টলিউডের লাভ স্টোরিতে আরও একটি বড় ব্রেকিং নিউজ। এক পরিচালককে নিয়ে দুই অভিনেত্রীর প্রেমকাহিনিতে নয়া মোচড়। টানাপোড়েন এতটাই চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছেছে, যে এক নায়িকা ঘুমের ওষুধ খেলেন তো অন্যজন লাইটার দিয়ে গায়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করলেন। বক্স অফিসে একাধিক হিট সিনেমার এই দুই অভিনেত্রী হলেন মিমি ও শুভশ্রী। আর তরুণ পরিচালক অবশ্যই রাজ চক্রবর্তী।
গত বছর আগস্ট মাসে তুরস্কে শুটিং করতে যাওয়ার পর রাজ-মিমির সম্পর্ক ভেঙে যায়। এই সম্পর্ক ভাঙায় মিমি যে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না, তা স্বীকার করেছেন প্রকাশ্যেই। কিন্তু পরের মাস থেকেই শুভশ্রীর সঙ্গে রাজের সম্পর্ক ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। দু’জনেই অল্প দিনের মধ্যেই গভীর প্রেমে ডুবে যান। আগামী জানুয়ারি মাসে দু’জনের বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে যায়। পিসি চন্দ্র গার্ডেনে বিয়ের ভেন্যু ঠিক হওয়ার পাশাপাশি খাবারের মেনু চূড়ান্ত হয়। অতিথি অভ্যাগতদের নামের তালিকাও অনেকটাই চূড়ান্ত করে ফেলেন পরিচালক। এমনকী, শুভশ্রী কী পোশাক পরে কনে সাজবেন, বউভাতের দিন কী কী গয়না পরবেন তার তালিকাও তৈরি হয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়। ঠিক হয় বিয়ের পর রুবি হাসপাতালের পিছনে আরবানায় রাজের নতুন ফ্ল্যাটে থাকবেন রাজ-শুভশ্রী। সেই ফ্ল্যাটের ইন্টিরিয়র শুভশ্রীর পছন্দমতোই তৈরি করান রাজ। কোন দেওয়ালের কী রং হবে, তাও হবু স্বামীর সঙ্গে বসে ঠিক করে দেন শুভশ্রী। এই পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল।
কিন্তু গত মাস দেড়েক ধরে পুরনো প্রেমিক রাজের সঙ্গে মিমির ঘনিষ্ঠতার খবর আসতে শুরু করে। দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে দানা বাঁধে। আলিপুরে রাজ্য সরকারের অডিটোরিয়াম ‘উত্তীর্ণ’ উদ্বোধনে রাজ-মিমিকে একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায়। দু’জনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে অনেকেরই সেদিন স্পষ্ট ধারণা জন্মায়, ফের কাছাকাছি এসেছেন রাজ-মিমি। এরপর দু’জনকে একসঙ্গে অন্য কর্মসূচিতেও দেখতে পাওয়ার খবর পান শুভশ্রী। ঘনিষ্ঠরা তাঁকে জানিয়ে দেয়, পুরনো প্রেমের টানে মিমির কাছে ফিরে গিয়েছেন পরিচালক।
দিনকয়েক আগে শুভশ্রী সটান রাজের অফিসে গিয়ে প্রশ্ন করেন, “মিমির সঙ্গে তোমার সম্পর্ক নিয়ে যা শুনছি, তা কি সঠিক?” উত্তরে পরিচালক মাথা নেড়ে সম্মতি জানাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শুভশ্রী। আর তখনই রাজ জানিয়ে দেন, “আমার পক্ষে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক আর টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।” হতাশ হলেও কিছুটা চাপ সৃষ্টি করে শুভশ্রী ঘরে ফিরে আসেন। পরিবারের সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দেন। এমনকী সংবাদমাধ্যমে শুভশ্রীর পরিবারের তরফে ফোন করে রাজের ‘মুখোশ’ খুলে দিতে বলা হয়। ঘটনা শোনার পরই চাপে পড়ে মঙ্গলবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন মিমি। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান রাজ। সারাদিন সঙ্গে থেকে সুস্থ করেন মিমিকে। বুধবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার অফিসে আসেন অভিনেত্রী। সেখানে অবশ্য গোটা বিষয়টিকে ‘গসিপ’ বলে উড়িয়ে দেন মিমি। পরবর্তী শুটিং নিয়ে কথাও বলেন।
মিমির ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়া ও রাজের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং শুশ্রুষা করিয়ে ফেরত আনার পুরো ঘটনা শুনে ভেঙে পড়েন শুভশ্রী। হতাশা ও ক্ষোভে হাইল্যান্ড পার্কে নিজের ফ্ল্যাটে সন্ধে থেকেই ছটফট করছিলেন। রাতে লাইটার থেকে নিজের পোশাকে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে নিভিয়ে দেন। এরপরই রাত দেড়টা নাগাদ ওই আবাসনেই রাজের ফ্ল্যাটে যান শুভশ্রীর পরিজনরা। কিন্তু তাঁদেরও রাজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শুভশ্রীর সঙ্গে সম্পর্ক টেনে নিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে আর সম্ভব নয়। দুই অভিনেত্রীকে ঘিরে পরিচালকের ত্রিকোণ প্রেমের এমন পরিণতিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তোলপাড় টলিউড। অনেকেই বলছেন, রাজ সবসময় নিজের কমিটমেন্টকে গুরুত্ব দেয়। সম্ভবত পুরনো প্রেমিকা মিমির ফিরে আসা আগের কমিটমেন্টকেই জোরাল করেছে। এখন অপেক্ষা পরবর্তী দৃশ্যের জন্য।
খবর- সংবাদ প্রতিদিন