শাড়ির সঙ্গে পেটিকোট পরা একটি স্বাভাবিক এবং বহুল প্রচলিত বিষয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আঁটোসাঁটো করে পেটিকোট পরার অভ্যাস থাকলে সাবধান। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরে খুব শক্ত করে পেটিকোটর দড়ি বাঁধলে হতে পারে প্রাণঘাতী ক্যান্সার!
সম্প্রতি ভারতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার নারীদের তলপেট ও পেটের উপরিভাগে ত্বকের ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ছে। চিকিত্সকদের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে পেটিকোটের দড়ি অত্যন্ত শক্ত করে বাঁধার ফলে ত্বকে চুলকানি ও ক্ষত তৈরি হয়। দিনের পর দিন তা উপেক্ষা করার ফলে শেষ পর্যন্ত মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার দেখা দেয়। উপসর্গটিকে ‘শাড়ি ক্যান্সার’ নাম দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সমীক্ষায় এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে মাত্র ৩টি। কিন্তু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এটা সামান্য একটা অংশ। অধিকাংশ গ্রামে এই রোগের শিকার হচ্ছেন অসংখ্য নারী। মুম্বাইয়ের গ্র্যান্ট মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর জি ডি বক্সীর মতে, শাড়ির নীচে পরা পেটিকোটের দড়ি দীর্ঘ দিন ধরে শরীরের একই জায়গায় পরার ফলে দড়ির ঘষা লেগে ত্বকে চুলকানি তৈরি হয়। শরীরের এই অস্বস্তি উপেক্ষা করলে এর পর ওই জায়গায় ত্বকের চরিত্রে পরিবর্তন ঘটে। খসখসে হয়ে শুকনো চামড়া উঠতে শুরু করে এবং ত্বকের রংও পাল্টে যায়। নারীদের কোমরের আশেপাশে ত্বকে এমন প্রদাহ সৃষ্টি হলে অনেক সময় তা মারাত্মক ক্যান্সারে পরিবর্তিত হয়। ”
তিনি আরও বলেছেন, বেশির ভাগ ভারতীয় নারীদের কোমরের উপর শাড়ির দড়ি থেকে কালচে দাগ ও ত্বক ফেটে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। বিষয়টি স্বাভাবিক বলে দরে নেওয়ার চল আছে। ‘ ডক্টর বক্সীর মতে, সময় মতো গুরুত্ব না দেওয়ার ফলেই ক্রমে ক্যান্সারের শিকার হন নারীরা। ”
কীভাবে এই বিপদ এড়ানো যায়?
ডক্টর বক্সী জানিয়েছেন, নিয়মিত পেটিকোটর দড়ি পাল্টে এবং তাকে চওড়া করে পরলে সমস্যা এড়ানো সম্ভব। এ ছাড়া দড়ি বাঁধলে তা একটু ঢিলেঢালা রাখা উচিত। ”
এই বিপদ রাতারাতি ঘটে না বিধায় রোগ সম্পর্কে টের পাওয়া কঠিন। ডক্টর বক্সী বলেছেন, সমীক্ষায় আমরা দেখেছি, যে সমস্ত নারী নাগাড়ে ৩০ বছরের উপর পেটিকোট পরছেন, এবং গত ৫ বছর ধরে ত্বকের ওই অংশে চুলকানি অনুভব করছেন, তাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অবিলম্বে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।