২০০২ সালের কথাই ভাবুন! প্রমাণ সাইজের সব মোবাইল ফোন তখন সবার হাতে হাতে ঘুরত। আর সেসব ফোনের ব্যাটারিও আকারে কম যেত না। সেই লিথিয়াম ব্যাটারিই ছিল মোবাইল ফোনের প্রাণ। এসব ব্যাটারিকে আগলে রাখতে হতো খুব যত্ন করে। অনেক সময়ই ব্যাটারি ফুলে ওঠা কিংবা বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ব্যাটারির নানা সমস্যা থেকে তৈরি হয়েছে অনেক রকমের ভ্রান্ত ধারণা। যেগুলোর কোনো কোনোটি হয়তো নোকিয়া ৩৩১০ মডেলের যুগে সত্য ছিল, কিন্তু এ যুগে এসে সেসব ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ, স্মার্টফোন উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উন্নত হয়েছে তার মূল শক্তি ব্যাটারি।
১. চার্জ বাঁচাতে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ আদতে তেমন চার্জ নিঃশেষ করে না, যেটি মানুষ ভেবে থাকে। আপনার মোট ব্যাটারি লাইফের ওপর এটি তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু যদি আপনি আপনার ব্যাটারির ‘শেষ বিন্দু’ চার্জটুকুও ধরে রাখতে চান, তবে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করে দিতে পারেন। তবে চার্জ বাঁচাতে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করার চেয়ে সেগুলোর রিফ্রেশ হওয়ার সেটিংস পরিবর্তন করতে পারেন। এতে চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখা যেতে পারে। খুব ঘন ঘন রিফ্রেশ হয়, এমন অ্যাপ আপনার ব্যাটারির চার্জ নষ্ট করতে পারে।
২. শুধু নিজের ফোনের চার্জার দিয়েই চার্জ আপনার স্মার্টফোনের চার্জার ছাড়া অন্য চার্জার দিয়ে চার্জ দিলে ব্যাটারির কোনো ক্ষতি হয় না। আপনার ব্যাটারি লাইফের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে অন্য চার্জার। চার্জারভেদে ফোনের ব্যাটারি ফুল হতে সময়ের হেরফের হতে পারে। তবে স্মার্টফোনের চার্জার বাদ দিয়ে অন্য কোনো ডিভাইস দিয়ে চার্জ দিতে গেলে বাধতে পারে বিপত্তি। সে ক্ষেত্রে ভোল্টেজ ও বিদ্যুৎ প্রবাহের তারতম্য ঘটতে পারে।
৩. সারা রাত চার্জ দিলে ব্যাটারির ক্ষতি হবে পুরোনো দিনের ফোনের ব্যাটারির জন্য এই কথা প্রযোজ্য। সেসব ব্যাটারিতে শতভাগ চার্জ হওয়ার পর অতিরিক্ত চার্জ ক্ষতি করতে পারত ব্যাটারি কিংবা ফোনের অথবা দুটোরই। তবে এ যুগের বেশির ভাগ স্মার্টফোনের ব্যাটারি নতুন এক প্রযুক্তি অনুসরণ করে, যার নাম ‘ট্রিকল ব্যাটারি’। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাটারি যখনই ৮০ শতাংশ চার্জড হয়ে যায়, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈদ্যুতিক প্রবাহ কমে যায়। আর যখন শতভাগ চার্জ হয়ে যায়, তখন পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ প্রবাহ। সেদিক থেকে বলা যায়, আপনার স্মার্টফোন চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে খুব একটা ক্ষতি হবে না।
৪. চার্জ হওয়ার সময় ব্যবহার করা যাবে না ফোন চার্জ হওয়ার সময় ফোন ব্যবহারে নেই কোনো সমস্যা। এটি যেমন আপনার ক্ষতি করবে না, ঠিক তেমনি ক্ষতি হবে না আপনার ব্যাটারি কিংবা স্মার্টফোনের।
৫. প্রথম ব্যবহারের আগে চার্জ দিতে হবে ফোন স্মার্টফোনের বাক্সটি খোলার পরেই যে কাজটি প্রথম করতে হবে তা হলো, চার্জিং! এমন বাণী অনেকেই শুনেছেন অনেকবার। তবে সত্যি কথা বলতে, স্মার্টফোনের মতো স্মার্টফোনের ব্যাটারির কোনো মেমোরি নেই। প্রথম-দ্বিতীয় হিসাবে তাই ব্যাটারি কখনো করে না। আর প্রথমবার কয়েক ঘণ্টা চার্জ দিয়ে আপনি আপনার ব্যাটারির আয়ুও বৃদ্ধি করে ফেলতে পারবেন না। প্রথমবারের মতো ফোন চালু হওয়ার সময় হয়তো এটি চার্জারের সঙ্গে কানেক্ট করতে বলতে পারে। তবে এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতা।