ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দেশটির ক্রিকেট দলের লাল-সবুজদের মাটিতে সফরের আগে নিরাপত্তা দিকগুলো খতিয়ে দেখতে রুটিন পরিদর্শন ছিল সেটি। যার রিপোর্টের ওপর নির্ভর করছে আসন্ন সফরের ভাগ্যও। ঢাকার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেট, ইংলিশ ক্রিকেটারদের থাকার হোটেল ও চট্টগ্রামের সম্ভাব্য ভেন্যু পরিদর্শন করে তিন সদস্যের সেই প্রতিনিধি দল আশার কথাই শুনিয়েছিলেন। তবে দেশে ফিরে তারা খানিকটা ভিন্ন সুরেই কথা বলছেন। অবশ্য হোটেল বা মাঠ নিয়ে নয়, নিরাপত্তা পরিদর্শক দলের সদস্যরা ক্রিকেটারদের যাত্রাপথের অংশটুকুকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।
তিন সদস্যের নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল ইসিবির কাছে এখনো তাদের রিপোর্ট জমা দেননি। তবে জমা দেওয়ার অপেক্ষায় থাকা সেই রিপোর্টে কতটুকু আশার কথা থাকবে সেটি নিয়ে আশঙ্কা ছিল বরাবরই! বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া পরিদর্শক দলের অন্যতম সদস্য ইসিবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রেগ ডিকাসনের একটি মন্তব্যকে ঘিরে সেই শঙ্কাটা আরো জমাট বাঁধতে শুরু করেছে।
ডিকাসন ইংল্যান্ডের গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের কাছে মন্তব্য করেছেন, মাঠ বা হোটেলের নিরাপত্তা বিষয়গুলো যথেষ্ট আশানুরূপ হলেও ক্রিকেটারদের চলাচলের রাস্তাগুলো নিরাপদ নয়। বিশেষ করে বিমানবন্দর থেকে হোটেল, হোটেল থেকে মাঠ; জনবহুল একটি এশিয়ান শহরে এই জায়গাগুলোতে সেভাবে কাউকেই নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং সেখানে একটি শঙ্কার জায়গা থাকছেই।
ইসিবির নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিনিধি দল এই সপ্তাহেই বোর্ডের কাছে তাদের নিরাপত্তা প্রতিবেদন জমা দেবেন। সেই প্রতিবেদনের ওপরই যখন নির্ভর করছে ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশে আসার বিষয়টি, তার আগে ডিকাসনের এমন খোলামেলা মন্তব্য যে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়না সেটি অনুমান করতে বোদ্ধা হওয়ার প্রয়োজন নেই!
তবে ডিকাসন ও অন্য দুই সদস্য- ইসিবির ক্রিকেট অপারেশান্সের প্রধান জন কার এবং প্রফেশনাল ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি ডেভিড লেথারডেলের কথায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়ে দেওয়া বাংলাদেশের আশ্বাস ও পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা ঝরেছে আবারো। সফরে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পরিকল্পনার কথায় যে আশ্বস্ত হয়েছেন সেটি বলতেও দ্বিধা করেননি। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা দেখছেন তিন সদস্যের এই প্রতিনিধি দল।
পরিদর্শক দলের ভাবনায় আছে ইংল্যান্ডের সমর্থক দলের নিরাপত্তার বিষয়টিও। কেবল ক্রিকেটার বা সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তাই তো যথেষ্ট নয়, ইসিবিকে ইংলিশ সমর্থকদের কথাও ভাবতে বলবেন ডিকাসন। বাংলাদেশে খেলা দেখতে আসা ইংলিশ সমর্থকরা কতটা নিরাপদে থাকতে পারবেন ডিকাসন সেটি নিয়ে শঙ্কা লুকাননি।
উল্লেখ্য, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ওয়ানডে ও টেস্টের সিরিজ খেলতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসার কথা। সফরে ৩টি ওয়ানডে ও ২টি টেস্ট খেলার কথা তাদের। তবে তার আগে বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলের রিপোর্ট পর্যালোচনা করবে ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড। এরপরই সফরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইসিবি।
সূত্রঃ ক্রীড়ালোক