মানুষের যৌন অভ্যাসের পরিবর্তনে দিন দিন বাড়ছে ওরাল সেক্স, বিশেষ করে পাশ্চত্যের দেশগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওরাল সেক্সের কারণে বাড়ছে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। একই কারণে দেখা দিচ্ছে জরায়ু ক্যান্সারও। মদ বা সিগারেটের চেয়েও মুখের ক্যান্সারের জন্য বেশি দায়ী ওরাল সেক্স- এমনটাই দাবি চিকিৎসকদের।
সম্প্রতি ধূমপানকে পেছনে ফেলে মুখ ও গলার ক্যান্সারের জন্যে ভয়াবহ বার্তা বয়ে এনেছে ওরাল সেক্স। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিডিই হল এই ব্যাধির প্রধান সংক্রামক। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গত প্রায় এক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী যৌন অভ্যাসের ব্যাপক পরির্তনের ফলে ওরাল সেক্সের প্রতি মানুষের আসক্তি বেড়েছে। যে কারণে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে এইচপিভি। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার, এই ভাইরাস ছড়ায় খুব দ্রুত। শরীরের ভিজা স্থানে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি। অবাধ যৌনতার কারণে মুখ, পায়ুপথ, যোনি ও গলায়ও এর সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হলিউডের অভিনেতা মাইকেল ডগলাস বলেন, মদ-সিগারেটের নেশা নয়, গলার ক্যান্সারের জন্য দায়ী ওরাল সেক্সের প্রতি আমার অতিরিক্ত আসক্তি। তিনি জানান, ২০১০ সালে তার জিভের নীচে আখরোট আকৃতির টিউমার বায়োপসি করার পর স্টেজ ফোর ক্যান্সার ধরা পড়ে। ডগলাস স্বীকার করেছেন, যোনিলেহনের মাধ্যমে যৌনরোগের হাত ধরে তার মুখগহ্বরে বাসা বাঁধে মারাত্মক এইচপিভি।
বহুদিন ধরে মুখের ঘা না শুকানো, মুখের কোনো অংশে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা অনুভব করা, মুখগহ্বরে ও গলার ভিতর সাদা বা লাল ছোপ, ঢোক গিলতে অসুবিধা, গলায় কোনো দলা তৈরি হওয়া, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ অথবা বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পাওয়া- এই সবই মুখ কিংবা গলার ক্যান্সারের উপসর্গ।
চিকিত্সকদের পরামর্শ, ওরাল সেক্স করতে গেলেও কনডম ব্যবহার আবশ্যিক। এর ফলে মুখ ও পুরুষাঙ্গের মাঝে একটি আড়াল বজায় থাকে। আবার যোনির উপর ল্যাটেক্স র বর্গাকৃতি টুকরো ব্যবহার করেও এইচপিভি সংক্রমণের থেকে রেহাই মেলে।
অক্সফোর্ড অনলাইন ফার্মেসির চিকিত্সক হেলেন ওয়েবারলি বলেন, আমরা জানি বেশ কিছু যৌনাঙ্গের ক্যান্সার; যেমন ভালভ্যাল, সার্ভিক্যাল, পেনাইল এবং অ্যানাল ক্যান্সারের সঙ্গে ওয়ার্ট অর্থাত্ ক্যান্সারবাহী ওয়ার্ট (আঁচিল) ভাইরাসের যোগসূত্র থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখের ক্যান্সারের পিছনেও এই ভাইরাসের অবদান সম্ভব।