জেলার যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চল এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। সেই সাথে তাদের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা, চুকাইনগর, গোবিন্দাসী, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া, ইদুলিয়া বাড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নতুন করে বন্যা কবলিত হয়েছে। ভূঞাপুর পৌর এলাকার ফকির পাড়া, চর বেতুয়া, চর বামন হাটা, চর কুতুবপুর গ্রামে নতুন করে যমুনার পানি প্রবেশ করেছে। ভূঞাপুর, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বহু মানুষ ঘরের মালামাল ও গবাদিপশু দিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বাঁধ এবং বাঁধের পূর্ব পাড়ের উঁচু জায়গাগুলোতে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিনভর তাদের ওই সব মালামাল স্থানান্তর করছে।
এদিকে যমুনা নদীর শাখা পুংলী, এলেংজানী, ঝিনাই, লৌহজং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমকির মধ্যে পড়েছে। বালির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। গাবসারা ইউনিয়নের জালাল উদ্দিন, তমছের আলী, জাহাঙ্গীর মিয়া, অর্জুনা ইউনিয়নের লেয়াকত আলী, হাসমত ও বিল্লাল জানান, নৌকা জোগাড় করে মোটামুটি মালামাল নিতে তারা সক্ষম হয়েছে। অনেকেই নৌকার অভাবে মালামাল সময় মতো পরিবহন করতে না পারায় যমুনা নদীর প্রবল স্রোতের তোড়ে ঘরের মালামাল, গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি, গাছপালা, ধান-চালসহ অন্যান্য আসবাপত্র ভেসে যাচ্ছে। তাদের ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া করার কিছুই নেই । এক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারিভাবে তারা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না। দুর্গত এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছেনি। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই পানি কমতে শুরু করবে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের প্রকৃত তালিকা হাতে না পাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই তালিকা হাতে পেলে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।