চারপাশে এই ভেজালের দুনিয়াতে ডিমেও এখন ভেজাল। প্রথম প্রথম কৃত্রিম ডিমের বিষয়কে গুজব মনে হলেও এখন সেটা বাস্তব। বাংলাদেশ সহ আশেপাশের অনেক দেশেই নকল ডিমের সন্ধান পাওয়া গেছে। রাসায়নিক প্লাস্টিকের ডিম নিয়ে ভারতের চলছে শোরগোল। চীনের রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় সীমান্তের চোরাপথে চীন থেকে কৃত্রিম ডিম পাচার হয়ে আসছে। আর এসব ডিম চলে আসছে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। যা দেখতে অবিকল হাঁস মুরগির ডিমের মতো। মানুষ ভুল করে কৃত্রিম ডিমকে আসল ডিম ভাবছে। এসব কৃত্রিম বা নকল ডিম এক কথায় বিষাক্ত।
বিজ্ঞান সাময়িকী “দ্যা ইন্টারনেট জার্নাল অফ টক্সোকোলজি”তে কৃত্রিম ডিম সম্পর্কে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ডিমে কোনো খাদ্যগুণ ও প্রোটিন থাকে না। বিষাক্ত এই কৃত্রিম বা নকল ডিম তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রেসিন, জিলেটিন। যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এই নকল ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। নকল ডিমের ক্যালসিয়াম কার্বাইড ফুসফুসের ক্যান্সারসহ জটিল রোগের কারণ।
নিজের ও পরিবারের সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে নকল ডিম চিনে রাখা জরুরী। কিভাবে চিনবেন নকল ডিম? জেনে নিনঃ
১. কৃত্রিম ডিম আকারে আসল ডিমের তুলনায় সামান্য বড়।
২. সাধারণ ডিমের চেয়ে এই ডিম বেশি ঝকঝকে।
৩. ডিম ঝাঁকালে পানি গড়ানোর মতো শব্দ হয়।
৪. ডিম ভাঙার পর সাদা অংশ ও কুসুম এক হয়ে যায়।
৫. ভাঙার পর আসল ডিমের মতো কুসুম এক জায়গায় না থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
৬. নকল ডিমের আকৃতি অন্য ডিমের তুলনায় তুলনামূলক লম্বাটে ধরণের হয়ে থাকে
৭. এই ডিম সিদ্ধ করলে কুসুম বর্ণহীন হয়ে যায়।
৮. এর খোলস বেশি শক্ত। খোলের ভেতর রাবারের মতো লাইন থাকে।
৯. এর খোলস খুব মসৃণ হয়। খোসায় প্রায়ই বিন্দু বিন্দু ফুটকি দাগ দেখা যায়।
১০. রান্না করার পর এই ডিমে অনেক সম্যেই বাজে গন্ধ হয়। কিংবা গন্ধ ছাড়া থাকে। আসল কুসুমের গন্ধ পাওয়া যায় না।
১১. নকল ডিমকে কোন তীব্র গন্ধ যুক্ত বস্তুর সাথে রাখেন, ডিমের মাঝে সেই গন্ধ ঢুকে যায়। রান্নার পরেও ডিম থেকে সেই গন্ধই পেতে থাকবেন।
১২. আসল ডিম ভাঙলে মুড়মুড়ে শব্দ হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের ডিমে তেমন শব্দ হয় না।
১৩. নকল ডিমের কুসুমের চারপাশে রাসায়নিকের পর্দা থাকে।
১৪. নকল ডিম ভেঙে রেখে দিলে পিঁপড়া বা পোকামাকড় আসে না।