জলের মধ্যে দিয়ে সাঁতার কাটা যায়, ফুরফুরে হাওয়া খেতে খেতে নৌকা চেপে দিব্যি করা যায় প্রমোদ ভ্রমণ। কিন্তু তা বলে জলের মধ্যে দিয়ে হাঁটা? কোন সেই পৌরাণিক যুগে এমন সব আলৌকিক ঘটনা দু-চারটে ঘটত বলে শোনা যায়। কিন্তু তা বলে এই ঘোর কলি যুগে সে কী সম্ভব?
কিন্তু সম্ভব না বললে চলবে কেন? কখনও সবচেয়ে উঁচু ব্রিজ বানিয়ে, কখনও কাঁচের সেতু বানিয়ে, কখনও চালকহীন মেট্রো চালিয়ে এর আগেও চমকে দিয়েছে চিন। এ বারও চমকে দিল তারা। জলের মধ্যে দিয়েই এ বার হাঁটার ব্যবস্থা করল চিন। নতুন এই রাস্তা দিয়ে মাঝ নদী দিয়ে বিন্দাস হাঁটতে পারবেন, এপার-ওপারও করতে পারবেন সহজেই। অথচ ভিজবেন না এতটুকু। কী ভাবে?
দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের লুওডিয়ান দেশের গুইঝাউ প্রদেশ। এখানেই নদীর উপর রয়েছে এই অদ্ভুত রাস্তা। চিনের পর্যটন মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া এই রাস্তাটি হংসুই নদীর উপর ৫৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।জলের ওপর ভেসে থাকা রাস্তাটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার। গোটা রাস্তাটাই নানান উপকরণ দিয়ে সুন্দর করে সাজানো। ম্যানহাটন শহরের মোট আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ ভাসমান এই রাস্তায় লাগানো রয়েছে ১০ হাজার আলো। প্রতি সন্ধ্যায় আলো আর সুরের খেলা দেখতে ভিড় জমান অসংখ্য পর্যটক। নতুন বছরের প্রথম দিনেই দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল এই রাস্তা। এখনও পর্যন্ত ৭৫ হাজারেরও বেশি পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন এটি দেখতে। শুধুমাত্র আলো বা রঙের সজ্জাই নয়, পর্যটকদের বিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে একাধিক ওয়াটার স্পোর্টসও। রয়েছে জেটপ্যাক, ওয়াটার বাইকের মতো একাধিক আধুনিক ওয়াটার স্পোর্টস। পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য জলের মধ্যেই জিমন্যাস্টিকের নানান কসরতও দেখান চিনা তরুণীরা। এই অদ্ভুত রাস্তায় রয়েছে ২ লক্ষের বেশি ভাসমান উপাদান। সেতুটির সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এগুলি ব্যবহার করা হয়েছে।