হঠাৎ করেই কানে কম শোনার সমস্যা দেখা দিলে দুশ্চিন্তার কারণই বৈকি। এটি এক বা উভয় কানেই হতে পারে এবং এর সাথে সাথে কানে শব্দ হওয়ার সমস্যাও হতে পারে। ঘুম থেকে উঠেই হয়তো কানে না শোনার অভিজ্ঞতা হতে পারে যা রাতে ঘুমানোর সময় ও ছিলোনা অথবা কয়েকদিন যাবত কানে কম শোনার অভিজ্ঞতাও হতে পারে আপনার।
হঠাৎ করে কানে কম শোনা উচ্চ বা নিম্ন কম্পাংকের হতে পারে এবং এর ফলে কথা বুঝতে পারার ক্ষমতাও কমে যায়। এছাড়াও কিছু ভেস্টিবুলার সিম্পটম ও দেখা যায় যেমন- মাথা ঝিম ঝিম করা, ভারসাম্যহীনতা অথবা মোশন সিকনেস। হঠাৎ করেই কানে কম শোনার রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে অটোইমিউন ডিজিজ যেমন- লুপাস, কোগান সিনড্রোম অথবা আয়রনের ঘাটতির ফলে অ্যানেমিয়াকে চিহ্নিত করা হয়।
হঠাৎ করেই কানে কম শোনার কারণ
· মানসিক বা দৈহিক আঘাত যেমন- মাথায় আঘাত পেলে বা বহিরাগত কোন বস্তুর কারণে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্থ হলে, প্রচন্ড শব্দের কারণে অথবা কানের অপারেশন হলে।
· ব্যারোট্রমা হলে (কানের ভেতরের ও বাহিরের বায়ুর ভারসাম্যের সমস্যা হলে হয়)।
· অটোটক্সিক ঔষধ যেমন- জেন্টামিসিন, ফিউরোস্যামাইড (ল্যাসিক্স) অথবা অ্যাসপিরিনের বেশি মাত্রা।
· ভাইরাস ইনফেকশনের কারণে।
· স্নায়ুর সমস্যা।
· মিনিয়ারস ডিজিজ (মাথা ঘুরানো)।
· টিউমার খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকলে (বিরল)।
· সাপের বিষের কারণে (বিরল)।
· রক্ত প্রবাহের পরিবর্তন এবং মধ্যকর্ণে কম অক্সিজেন পৌঁছানোর কারণে
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কানে কম শোনার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়না। তখন একে আইডিওপ্যাথিক হেয়ারিং লস বলা হয়।
হঠাৎ করেই কানে কম শোনার সমস্যা দেখা দিলে যা করবেন
হঠাৎ করেই কানে কম শোনার সমস্যার ক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে নিরাময়ের ব্যবস্থা করা উচিৎ। যত দ্রুত আপনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন তত দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন। একজন বিশেষজ্ঞ অটোলেরিঞ্জোলজিস্ট এর কাছে যাওয়া ভালো।
রোগ নির্ণয়
চিকিৎসক আপনার চিকিৎসার ইতিহাস জানতে চাইবেন। উপসর্গগুলোর বিষয়ে জানবেন এবং রক্ত চলাচল, হেয়ারিং টেস্ট, এমআরআই অথবা অন্য পরীক্ষা করবেন আপনার কানে কম শোনার কারণ নির্ণয়ের জন্য।
চিকিৎসা
হঠাৎ করেই কানে কম শোনার সমস্যার চিকিৎসা কারণের উপর নির্ভর করে। ব্যারোট্রমা বা অন্য আঘাতের ক্ষেত্রে কান ক্রমান্বয়ে নিজে নিজেই সুস্থ হয়ে ওঠে। ইনফেকশনের ক্ষেত্রে কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। যদি ঔষধের বিষাক্ততার কারণে হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসক সেই ঔষধ সেবন করতে বারন করবেন। দ্রুত শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। কিছু গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে কোন চিকিৎসা ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে শ্রবণ ক্ষমতা ফিরে আসে। অন্য গবেষণায় বলা হয় যে, করটিকোস্টেরয়েড ঔষধ গ্রহণ করলে উপকারিতা পাওয়া যায়। আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন আপনার কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন।