মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতে তীব্র গরম ও দাবদাহের কারণে মৃতের সংখ্যা এক হাজার একশ’ ছাড়িয়ে গেছে। জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস ও সিএনএন। আর তীব্র গরমে দেশটির রাজধানী নয়া দিল্লির পিচ ঢালা সড়ক গলতে শুরু করেছে। দিল্লির তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি চলে গেছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। গরমের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা রাজ্যে। এক অন্ধ্র প্রদেশেই গরমের কারণে ৮৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। আর প্রতিবেশী রাজ্য তেলেঙ্গানায় মৃতের সংখ্যা ২৬৬ জন। দুই রাজ্যে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যথাক্রমে ৪৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৪৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড গরমের কারণে গুরুতর প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না ভারতবাসী। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বিপি যাদব জানিয়েছেন, ভারতে বর্তমান তাপমাত্রা দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার যাবতীয় রেকর্ড ছাড়িয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছে। তিনি জানান, পাকিস্তানের সিন্ধু রাজ্য থেকে উত্তর ও কেন্দ্রীয় ভারতের দিকে বয়ে আসা গরম বাতাসের কারণে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ‘পশ্চিমা বাতাসের কারণে এই চরম ও শুষ্ক তাপমাত্রা ভারতকে উত্তপ্ত করে তুলছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই উচ্চ তাপমাত্রা দেশটিতে আরো দু’দিন অব্যাহত থাকবে বলে গতকাল মঙ্গলবার এক সতর্কবার্তায় জানায় দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া এরপর আরেকটি দাবদাহ ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানানো হয়। ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, বিহার, রাজস্থান ও হরিয়ানা রাজ্যতেও গরমের প্রভাব ভয়াবহ। এছাড়া উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড এবং অন্ধ্র প্রদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের গরমে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা ‘হিটস্ট্রোক’ ও পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। জানা গেছে, গরমের প্রভাব মূলত পড়ছে দেশটির দরিদ্র জনগণের ওপরেই। মঙ্গলবার নিহতদের অধিকাংশই হয় নির্মাণশ্রমিক, নয় বয়োজ্যেষ্ঠ্য অথবা উদ্বাস্তু মানুষ। এই ভয়াবহ গরম থেকে ভারতবাসী আগামী ৩১ মে নাগাদ মুক্তি পেতে পারেন, যদি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মৌসুমি বায়ুর কারণে বৃষ্টির আশা বাস্তব হয়।