শুরুতেই একটা কথা বলে রাখা ভাল, র্যাঙ্কিং প্রথায় আমি বিশ্বাসী নই৷ তাই বেলজিয়াম না, ইতালিকে ফেভারিট ভেবেই ম্যাচটা দেখতে বসেছিলাম৷ কিন্তু দিনের শেষে কী কষ্ট পেলাম, সেটা বলে বোঝানো যাবে না৷ কন্তেদের খেলা দেখে আমি খুব হতাশ৷ এই দল নিয়ে আর স্বপ্ন দেখব না৷ তাহলে কষ্ট পেতে হবে৷
ইতালি বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে জমাট রক্ষণ৷ যেখানে হুল ফোটাতে পারবে না প্রতিপক্ষ৷ সঙ্গে ‘ভয়ানক’ শক্তিশালী মাঝমাঠ৷ ইতালিকে বলা হত ডিফেন্সের সুপার পাওয়ার৷ ওদের তো চেনা ছক৷ ডিফেন্সের দরজা বন্ধ করে প্রতিপক্ষকে আক্রমণে আসতে দেওয়া৷ তারপর ওই ‘ভয়ংকর’ শক্তিশালী মাঝমাঠের ফুটবলাররা চোখের পলকে চলে আসবে কাউন্টারে৷ কিন্তু কোথায় কী? সারাক্ষণ ম্যাচের কন্ট্রোল রাখল বেলজিয়াম৷ টিপিক্যাল ইউরোপিয়ান স্টাইলে ডাইরেক্ট ফুটবল খেলল৷ পাস-গো-রান৷ ছোট্ট কিন্তু সহজ তত্ত্ব৷ কী সুন্দর ডিফেন্স৷ তেমন শক্তিশালী মাঝমাঠ৷ রাতজাগা চোখ দু’টো বেশ আরাম পেল৷ আবার ইতালি খেলল অঙ্ক কষে৷
এবার বলা দরকার লেখার শুরুতেই কেন বলেছিলাম, আমি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বাসী নই৷ র্যাঙ্কিংয়ের পয়েণ্ট নির্ভর করে অনেক অঙ্কের উপর৷ অনেকটা যেমন বল পজেশনের মতোই৷ প্রচুর স্কোয়্যার ও ব্যাক পাস খেললে বল পজেশন বাড়বে৷ কিন্তু লাভ হবে কি? তাছাড়া ইতালি হচ্ছে বড় দল৷ ছোট থেকেই ওদের ডিফেন্স, মাঝমাঠ দেখে অনেক শিখেছি৷ তাই গতবারের রানার্সদের জয় দেখতে চেয়েছিলাম৷ সেটাই হল৷ কিন্তু ওদের খেলায় আমি হতাশ৷ ফুটবলের শেষ কথা গোলটাই শুধু করল৷ দ্বিতীয়ার্ধে তো সারাক্ষণ সাত-আটজন মিলে ডিফেন্স করল৷ খালি চোখে দেখলে ইতালির মতো দলের থেকে এই খেলা একেবারেই আশা করা যায় না৷ একটা সময় আমারও ভাল লাগেনি৷ যেন কলকাতা লিগের ম্যাচ দেখছি৷ দুই প্রধানের বিরুদ্ধে যেমন খেলে ছোট দলগুলো৷ ডিফেন্সে ভিড় করে অকারণ ফাউল৷ সবই করল ওরা৷ আসলে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী সাজাতে হয় ছক৷ কন্তেও ঠিক তেমন করল৷ আল্ট্রা ডিফেন্সিভ খেলে ট্যাকটিক্যাল জয়৷ প্রথমার্ধে গিয়াচেরিনির পর ইনজুরি টাইমে পেলে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গেল করে জয় নিশ্চিত করল৷
ট্যাকটিক্যাল উইন, এটা মেনেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে না পারলে বুঁফোদের পরের রাউন্ডে দেখছি না৷ খারাপ লাগছে হ্যাজার্ডদের কথা ভেবে৷ কী ফুটবলটাই না খেলল৷ কিন্তু ফিরতে হল খালি হাতে৷ গ্রুপ অফ ডেথে বেশ সমস্যায় পড়ল বেলজিয়াম৷