সোনি টিভির বহু বিতর্কিত সিরিয়াল ‘পেহরেদার পিয়া কি’ বন্ধের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। সেই মতো সোমবার থেকে সিরিয়ালটির কোনও এপিসোড সম্প্রচারিত হয়নি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে ভারতীয টিভিতে সিরিয়াল বন্ধ হওয়ার এই ঘটনা অস্বাভাবিক বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে সোনি টিভির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৮ আগস্ট থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে তারা সিরিয়ালটি বন্ধ করে দিচ্ছে। বিবৃতিতে দুঃখপ্রকাশ করে বলা হয়েছে, সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এর সঙ্গে জড়িত কলাকুশলী, অভিনেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। লোকসানের মুখে পড়বে চ্যানেলও। তবে আগামী দিনে তাদের নতুন সিরিয়াল দর্শকদের ভাল লাগবে বলে আশা প্রকাশ করেছে চ্যানেল। সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি নির্মাতা বা অভিনেতা, অভিনেত্রীরা।
সিরিয়ালের গল্পে দেখানো হয়েছিল, রাজ পরিবারের ৯ বছরের বালক রতন সিং–এর মৃত্যুপথ যাত্রী বাবাকে ১৮ বছরের তরুণী দিয়া প্রতিশ্রুতি দেয়, সে আজীবন রতনের স্ত্রী হয়ে তার পাহারাদার হয়ে থাকবে। সেই মতো দু’জনের বিয়ে হয়। এই ঘটনা থেকেই আপত্তি তোলেন দর্শকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সিরিয়ালের প্রতিবাদে জনমত গড়ে তোলা হয়। তাতে স্বাক্ষর করেন বেশ কয়েকজন হিন্দি সিরিয়ালের সঙ্গে জড়িতরাও। অভিযোগ করা হয়, সিরিয়ালটি বাল্যবিবাহকে প্রশয় দিচ্ছে। কিন্তু নির্মাতা দাবি করেন, তা সত্যি নয়। তাদের গল্পের মূল বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইতিমধ্যেই সিরিয়ালে দেখানো হতে থাকে এই অসমবয়সী দম্পতির মধ্যে বেড়ে উঠছে ঘনিষ্ঠতা। তরুণী স্ত্রী দিয়াকে না জানিয়ে তার ছবি তুলছে বালক স্বামী রতন সিং। রতনের দীর্ঘ জীবন কামনায় ব্রত রাখছে দিয়া। তাকে সিঁদুর পরাচ্ছে রতন। এমনকী দু’জনে লন্ডনে মধুচন্দ্রিমাতেও গিয়েছে। এরপরই সিরিয়াল বন্ধের দাবি আরও জোরদার হয়। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে চিঠি লিখে সিরিয়াল বন্ধের আবেদন করেন বহু মানুষ। তার জেরে প্রথম দফায় ব্রডকাস্টিং কনটেন্ট কমপ্লেইন্টস কাউন্সিল বা বিসিসিসি সিরিয়ালের সময় সাড়ে ৮টা থেকে সরিয়ে রাত সাড়ে ১০টা করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনে কিছু দিন ওই সময়ই সিরিয়াল সম্প্রচারিত হচ্ছিল। অবশেষে সিরিয়ালটি সম্পূর্ণ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।