আজকের টিম টাইগারদের যে সাফল্যের ধারা , তাতে নাসিরের অবদানও একেবারে কম নয় । বাংলাদেশের অনেক বড় বড় জয়ে নাসির হোসেন রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা । কিন্তু ইদানিং বাংলাদেশ দলে অনিয়মিত হয়ে পড়া নাসির তেমনভাবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না দলে । এমন না যে নাসিরের ফর্ম ছিল না । বরং বেশ ভাল ফর্মেই ছিলেন তিনি । সর্বশেষ ঘরোয়া লিগেও তার রানের গড় ছিল পঞ্চাশের অনেক উপরে । করেছেন ছয়-সাতটি হাফ সেঞ্চুরিও । তবু মুল দলে উপেক্ষিত হচ্ছিলেন নাসির । শোনা যায় , ফর্মের কারণে নয় বরং শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাকে দূরে রাখা হচ্ছিল দল থেকে ।
এদিকে ইদানিং বাংলাদেশ দলে দেখা দিয়েছিল “ফিনিশার” সমস্যা । বিশেষ করে গত আট-দশ ম্যাচে একজন ফিনিশারের অভাবে বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনাময় ইনিংস পায়নি প্রত্যাশিত সমাপ্তি । ভাল সূচনার পরেও এক পর্যায়ে ইনিংস ভেঙ্গে পড়ে হতাশার মধ্যে দিয়ে শেষ হওয়া যেন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছিল । এই ফিনিশার সমস্যার কারণে বাংলাদেশকে ভুগতে হয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে । ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ তো ছিল আরও করুন । জেতার অবস্থা থেকে মাত্র ১৭ রানে শেষ ছয় উইকেট হারিয়ে জেতা ম্যাচ হেরে বসে বাংলাদেশ । আর এখান থেকেই শুরু হয় নাসিরকে দলে ফেরানোর দাবী । কারণ বাংলাদেশ দলে নাসির পরিচিত একজন দক্ষ ফিনিশার হিসেবেই ।
সেই সাথে তার বোলিং আর অসাধারণ ফিল্ডিং ক্ষমতা তো আছেই । যার অভাবে ভুগতে হচ্ছিল টিম টাইগারদের । ফলে নাসিরকে দলে ফেরানোর দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন এই দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত । অবশেষে দর্শক, সমর্থকদের সমালোচনার মুখে রোববার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ‘ফিনিশার’কে দলে নিতে বাধ্য হলো টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের দূর্দান্ত জয়ের দিন ফিনিশারের মতোই ফিরলেন নাসির। রোববার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে বাংলাদেশের চরম বিপদের মুহূর্তে ২৭ বলে ২৭ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলেন নাসির। এরপর ১০ ওভারের স্পেলে মাত্র ২৯ রান দিয়ে মঈন আলির মূল্যবান উইকেটটি নিয়ে বাংলাদেশের জয়ে দারুণ অবদান রাখেন মিস্টার ফিনিশার।
লো স্কোরিং ম্যাচে একের পর এক ডট বল দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের চাপের মুখে ফেলে দেন এই পার্ট-টাইম বোলার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাসকিন আহমেদ-মোসাদ্দেকরা ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ জয় এনে দেন। উল্লেখ্য , সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছিলেন নাসির। সেই ম্যাচে তিনি তেমন কিছু করতে না পারলেও ম্যাচ জিতেছিল দল । আর এবার আবার ফিরেই দলকে জেতাতে রাখলেন অসামান্য ভুমিকা । সব মিলিয়ে নাসিরকে এখন একজন ম্যাচ উইনিং প্লেয়ার বলাই যায় । যে কারনেই আসলে নাসিরকে দলে খুব প্রয়োজন ।