প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের কথা বলে যে নির্বাহী নির্দেশ জারি করেন, সে নির্বাহী নির্দেশের প্রতি সমর্থন দানে অস্বীকৃতি জানানোয় অস্থায়ী এ্যাটর্নী জেনারেল স্যালী ইয়েটসকে তিনি বরখাস্ত করেন এবং এরই মাত্র ঘন্টা কয়েক বাদে তাঁর জায়গায় নিযুক্ত নতুন কর্মকর্তা, "আমাদেরকে আমাদের প্রেসিডেন্টের আইন সম্মত আদেশ পালন করতে হবে বলে অধিনস্ত কর্মচারীদের প্রতি হুকুম জারি করেন।"
ট্রাম্প নিয়োজিত নতুন অস্থায়ী এ্যাটর্নী জেনারেল ডেনা বনটে কংগ্রেসের সেনেট সভা সার্বক্ষনিক একজনকে এ্যাটর্নী জেনারেল পদে নিযুক্তিতে অনুমোদন না দেওয়া অব্দিই এ পদে কাজ করবেন। এ পদের জন্যে ট্রাম্প মনোনিত সেনেটর জেফ সেসন্সের নিযুক্তি নিয়ে আজ মঙ্গলবারেই সেনেট জুডিশিয়ারী কমিটিতে ভোটাভুটি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং গোটা সেনেটের অনুমোদন সপ্তাহের শেষ নাগাদ পাওয়া যেতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
সদ্য বরখাস্ত স্যালী ইয়েটসকে নিযুক্ত করেছিলেন সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং তিনিই বিচার বিভাগীয় কর্মচারিদের জন্যে লেখা নির্দেশ নামায় লেখেন- ট্রাম্পের নির্বাহী নির্দেশ আইন সম্মত বলে স্থির নিশ্চিত নন তিনি, ব্যস ওখান থেকেই নাটকীয় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
কালবিলম্ব না করেই হোয়াইট হাউসের তরফে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়, ঝটপট বরখাস্ত হয়ে যান স্যালী ইয়েটস।
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্টনিয়ো গুটেরেস বলেছেন- অচীরেই যুক্তরাষ্ট্র, আবার আগের মতোই শরনার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টি তার তালিকায় উচ্চ স্থানে পুন:প্রতিষ্ঠিত করবে, তেমনটাই আশা তাঁর। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শরনার্থী প্রবেশ একশো বিশ দিনের জন্যে নিষিদ্ধ করে নির্বাহী নির্দেশ জারি করেছেন।
সোমবার আদ্দিস আবাবায়, আফ্রিকী ইউনিয়ন কনফারেন্স চলাকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে গুটেরেস বলেন, শরনার্থী সুরক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল এক ঐতিহ্য রয়েছে। জাতিসংঘের পূর্বতন এই শরনার্থী বিভাগীয় প্রধান বলেন, শরনার্থীদের সূরক্ষা নিশ্চিত করা অতীব গুরুত্বপুর্ণ একটি বিষয়।
শরনার্থী বিভাগীয় বর্তমান জাতিসংঘ হাই কমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডী সোমবার বলেন, মনভাঙ্গা মানুষগুলো এখন বিভ্রান্ত-আশংকিত-দিশেহারা, ঐ কথা শোনবার পর যে তারা এখন আর যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারবে না, বিশেষ করে দরখাস্ত জমার দীর্ঘ প্রলম্বিত প্রক্রিয়া তারা সাঙ্গ করবার পর।
গ্রান্ডি তাঁর জেনিভাস্থ দফতর থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্পের এ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞায় এ মানুষগুলোর কি হবে তা ভেবে তিনি নিতান্তই বিচলিত।
অন্যদিকে, ইরান এবং অপর ৬টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে আগতদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ অস্থায়ীভাবে যে নিষিদ্ধ করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প, সারা দুনিয়া জোড়া ইরানী মানুষজন তাতে অসন্তোষ ব্যক্ত করছেন।
সোমবার বেশ কয়েকজন টেলিফোন করে ভয়েস অফ আমেরিকার পার্সিয়ান সার্ভিসের খোলামেলা বক্তব্যের অনুষ্ঠান স্ট্রেইট টক প্রোগ্রামে তাঁদের নিজেদের বা বন্ধুবান্ধব-আত্মীয় পরিজনের ভ্রমন বাতিল বা তা বিলম্বিত হওয়ার করূন কাহিনী তুলে ধরেন। লসএঞ্জেলেস থেকে এমনি এক মহিলা নাদেরী জানান, তাঁর ভাই গ্রীন কার্ড পেয়ে এখানে আসছিলেন আবুধাবী হয়ে। ইরানীদেরকে আঠারো ঘন্টা অপেক্ষা করানোর পর জানিয়ে দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্র গামি বিমানে তাঁরা চড়তে পারবেন না এবং তাঁদেরকে ওভাবেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ওয়াশিংটন রাজ্যের সিয়াটেল থেকে টেলিফোন করেন হামিদ। সড়ক পথে কানাডার ভ্যানকুভার থেকে যুক্তরাষ্ট্র আসছিলেন তিনি। বলেন, কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সড়ক সীমান্তে ঝাড়া তিন ঘন্টা তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। ৯০ দিনের যে চলতি ভ্রমন নিষেধ বলবত রয়েছে সেটা পার না হওয়া অবধি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোথাও না যাওয়ার পরামর্শ দেন গ্রীন কার্ড ধারী হামিদকে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের কর্মচারীরা।
ভয়েস অফ আমেরিকা