খেলাধুলাই হাইনরিশ পপফ-এর ধ্যানজ্ঞান। ২৮ বছর বয়স্ক এই যুবক প্রতিবন্ধীদের অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় সেরা অ্যাথলিটদের একজন। ন বছর বয়সে এক টিউমারের কারণে তাঁর বাঁ পায়ের একটা অংশ হারাতে হয়। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে পেশাদারি ফুটবল খেলোয়াড় হবার স্বপ্ন ত্যাগ করতে হয়। পপফ বলেন, অ্যাম্পুটেশনের পর হাসপাতালের জানালার বাইরে তাকিয়ে বাচ্চাদের ফুটবল খেলা দেখতে খুব কষ্ট হয়েছিল। বাইরে যেতে না পারার কষ্ট মনকে যতটা পীড়া দিত, কেমোথেরাপি ততটা কষ্টকর ছিল না। অঙ্গহানি মেনে নেবার এটাই ছিল প্রথম ধাপ। খেলার মাঠে আমার আর জায়গা নেই। এতে কার না মেজাজ খারাপ হয়! তখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়, যে আর খেলা যাবে না। দু টো না একটা পা আছে, তাতে কিছুই এসে যায় না। তখন খেলার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে গেল। নিজের প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে পড়লাম।
হাইনরিশ পপফ সেই প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও হার মানেননি। বছরের পর বছর ধরে অনুশীলন ও কৃত্রিম অঙ্গের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে তাঁর মুভমেন্ট বাকি খেলোয়াড়দের থেকে আলাদা নয়। ২০১২ সালের গ্রীষ্মে পপফ লন্ডনে প্যারালিমপিক্স-এর জন্য অনুশীলন করেছেন। ১০০ মিটার দৌড়ে তিনিই ছিলেন ফেভারিট। পপফ বলেন, এথেন্সে তৃতীয় ও বেইজিং-এ দ্বিতীয় স্থান পেয়েছি। আমার মটো হলো ৩-২-১। এভাবেই গুনতে শিখেছি। লন্ডনে জিততেই যাচ্ছি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান আগেই পেয়েছি। এবার আমি জয় চাই।
পপভ ১০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। তাঁর জন্য বিশেষভাবে কার্বনের তৈরি কৃত্রিম অঙ্গই এমন ক্ষমতা নিশ্চিত করছে। পপফ বলেন, এই কৃত্রিম অঙ্গের বৈশিষ্ট্য হলো, এর উপর পুরোপুরি নির্ভর করা যায়। মাঝরাস্তায় বিকল হয়ে যায় না। একশ শতাংশ আস্থা করা যায়।
অটো বক কোম্পানি বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রস্তুত করে। প্রত্যেকটি আলাদা করে ব্যবহারকারীর বিশেষ প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করা হয়। ফলে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পান।
অস্কার লিওনার্দ কার্ল পিস্টোরিয়াস (ইংরেজি: Oscar Leonard Carl Pistorius; জন্ম: ২২ নভেম্বর, ১৯৮৬) দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দৌড়বিদ। তার দুই পা নেই; ফলে তিনি টি৪৩ শ্রেণীভূক্ত হওয়া স্বত্ত্বেও টি৪৪ শ্রেণীভূক্ত দলের দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি টি৪৪ শ্রেণীর প্রতিযোগিতায় ২০০ মিটার ও ৪০০ মিটার দৌঁড় বিষয়ে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী। এছাড়াও, যুগ্মভাবে টি৪৩ শ্রেণীর ১০০ মিটার দৌড়ের বিশ্বরেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছেন।