প্রথম দিনে বাংলাদেশের ইনিংসে আলোটা বেশি পড়ছে তৃতীয় উইকেটে সাকিব-সৌম্যর ১২৭ রানের জুটির ওপর। ইমরুলের বদলে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী হয়ে তামিমের কথা মতোই খেললেন সৌম্য। কাল সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেছিলেন, টেস্ট বলে কুঁকড়ে থাকবেন না সৌম্য। নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে হবে। হ্যাগলি ওভালে অধিনায়কের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললেন সৌম্য।
১০৪ বলে ১১ বাউন্ডারিসহ ৮৬, নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটির ইনিংসের প্রতিটা শটেই সৌম্য জানান দিচ্ছিলেন হারানো ফর্ম অবশেষে ফিরে এসেছে। বাজে বল পেলে সাউদি, গ্র্যান্ডহোমের এক ওভারে যেমন দুই করে বাউন্ডারি মেরেছেন, জায়গামতো বাউন্সার পেলে পুল করেছেন, কখনো বাউন্সারের সামনে থেকে নিজেকে সরিয়েও নিয়েছেন সময় মতো। তবু দুর্ভাগ্য সৌম্যের। ব্যক্তিগত ৫২ রানে গ্র্যান্ডহোমের বলে ফিরে পাওয়া জীবনকে রূপ দিতে পারেননি সেঞ্চুরিতে।
৩৮ রানে ২ উইকেট পড়ার পর সৌম্য-সাকিবের জুটিতেই পথ দেখছিল বাংলাদেশ। ওই দুই উইকেটেই ১২৮ করে লাঞ্চ। কিন্তু সৌম্যের আউটের পর আবারও যেন পথহারা ইনিংস। ১৭ বলের ব্যবধানে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন সৌম্য, সাব্বির আর সাকিব। প্রথম দিনের আসল চমকটা এরপরই। চা বিরতি পর্যন্ত ওই পাঁচ উইকেটেই বাংলাদেশের রান ২২৫।
অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নুরুল হাসান ও নাজমুল হোসেন ষষ্ঠ উইকেটে গড়লেন ৫৩ রানের জুটি। কিউই পেসারদের সামনে টেস্টের প্রথম ইনিংসে তরুণ নাজমুলের ৫৬ বল খেলে যাওয়াটা বড় আশার খবর। আরেক নতুন মুখ নুরুল হাসান তো অভিষেক টেস্টে ফিফটিই করে ফেলছিলেন। পারলেন না বোল্টের পর পর দুই বাউন্সারের ফাঁদে পড়ে। ৪৩ রান থেকে বোল্টকে অন ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরে ৪৭-এ পৌঁছে গিয়েছিলেন। পরের বলেই বোল্ট দিলেন বাউন্সার। ডাক করে সেটা সামলালেও ওভারের তৃতীয় বলে পুল খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন উইকেটকিপার ওয়াটলিংয়ের হাতে।
চা বিরতির আগেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের সারা দিন ব্যাটিং করায় কামরুল ইসলামের ভূমিকাটাও ভুলে গেলে চলবে না। মূলত বোলার হলেও টেস্টের সত্যিকারের ব্যাটিংটাও বোধ হয় ভালোই জানা তাঁর। দশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেছেন ৬৩ বল। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন সাউদির পঞ্চম শিকারে পরিণত হয়ে। কামরুলকে এলবিডব্লু করে টেস্টে ষষ্ঠবারের মতো ৫ উইকেট পেলেন সাউদি। শেষ ব্যাটসম্যান রুবেল হোসেনের কথাই বাদ থাকবে কেন! যেভাবে বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করেছিলেন তাতে একপর্যায়ে বাংলাদেশের রানটা তিন শ হবে বলেই মনে হচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত সেটা না হলেও হ্যাগলি ওভালে টেস্টের শুরুর দিনটা খারাপ কাটেনি বাংলাদেশের। সবচেয়ে বড় কথা চোটাঘাত ছাড়াই শেষ হয়েছে দিনটা। বোল্টের বল ব্যাট ছুঁয়ে রুবেলের হাতে আঘাত করলে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হলেও ইনিংস শেষ করেই মাঠ ছেড়েছেন রুবেল।
চার উইকেট বোল্টের। অন্যটি নিয়েছেন ওয়াগনার। স্পিনার স্যান্টনারকে আসতেই হয়নি আক্রমণে।
স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৮৪.৩ ওভারে ২৮৯/১০ (তামিম ৫, সৌম্য ৮৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সাকিব ৫৯, সাব্বির ৭, নাজমুল ১৮, নুরুল ৪৭, মিরাজ ১০, তাসকিন ৮, কামরুল ২, রুবেল ১৬*; বোল্ট ৪/৮৭, সাউদি ৫/৯৪, ওয়াগনার ১/৪৪)।
সূত্র- বাংলা ডট রিপোর্ট