পশ্চিমবঙ্গর নাম বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে নামের সাদৃশ্য থাকায় কুটনৈতিক বিভ্রান্ত তৈরি হতে পারে এই যুক্তি দেখিয়ে সেই প্রস্তাবে জল ঢালল ভারতের কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক নবান্নকে চিঠিতে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ করা হলে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে প্রশাসনিক কাজে সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে এমন কোনও নাম রাখা হোক যা ইংরাজি, বাংলা এবং হিন্দি ভাষার নিরিখে একই থাকবে, যেমন উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত ইত্যাদি।
যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এবিষয়ে নবান্নে লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়নি। গত বছর বিধানসভায় একটি অধ্যাদেশ পাস হয় যেখানে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলায় ‘বাংলা’, ইংরাজিতে ‘বেঙ্গল’ এবং হিন্দিতে ‘বাঙ্গাল’ করা হবে। কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য সরকার এই নাম পরিবর্তনের সমর্থনে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কারণের ব্যাখ্যা দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বঙ্গের সঙ্গে পশ্চিম শব্দটি ১৯৪৭ সালে দেশভাগের কাহিনি তুলে ধরে। দ্বিতীয়ত, ইংরাজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল নাম হওয়ায় ইংরাজি ডব্লু বর্ণ দিয়ে শুরু হয় শব্দটি। যার ফলে মুখ্যমন্ত্রী ও আমালাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বৈঠকের সময় বাংলার ডাক আসে সবচেয়ে পরে। ২০১৬ সালে আন্তঃরাজ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকের সময় এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল করে ‘বঙ্গ’ বা ‘বঙ্গদেশ’ রাখবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু সাহিত্যিক, মন্ত্রী ও বিশিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার পর মমতা সিদ্ধান্ত নেন পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে বাংলা রাখা হবে। এখন কেন্দ্রের অনুমোদন না মেলায় দুটি বিকল্পই রয়ে যাচ্ছে রাজ্যের কাছে। এক নয়, পুরনো নামই রাখা হবে রাজ্যের আর নয়তো, পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তে অন্য বিকল্প নাম আনতে হবে।
/india.com