বাড়িতে Wi-Fi রাউটার লাগিয়েই খালাস। এ নিয়ে বিশেষ আমরা কেউ মাথা ঘামাই না। বিশেষত আইপি অ্যাড্রেস। সার্ভিস প্রভাইডার বা আইটির ওপরই ছেড়ে দিই। রাউটার ঠিকঠাক কাজ না করলে কী করতে হবে, কী ভাবে ভালো কানেকশন মিলবে, তা নিয়ে আমরা ভাবিত নই। কিন্তু, খুব সহজে, সামান্য পরিবর্তনেই বাড়িয়ে ফেলতে পারি Wi-Fi-এর ক্ষমতা।
রাউটার রাখতে হবে ঠিক জায়গায়: ঘরে Wi-Fi কভারেজ ঠিকঠাক পাচ্ছেন না? আপনার বাড়িতে রাউটার ঠিক জায়গায় বসানো আছে তো? জেনে রাখুন, হোম রাউটারের রেঞ্জ হচ্ছে ১০০ ফুট। ফলে, রাউটার বসানোর জায়গাটি সেন্ট্রাল লোকেশনে হলে ভালো। দেওয়াল থেকে যতটা দূরে রাখা যায়। মাথায় রাখতে হবে, আয়না বা বৈদ্যুতিন সামগ্রীর কাছে যাতে না-থাকে। এগুলো খেয়াল রাখলে, সিগন্যাল ভালো পাবেন। আরও একটা জিনিস ভুলবেন না। চেষ্টা করুন, রাউটার উঁচুতে রাখার। ভালো হয়, আপনার ঘরের যা উচ্চতা, তার তিন চতুর্থাংশ উঁচুতে যেন হয়।
কিনুন একটু বড় অ্যান্টেনা: রাউটার কেনার সময় অ্যান্টেনা কেমন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার রাউটারের সঙ্গে যে অ্যান্টেনা পাচ্ছেন, তা ভালো নাও হতে পারে। কারণ সস্তায় দিতে গিয়ে, অনেক সময়ই ভালো অ্যান্টেনা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে, ভালো হয়, যদি আপনার রাউটারের সঙ্গে মানানসই অ্যান্টেনা আলাদা করে কিনে নেন। বা বুস্টার অ্যান্টেনাও কিনতে পারেন। তাতে রেঞ্জের পাশাপাশি Wi-Fi-এর শক্তিও বাড়বে।
রাউটার সফটওয়্যার: রাউটারের মধ্যেই সফটওয়্যার সেটিং থাকে। অনেক সময়ই আমরা তা খেয়াল করি না। বা করলেও ভ্রুক্ষেপ করি না। ভালো কানেকশান পেতে হলে, রাউটার সেটিং-এ ঢুকো প্রয়োজনীয় সেটিংস চেঞ্জ করতে হবে। মনে রাখবেন, বেশির ভাগ রাউটারই কিন্তু ডিফল্ট চ্যানেলে কাজ করে। সেক্ষেত্রে একই ব্রডকাস্ট চ্যানেলের মধ্যে অনেকগুলো রাউটার কাজ করলে, কানেকশান ভালো পাবেন না। আপনার রাউটারে ঢুকে তাই আগে সেটিংস ঠিক করুন।
ঘরে রিপিটার ইনস্টল করুন: হ্যাঁ, কানেকশন ভালো পাওয়ার জন্য রিপিটার ইনস্টল করতে পারেন। রিপিটারের কাজ হল, আপনার Wi-Fi রাউটার থেকে সিগন্যাল নেওয়া। তার পর, সেটাতে সামনে ঠেলে রেঞ্জটাকে বাড়ানো। স্মার্টফোন ওয়াল প্লাগের মাপে কমপ্যাক্ট রিপিটার বাজারে পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে যেটা মাথায় রাখতে হবে, রাউটার এবং রিপিটারের যেন একই Wi-Fi SSID নাম হয়। এরপর রাউটারের IP অ্যাড্রেস কনফিগার করতে হবে। স্ট্যাটিক IP অ্যাড্রেস ঠিক করতে হবে।
থার্ড-পার্টি হ্যাকস: রাউটারের সিগন্যাল ও কভারেজ এরিয়া বাড়ানোর জন্য দুটো থার্ড-পার্টি হ্যাক প্রয়োগ করতে পারেন। প্রথমটা হল, সফট ড্রিংকের অ্যালুমিনিয়াম ক্যান। ক্যানটি প্যারাবোলিক আকারে কেটে ফেলুন। সেটা রাউটার অ্যান্টেনার কাছে রাখুন। ক্যান না-থাকলে, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
রাউটার সিকিওরিটি: রাউটার পালটে নতুন লাগালে, প্রয়োজনীয় সেটিংটাও চেঞ্জ করে ফেলতে হবে। তার জন্য প্রথমেই রাউটারের আইপি অ্যাড্রেস জানাটা জরুরি। উইন্ডোজ পিসির জন্য কম্যান্ড প্রম্পট (Win+R then type cmd) খুলুন। সেখানে টাইপ করুন ipconfig। আইপি কনফিগারিং খুলে গেলে, 'ডিফল্ট গেটওয়ে' আইপি অ্যাড্রেসে যেতে হবে। আর MAC হলে, খুলতে হবে Network eway' আইপি অ্যাড্রেস। এরপর নেটওয়ার্ক পারফরমেন্সে গিয়ে আইপি অ্যাড্রেস কপি করুন। এরপর ওয়েব ব্রাউজারে রাউটারের আইপি অ্যাড্রেস টাইপ করলে, ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড চাইবে। সাধরণত, অ্যাডমিন ও পাসওয়ার্ড বা দুটোতেই অ্যাডমিন লিখলেই চলে যায়। যদি না তা আগে পরিবর্তন হয়ে থাকে। Wi-Fi এর নাম, সিকিওরিটি ও পাসওয়ার্ড পরেও বদলানো যায়। আরও সিকিওর নেটওয়ার্কের জন্য WPA2-AES বেছে নিন। আপনি বেছে নিতে পারেন stop broadcasting the Wi-Fi networkটিও। সেক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের নাম কোনও ডিভাইসে দেখাবে না। ম্যানুয়ালি কানেক্ট করতে হলে, Wi-Fi-এর নাম ও পাসওয়ার্ড আপনাকে জানতে হবে। বেশির ভাগ রাউটারে MAC ID filtering-এর সেটিং রয়েছে।
আপনার Wi-Fi লক করুন: হতেই পারে আপনার কোনও বা কিছু বন্ধুকে Wi-Fi পাসওয়ার্ড দিয়ে রেখেছেন। বা, প্রতিবেশী কেউ আপনার অনুমতি ছাড়াই দিব্য আপনার Wi-Fi ব্যবহার করছে। তা যাতে না-হয়, সে জন্য আপনার Wi-Fiকে লক করতে হবে। Wireless Network Watcher ডাউনলোড করে নিলে সহজেই ধরতে পারবেন। তবে, শুধুমাত্র উইন্ডোজেই এটা কাজ করে। কানেক্ট হওয়া প্রত্যেকটা ডিভাইজের নাম দেখিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে তাদের আইপি অ্যাড্রেসও। এটা কাজ না করলে, রাউটার সেটিং পেজে গিয়ে, কানেক্টেড ডিভাইসে যান।