এই ক’দিন আগেই প্রশ্নটা ঘুরছিল ইতিউতি। সত্যি কি প্লাস্টিক ডিম বিকোচ্ছে বাজারে? শেষমেশ বিশেষজ্ঞরা অনেক হিসেব কষে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এ আসলে গুজবই। কেননা প্লাস্টিক ডিম তৈরিতে যত খরচ, তাতে বিক্রি করে লাভের ঘরে ভাঁড়ে মা ভবানি। সুতরাং সবটাই জল্পনা। কিন্তু সে ধারণায় জল ঢেলে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠল প্লাস্টিক ডিমের আতঙ্ক। একা ডিমে রক্ষে নেই, এবার দোসর প্লাস্টিকের সবজিও।
কেন আবার এ বিতর্ক মাথাচড়া দিল? জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এই মর্মে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, ভারতের বিভিন্ন বাজারে ব্যাপক হারে বিকোচ্ছে কৃত্রিম ডিম ও ভেজাল সবজি। অভিযোগের তির চিনের দিকেই। চিনা মুলুক থেকেই এই ভেজাল বস্তুর আমদানি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিশেষ বাজারের উল্লেখ করে সেখানে বিক্রি হওয়া সবজি ও ডিমের নমুনা পরীক্ষারও দাবি তোলা হয়েছে।
কিছুদিন আগেই কলকাতায় ছড়িয়ে পড়ে প্লাস্টিক ডিম আতঙ্ক। এক গৃহবধূ দাবি তোলেন, পার্ক সার্কাসের বাজার থেকে তিনি বাচ্চার জন্য ডিম কেনেন। কিন্তু সে ডিম ভাজতে গিয়ে দেখেন, প্লাস্টিকের মতো গুটিয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধও বেরচ্ছে। এরপরই প্লাস্টিক ডিমের আতঙ্ক নাকাল করে শহরবাসীদের। যদিও এ ব্যাপারে সঠিক কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার তরফে আশ্বাস দিয়ে জানানো হয়, কলকাতার বাজারে প্লাস্টিকের ডিম বলে কিছুই বিকোচ্ছে না। এ নিয়ে অহেতুক কোনও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তবে বাইরে থেকে রাজ্যে ঢোকা ডিম পরীক্ষা করারও ব্যবস্থা করা হয় রাজ্যের তরফে।
কিন্তু সাময়িক যে স্বস্তি মিলেছিল, তা অবশ্য বেশিদিন টিকল না। সমাজকর্মী চাঁদ জৈনের দায়ি করা জনস্বার্থ মামলা জানাচ্ছে, ভারতের মেট্রোপলিটন সিটির বিভিন্ন বাজারে বিকোচ্ছে কৃত্রিম ডিম ও সবজি। চিন থেকে অফ সিজনে যা আমদানি করা হচ্ছে তার নমুনা পরীক্ষারও দাবি জানানো হয়েছে। এরপরই বিচারপতি গীতা মিত্তল ও অনু মালহোত্রার বেঞ্চ কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। জনস্বার্থ মামলাটি এবার প্লাস্টিক আতঙ্ক আবার নতুন করে জাগিয়ে দিল। যা রটেছিল তা যে একেবারে অমূলক নয়, আদালতের উদ্বেগ যেন এমনটাই ইঙ্গিত মিলল।