এইমাত্র পাওয়া

  • কাপ জিতেই ছাড়ব, জন্মদিনে শপথ মেসির
  • প্রাথমিকে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জুলাইয়ে, থাকছে ৬০% নারী কোটা
  • ঝালকাঠিতে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুবতারা’র দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠান
  • ঝিনাইদহে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার
  • দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে
  • ফাঁটা পায়ের যত্নে কিছু পরামর্শ !!
  • ডায়াবেটিস রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবে?
  • ওজন কমাবে কালো জিরা
  • হলুদ দাঁতের সমস্যা সমাধান করুন নিমিষেই
  • কিশিমিশের পানি খেলে যে উপকার পাবেন
Updated

খবর লাইভ

খাবার তালিকা সহ ১ মাসে ওজন কমানোর পুরো নিয়মাবলী

25 August 2017 19:40:24 217812607 ভোট:5/5 4 Comments
Star ActiveStar ActiveStar ActiveStar ActiveStar Active
খাবার তালিকা সহ ১ মাসে ওজন কমানোর পুরো নিয়মাবলী

বাড়তি ওজন আমাদের একটি প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা। অবশ্য এ ব্যাপারে আপনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং জীবনভর মেনে চলার একটি জীবন পদ্ধতি তৈরি করতে হবে। প্রথমে আপনি নিশ্চিত হোন আপনি চিরস্থায়ী পরিবর্তন চাচ্ছেন এবং আপনি তা করছেন সঠিক অর্থেই।

অতিরিক্ত ওজন কি

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা তখনই বলা হবে যখন শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাবে। উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন অপেক্ষা ওজন যদি ২০% বেশি হয় তবে তাকে স্থূল বা মোটা ব্যক্তি বলে গণ্য করা হয়।

অতিরিক্ত ওজনের কারণ - উচ্চতও অনুযায়ী প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা। আধুনিক জীবনযাপন যেখানে শারীরিক পরিশ্রম খুবই কম হয় প্রতিদিন তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যেমন ঘি, তেল, চর্বিযুক্ত মাছ ও মাংস, মিষ্টি গ্রহণ করা মানসিক সমস্যা যেমন হতাশা, অকৃতকার্যতা, একাকীত্ববোধ, এর কারণে অতিরিক্ত আহার গ্রহণে ওজন বৃদ্ধি পায় হঠাৎ করে ব্যায়াম, খেলাধূলা, নাচ, হাটাচলা চলাফেরা ছেড়ে দিলে ওজন বৃদ্ধি পাবে বংশগত পারিবারিক খাদ্যাভ্যাস এর কারণে মোটা হবার প্রবণতা দেখা দেয়।

অতিরিক্ত ওজন কমাতে করনীয়ঃ ওজন কমাতে আপনার নিজের ব্যাপারে নিজেকেই দায়িত্ব নিতে হবে। নতুন করে খাদ্যাভাস শুরু করুন, যাতে আপনার খাদ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়। ওজন কমাতে শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হলো ক্যালোরি পুড়ানো, কতটুকু ক্যালোরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবচেয়ে ভালো সহজ উপায় হলো—প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা। আর ছোটখাটো সহজ উপায় হলো আপনার শারীরিক তত্পরতা আপনি বাড়াতে পারেন—লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন, গাড়িটা বাদ রেখে আশপাশের বাজারঘাট, অফিস হেঁটেই যান। তবে শুধু হাটলেই হবে না, জগিং বা সাঁতারও কাটতে হবে।এতে আপনার ক্যালোরি বার্ন হবে বেশি। নিচে কি করলে কতোটা ক্যালোরি বার্ন হবে তার একটা চার্ট দেখানো হলো-

এক্সারসাইজ ক্যালোরি বার্ন
হাঁটা ৭৫ ক্যালোরি/ প্রতি ১ কি.মি, জগিং ৮৫ ক্যালোরি/ প্রতি ১ কি.মি, বাইসাইকেলিং/ সাঁতার কাটা ৭৫ ক্যালোরি/ ২০ মিনিট, এরোবিক এক্সারসাইজ গানের তালে তালে ৭৫ ক্যালোরি/ ২০ মিনিট, দৌড়ানো ৩৫৫ ক্যালোরি/ ৩০ মিনিট, এখন জেনে নিই ওজন কমাতে আপনাকে কি ডায়েট চার্ট অনুসরণ করতে হবে। ১ কেজি মানে কমবেশি ৭০০০ ক্যালোরি। সুতরাং ৫ কেজি মানে কমবেশি ৩৫০০০ ক্যালোরি। ১ মাসে এই ৩৫০০০ ক্যালোরি কম খেলে বা ব্যায়াম করে ঝরিয়ে ফেললেই কমবে কমপক্ষে ৫ কেজি ওজন। বেশী হলে ৭ থেকে ১০ কেজিও কমতে পারে।

সকালে-

নাস্তাটা পেট ভরেই খেতে হবে। ভরপেট নাস্তা খেলে সারাদিনে বাড়তি খাবার প্রবণতা কমে যায়। নাস্তায় খাবেন ২ টি রুটি , সবজি, ও একটি ডিমের সাদা অংশ। চা খাবার অভ্যাস থাকলে চিনি ছাড়া ও ননী বিহীন দুধ দিয়ে খাবেন।

১১টার স্নাক্স-

ভাজাভুজি বা অন্য কিছু বাদ দিয়ে এই সময়ে খাবেন তাজা ফল বা ফলের রস।

দুপুরে

যারা ভাত খেতেই চান, তারা চায়ের কাপে মেপে ঠিক এক কাপ ভাত খাবেন। সাথে নেবেন ইচ্ছা মতন সবজি। তবে রান্না করার চাইতে কাঁচা হলেই ভালো। সাথে নেবেন মুরগী কিংবা মাছ এক টুকরো। গরু খাসি একদম খাবেন না। ডাল খেতে চাইলে ১/২ কাপ ডাল খান।

বিকালের নাস্তা-

খেতে পারেন এক কাপ ননী বিহীন দুধ ও ডায়াবেটিক বিস্কুট। সাথে ফল। সাথে চলতে পারে হাল্কা মুড়ি বা খই।

রাতের খাবার-

রাতে একদমই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় কোনও খাবার খাবেন না। সালাদ নিন, সাথে ১/২ কাপ ডাল বা সূপ। থাই সূপ বর্জনীয়। এবং একটুকরো মাছ বা মাংস খান অবশ্যই।

দিনের কোনও সময়েই তাজা শাক সবজি ও ফল খেতে মানা নেই। তবে আম, কলা, পাকা পেঁপে ইত্যাদি ফল বর্জনীয়। লিচুও কিন্তু ওজন বাড়ায়। সাথে কিছু এক্সারসাইজ

নিজেকে সারাদিন ফিট, চনমনে রাখতে আর শরীরের কলকব্জাগুলোকে পরিপূর্ণভাবে সজাগ রাখতেই এক্সারসাইজ করতে হয়। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন কমাতে এক্সারসাইজ অপরিহার্য।

আপনার শরীর যে ধরনের এক্সারসাইজ বহন করতে পারে বা তার সহ্য ক্ষমতা যে ধরনের এক্সারসাইজকে ধারণ করতে পারে সে রকম এক্সারসাইজই বেছে নিন, তবে এ সবকিছু করার জন্য আপনাকে মানতে হবে সহজ কিছু নিয়ম।

নিয়ম ১

ওয়ার্মআপ করার জন্য বাড়ির ছাদে বা সামনের রাস্তা থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসুন। যদি বাড়িতে ট্রেডমিল থাকে তাহলে ১০ মিনিট ট্রেডমিলে দৌড়াতে পারেন। একেবারেই জায়গা নেই এমন হলে আপনি আপনার রুমেই স্বাচ্ছন্দ্যে দৌড়াতে পারেন।

নিয়ম ২

এরপর পালা শুরু হবে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজের, অর্থাত্ এক্সারসাইজের মাধ্যমে পিঠ, ঘাড়, হাত এবং পা ভালোভাবে স্ট্রেচ করা দরকার।

নিয়ম ৩

এবার করুন কার্ডিওয়ার্ক আউট। একটু জোরে হেঁটে আসুন, আস্তে আস্তে গতি বাড়ান এরপর ১৫ মিনিট জগিং করতে পারেন। পুরো ৩৫ মিনিট কার্ডিওয়ার্ক করলে আপনার শরীরের জন্য যথার্থ উপকার পাবেন।

নিয়ম ৪

নিজেকে কোল্ডডাউন করতে ৫ মিনিট একদম আস্তে আস্তে হাঁটুন এখন ৫ মিনিট স্ট্রেচ করতে পারেন। কিছু সহজ এক্সারসাইজ বাড়িতে ট্রাই করতে পারেন।

নিয়ম ৫

সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত সোজা করে ঘরের সিলিংয়ের দিকে স্ট্রেচ করুন। এবার পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে যতটা সম্ভব জোরে লাফান। মাটিতে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার লাফান কোনো ব্রেক দিবেন না। টানা এক মিনিট লাফাতে থাকুন। এক মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার শুরু করুন। দশ-বারোবার এইভাবে লাফাতে পারেন।

নিয়ম ৬

মাটির উপর শুয়ে পড়ুন তারপর দুটি হাতের সাহায্যে মাটি থেকে উঠার চেষ্টা করুন। হাতে কোনো ভাঁজ যাতে না পড়ে। শুরুতে মোটামুটি ৫-১০টি পুশআপ দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় এক হাতের উপর ভর দিয়েও পুশআপ করা যায়।

এছাড়া আরও কিছু নিয়ম আপনাকে মানতে হবে।

উঁচু ভবনে উঠার সময় লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।  রিক্সার পরিবর্তে পায়ে হাঁটার অভ্যাস করুন। নিয়মিত প্রতি মিনিটে ১১০ কদম হাঁটার অভ্যাস করুন ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত কমপক্ষে। নিজের কাজ নিজে কারার অভ্যাস করুন, যেমন কাপড় ধোয়া।
আপনার খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করুন।অধিক ক্যালরি যুক্ত খাবারের পরিবর্তে কম ক্যালরি যুক্ত খাবার গ্রহন করুন। যেমন ফলমূল, শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে।খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখবেন না।(টেলিভিশন দেখতে দেখতে খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
ফাস্টফুড এর পরিবর্তে বাসায় তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহন করুন। রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চিরস্থায়ী ওজন কমাতে দরকার সময় এবং চেষ্টা। আপনার এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং জীবনভর মেনে চলার একটি জীবন ভঙ্গিমা তৈরি করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করুন।দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। যারা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে পানি পান করতে পারেন তাতে খাওয়ার পরিমান কমে যাবে।খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বেশি পানি পান করবেন না, আধা ঘণ্টা পর বেশি পানি পান করুন। ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, জগিং ইত্যাদি বেশ কাজ দেয়। এগুলোর ব্যাপারে মনোযোগী হোন। তাই নিয়ন্ত্রিত খাবারের পাশাপাশি শরীর চর্চার জন্য একটি স্পেশাল রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। সেই রুটিনটা হতে পারে এ রকম :

সোমবার-৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, মঙ্গলবার-২০ মিনিট জগিং,বুধবার-৪০ মিনিট হাঁটা, বৃহস্পতিবার-২০ মিনিট জগিং,
শুক্রবার-৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, শনিবার-২০ মিনিট জগিং,রবিবার-বিশ্রাম।

কি খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে মনে হচ্ছে! একটু তো কষ্ট করতেই হবে। কথায় আছে না, কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে! এই একটুখানি কষ্টের পর এখন ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়িয়ে দেখুন,৩০ দিনে আপনার ওজন অন্তত ৫-৭ কেজি তো অবশ্যই কমেছে। সব কষ্ট ভুলে নিশ্চয়ই এখন আপনার মুখে হাসি ফুটেছে!

Loading...
advertisement
সর্বশেষ সংবাদ
এ বিভাগের সর্বশেষ