ ভবনটি বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি করে বেআইনিভাবে প্রায় ২০ বছর আগে বহুতলবিশিষ্ট বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়।
হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে জলাধার রক্ষা আইন লঙ্ঘন করে হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বহুতল এ ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেয়। রায়ে বলা হয়, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমন্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ৬৯ পৃষ্ঠায় রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে আপিল করে বিজিএমইএ।
উল্লেখ্য, রাজউক-এর অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ বিষয়ে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন আইনজীবী ডি এইচ এম মুনিরউদ্দিন। বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বঃপ্রণোদিত হয়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না-এ প্রশ্নে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করে। ওই রুলের ওপর চুড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
/বাসস