পুরো একটা আনকোরা দল। তবুও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তো। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মতই খেলল জার্মানি। মেক্সিকোকে হারিয়ে কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে চিলের মুখোমুখি জোয়াকিম লোর ছেলেরা।
প্রথমার্ধে জার্মানির সাঁড়াশি আক্রমণে রীতিমতো ছন্নছাড়া দেখাল মেক্সিকোর রক্ষণকে। গোলের নিচে বার বার একা হয়ে পড়লেন ওচোয়া। যার ফলে বার বার গোলের মুখ ছোট করতে ভুল আউটিংয়ের শিকারও হতে হল তাঁকে। গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে জার্মানির স্ট্রাইকারদের জন্য গোলের রাস্তা আরও সহজ করে দিলেন তিনি। দুই অর্ধের শেষেই খেলায় ফেরার একটা মরিয়া লড়াই দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত ফাইনালের দরজা খুলল না মেক্সিকোর।
গোরেৎকার জোড়া গোল এল ম্যাচ শুরুর আট মিনিটের মধ্যেই। ছ’মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যে ভাবে হেনরিকসের থেকে বল নিয়ে বক্সের কোনা থেকে গোলে ঢোকালেন তাতে গোলকিপার বেরিয়ে এসেও আটকাতে পারেননি। ঠিক দু’মিনিটের মধ্যে আবার গোল। কারিগর সেই গোরেৎকাই। এ বার বলের পাসটি বাড়িয়েছিলেন ওয়ের্নার। যে নবাগত স্ট্রাইকারকে ঘিরে জার্মানির ফুটবলে এখন অনেক প্রত্যাশা। দ্বিতীয়ার্ধে গোল এল তাঁর পা থেকেও।
এ দিন দলে চারটি পরিবর্তন এনেছিলেন জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো। তার মধ্যে ফিরেই বাজিমাত গোরেৎকার। যে জার্মান রক্ষণকে অনভিজ্ঞতার জন্য দুর্বল ভাবা হচ্ছিল তারাই এ দিন হার্নান্ডেজের মতো অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার সমৃদ্ধ মেক্সিকোকে আটকে রাখল ৮৯ মিনিট পর্যন্ত। মেক্সিকো দলেও চারটি পরিবর্তন এনেছিলেন কার্লোস ওসোরিও।
প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল ২-০ গোলেই। কিন্তু মেক্সিকোর ভাগ্য ভাল ব্যবধান আর বাড়েনি। ৮ মিনিটের মধ্যে দু’গোলে এগিয়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই আবারও সুযোগ চলে এসেছিল জার্মানদের সামনে। ওয়ের্নার প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু এ যাত্রায় গোলের নিচের দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিলেন ওচোয়া।
এই দুই দেশ শেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৫ এর কনফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালে। ৩-৩ ড্র ম্যাচের ফল হয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে বালাকের গোলে। এ দিন অবশ্য এই জার্মান দলে বড় কোনও নাম ছিল না। তবুও দারুণভাবেই শুরু করেছিল পুরো দল। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা অদম্য প্রচেষ্টা দেখা যায় মেক্সিকোর মধ্যে। বেশ কয়েকবার আক্রমণেও ওঠেন জিমেনেজ, হার্নান্ডেজরা। ৩৯ মিনিটে দারুণ জায়গায় ফ্রিকিকও পেয়ে গিয়েছিল মেক্সিকো। ৩০ গজ দুর থেকে হেরেরার মাপা শট আঙুলের টোকায় বাইরে পাঠান জার্মান গোলকিপার।
প্রথমার্ধে যেখানে শেষ করেছিল দ্বিতীয়ার্ধে সেখান থেকেই শুরু করে মেক্সিকো। কিন্তু সুযোগ এলেও গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ। আর সেই ফাঁকেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোলের ব্যবধান বাড়িয়ে নেন ওয়ের্নার। এখানেই শেষ হয়ে যায় খেলা। ভাগ্যও খারাপ ছিল মেক্সিকোর।৬৪ মিনিটে হার্নান্ডেজের শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। জার্মানি গোলের নিচে দুরন্ত সেভ করেন স্টেজেন। ৭৬ মিনিটে অল্পের জন্য গোলমুখি শট চলে যায় বার ছুঁয়ে। ৮৪ মিনিটে কর্নার থেকে রাফার হেড দক্ষতার সঙ্গে বাঁচান জার্মান গোলকিপার। শেষ বেলায় ৩৫ গজ দূর থেকে সরাসরি যে স্বান্তনা গোলটি করলেন মেক্সিকোর ফাবিয়ান দে লা সেটাই এই ম্যাচের এমন কী এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা গোল। ৮৯ মিনিটে জার্মানির হয়ে ৪-১ করলেন আমিন ইওনেস।