প্রাক্তন কোচ অনিল কুম্বলে ও বিরাট কোহলির মধ্যে আসলে কী হয়েছিল? কী জন্য দুজনের মন কষাকষি হয়েছিল? দুজনেই এব্যাপারে সবিস্তারে কিছু বলতে চাননি। তবে কুম্বলে ইস্তফা দেওয়ার পর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তিনি ক্রিকেটারদের আয়না দেখাতে চেয়েছিলেন। বিরাট কোহলি অবশ্য স্পিকটি নট। তিনি জানিয়ে দেন, ড্রেসিংরুমের কথা বাইরে বলবেন না। বিসিসিআই সূত্রে খবর, দুজনের ঝামেলা অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছিল। বিসিসিআই কর্তা রাজীব শুক্লা তো বলেই দিয়েছিলেন, অধিনায়ক ও কোচের মধ্যে গত ৬ মাস ধরে কথা বন্ধ ছিল।
বিসিসিআই সূত্রের খবর, বিরাট কোহলি রবি শাস্ত্রীকেই চেয়েছিলেন। কিন্তু সৌরভদের কমিটি কুম্বলকে নির্বাচন করে। যা নিয়ে আদৌ খুশি ছিল না টিম ইন্ডিয়া। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মেন্টর ছিলেন কুম্বলে। তখন কোহলি উঠতি যুবা। প্রাক্তন ভারতীয় লেগস্পিনারের সঙ্গে সংঘাত শুরু। প্রশ্ন উঠছে, তা কী জানত না বিসিসিআই? না সৌরভদের পরামর্শদাতা কমিটি? তাহলে কেন কুম্বলকে কোচ করা হল? কেন বিরাটদের মতামত বিবেচনা করা হল না?
নিউ জিল্যান্ড সিরিজেই কুম্বলে ও কোহলির সম্পর্কে ফাটল দেখা যায়। ওই সিরিজে কোহলির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি ছিলেন না কুম্বলে। তিনি ভারতীয় অধিনায়ককে সেটা জানিয়েছিলেন। দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কিও হয়েছিল বলে বিসিসিআই সূত্রে খবর।
অনিল কুম্বলের সঙ্গে শুধু মতান্তরই নয়, তিনি বিশ্বাসযোগ্যতাও হারিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে প্রথম টেস্টে পুণেতে হারেন বিরাটরা। পুণের পিচ কুম্বলের নির্দেশেই ঘূর্ণি করা হয়েছিল। অথচ হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে কুম্বলে স্পষ্ট জানান, ”আমি ঘূর্ণি করতে বলিনি।” সংবাদমাধ্যম ধরে নেয়, অধিনায়কই বলে থাকতে পারেন। কিন্তু বিসিসিআই সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে ফোন করে ঘূর্ণি পিচ বানাতে কুম্বলেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ হারার পর দায় ঝেড়ে কার্যত কোহলিকেই কাঠগড়ায় তুলে দেন। এটা মেনে নিতে পারেননি অধিনায়ক। রবি শাস্ত্রী ডিরেক্টর থাকাকালীন স্বীকার করতেন, “আমাদের শক্তি স্পিনে। আমরা স্পিনিং ট্র্যাক বানাব।” কিন্তু কুম্বলে নিজেকে আড়াল করেন।
অধিনায়ক বিরাট কোহলি পরিশ্রমী। এবং শৃঙ্খলাপরায়ণ। তবে তিনি ড্রেসিংরুমে মুখভারী করে থাকায় বিশ্বাসী নন। বরং ইয়ার্কি ঠাট্টা চালিয়ে যান। কুম্বলে আবার সিরিয়াস। পাশাপাশি কুম্বলে নাকি সব ব্যাপারেই নাক গলাতেন। তিনি দলের একাদশে কে থাকবে, সেটাও ঠিক করে দিতে চাইতেন। অধিনায়কের মতামত শোনার চেষ্টা করতেন না। কোহলি আবার নিজের অবস্থানে অনড় থাকতেন। সব বিষয়েই নাকি কোচ-অধিনায়কের মতবিরোধ লেগেই থাকত। কুম্বলের এই হেডমাস্টার সুলভ আচরণ একেবারেই নাপসন্দ বিরাটের। তিনি ক্রিকেটারদের উপরে চাপ দিতে বিশ্বাসী নন। জুনিয়রদের সঙ্গে সাবলীলভাবে মিশতেন। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ চাইতেন বন্ধুত্বপূর্ণ রাখতে।