ডিমের দাম সাত টাকা। মহার্ঘ্য হতেই হইচই চারদিকে। তারই মধ্যে ডিমকে ঘিরে নতুন বিতর্ক। ডিম নাকি নিরামিষ! এমনই দাবি করেছে ন্যাশনাল এগ কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এনইসিসি)। একাদশী বা শনি—মঙ্গলবার যাঁরা নিরামিষ খান তাঁরাও খেতে পারেন ডিম। স্বাভাবিকভাবেই দ্বন্দ্ব বেড়েছে ডিমকে আমিষ ভেবে আসা বাঙালির মনে।
অধিকাংশ বাঙালি বাড়িতেই মাছ, মাংসের সঙ্গে ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল আমিষ। কখনও প্রোটিন মেপে তো কখনও খাদ্যের উৎস অনুসন্ধান করে আবার কখনও খাবার কতটা গুরুপাক তা বিচার করে আমিষ নিরামিষের শ্রেণি বিভাজন হয়। লো ব্লাড প্রেসার, প্রোটিনের অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত বিধবা মহিলাকে ডাক্তারবাবু যতই ডিম খেতে বলুন, কিন্তু তা হেঁশেলে ঢোকে না। যদিও এনইসিসি ও বিজ্ঞান ডিমকে নিরামিষ বলে বেশ কিছু যুক্তি দিয়েছে।
মাংস তত্ত্ব: বিজ্ঞানের সংজ্ঞা মেনে যা মাংসল তাই আমিষ। কিন্তু ডিমে কোনও মাংস অর্থাৎ পেশিকোষ নেই। তাই ডিম আমিষ নয়।
মুরগি থেকে ডিম: মুরগি থেকে ডিম পাওয়া গেলেও এর জন্য মুরগিকে হত্যা করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু মাছ-মাংস খেতে গেলে সেই প্রাণিকে হত্যা করতে হয়। আবার প্রাণিজ সব খাবারই সব সময় আমিষ হিসাবে বিবেচ্য হয় না। প্রাণিজ নিরামিষ খাবারের অন্যতম উদাহরণ দুধ।
কোনও প্রাণীকোষ নেই: ডিমের তিনটি স্তর। খোসা, সাদা অংশ ও কুসুম। ডিমের সাদা অংশ মূলত প্রোটিন ও জলের মিশ্রণ। এতে কোনও প্রাণী কোষ নেই। ফলে ডিমের সাদা বিশুদ্ধ নিরামিষ। এবং ডিমের এই অংশ দিয়ে তৈরি যে কোনও খাবারই নিরামিষ।
কুসুম নিরামিষ হলেও: কোলেস্টেরল, প্রোটিন ও জলের মিশ্রণ দিয়ে কুসুম তৈরি হলেও এতে ভ্রূণ কোষ থাকে যা সহজেই অন্য অংশ থেকে পৃথক করা যায় না। ফলে কুসুম অংশটুকু আমিষ হিসাবে বিবেচ্য হতে পারে।
ডিম থেকে মুরগি: নিষিক্ত না হওয়া ডিমগুলিই মূলত বাজারে বিক্রি হয়। ফলে সেই ডিম ফাটালে তা থেকে মুরগির বাচ্চা বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই। বিরলতম সেই সম্ভাবনার ভয়ে ডিমের স্বাদ বা পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবেন? ভেবে দেখুন।
যদিও স্কুলে মিড মিলে ডিম দেওয়ার প্রসঙ্গে এনইসিসি-র বক্তব্য, যেসব পড়ুয়া ডিমকে আমিষ বলে বিশ্বাস করে তাদের জোর করে ডিম খাওয়ানোর দরকার নেই। একইভাবে নিরামিষাশীদের ডিম খেতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলে মত পুষ্টি—বিজ্ঞানীদের।
খবর - সংবাদ প্রতিদিন