হাওয়া গাড়ি অর্থাৎ হাইড্রোজেন কার বাজারে আসতে চলেছে। অশ্মীভূত জ্বালানি থেকে পরিত্রাণ পাবার এও একটা উপায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কালে এই হাইড্রোজেন খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে যাবে। এখনই তেল ভরা যায়, তবে গাড়িটি কিনতে পাওয়া যাবে আগামী বছর থেকে। দাম পড়বে ৬০ হাজার ইউরো – একটা সাধারণ গাড়ির দামের প্রায় দ্বিগুণ। টোটাল তেলের কোম্পানির মানুয়েল ফুক্স বলেন: হাইড্রোজেন কার, অর্থাৎ হাইড্রোজেনে চলে এমন গাড়ি ইতিমধ্যে অফিস কার হিসেবে ব্যবহার করা চলে, কেননা তার জ্বালানি নেবার সময় যেমন কম, তেমনই একবার ট্যাংক ভরলে বহুদূর যাওয়া যায়। এছাড়া অফিস কার মানেই প্রাইভেট কাস্টমাররাও শিঘ্রই সেদিকে ঝুঁকবেন। হাইড্রোজেনের জয়যাত্রা এ গাড়ির একজস্টে কোনো ধোঁয়া নেই, শুধু ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে। গাড়ির প্রায় কোনো আওয়াজ নেই। একবার ট্যাংক ভরলে চারশো কিলোমিটার যেতে পারে। এ যাবৎ সারা দেশে খুব বেশি হাইড্রোজেন ভরার কেন্দ্র নেই। আর দশ বছরের মধ্যে দেশজোড়া একটা নেট তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। হাইড্রোজেন এভাবে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসকে পিছনে ফেলে দিতে পারে। লিন্ডে কোম্পানির টিম হাইস্টারকাম্প বলেন: আমরা যদি ধরে নিই যে, মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে হাইড্রোজেন সৃষ্টি করতে পারব, তাহলে আমরা অশ্মীভূত জ্বালানি আমদানি থেকে অনেকটা সরে আসতে পারব। জটিল প্রযুক্তি হাইড্রোজেন উৎপাদনের ক্ষেত্রে লিন্ডে কোম্পানি অন্যতম: বহু বছর যাবৎ তারা এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে আসছে। কারখানার ম্যানেজার জানেন যে, চাহিদা একদিন বাড়বেই। তখন লিন্ডে -র প্রতিযোগীরা এ ধরনের কারখানা বানাতে হিমশিম খেয়ে যাবে। গ্যাসের আগুন চুল্লিটিকে ১,০০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অবধি উত্তপ্ত করে। সেই উত্তাপে পানি হাইড্রোজেনে পরিণত হয়, যা ঐ জ্বালানি শক্তিকে ধরে রাখে। কারখানার পরিচালক রেনে ম্যুলার বলেন: এই দক্ষতায় পৌঁছাতে বহু বছর কেন, বহু দশক লেগে যায়। এই পাইপের জঙ্গল দেখলে বোঝা যায় যে, এটা একটা খুব জটিল প্রযুক্তি। কোটি কোটি ইউরো-র এক অনাবিষ্কৃত বাজার এবং ব্যবসা, যার জন্য লিন্ডে ইতিমধ্যেই একটি ফিলিং প্ল্যান্ট তৈরি করে ফেলেছে। আর কয়েক বছরের মধ্যেই এখান থেকে ট্যাংকেরে করে জ্বালানি যাবে খরিদ্দারদের কাছে।