জন্মগত কারণেই অনেকের ত্বক ফর্সা আবার অনেকের শ্যামলা, তবে নিজের স্বভাবের কারণেই অনেক সময় ফর্সা বা শ্যামলা যে কোন প্রকারের ত্বক হোক না কেন তা অনুজ্জ্বল হয়ে যায়। আজ আমরা আপনাদের জানাব কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার ত্বক উজ্জ্বল রাখতে পারবেন।
সুন্দর হতে কিংবা নিজের একটু সুন্দর ও পরিপাটি ত্বক থাকবে – এটা সবাই চায়। সুন্দর ত্বক অনেকেই বংশগতভাবে পেয়ে থাকেন, তবে যাদের সুন্দর ত্বক আছে এবং যাদের নেই – সবারই প্রয়োজন ত্বকের সঠিক পরিচর্যা।
ত্বক পরিষ্কারে সাবান বিহীন পণ্য ব্যবহারঃ আপনি ত্বক পরিষ্কারক হিসেবে অবশ্যই সাবান বিহীন অর্থাৎ সোপ ফ্রি ফেস ওয়াশ ব্যবহার করবেন। সাবান আপনার ত্বকের স্বাভাবিক দীপ্তি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
নখ দিয়ে ত্বকের শুষ্কতা পরিমাপ করুনঃ সব সময় হাতে কিংবা পায়ের ত্বকে নখ দিয়ে হালকা আচর কেটে দেখুন সেখানে কি সাদা ভাব ফুটে উঠছে কিনা? যদি সাদা দাগ দেখা যায় তবে বুঝতে হবে আপনার ত্বক শুষ্ক। শুষ্ক ত্বকের সাথে যায় এমন সব জিনিস ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে। আর যদি ত্বক হয় তৈলাক্ত তবে তৈলাক্ত জিনিস পরিহার করতে হবে।
মুখের ত্বকের মতই গলা এবং পিঠের যত্ন নিনঃ অনেকেই মনে করেন কেবল মুখের ত্বকের যত্ন মানেই ত্বকের যত্ন। বাস্তবিক আপনার সম্পূর্ণ শরীর জুড়েই ত্বকের অবস্থান আপনাকে শরীরের সব জায়গায় সমান যত্ন নিতে হবে। বিশেষ করে আপনি যখন বাইরে যান, তখন আপনার ঘাড় কিংবা গলায় সূর্যের আলোর প্রভাব অনেক বেশী পড়ে, একই সাথে এই জায়গায় ময়লাও অনেক বেশী হয়। সুতরাং এসব যায়গায় ঠিকভাবে যত্ন নিতে হবে। গরমের দিনে বাইরে থেকে এসেই ঘাড়ে একটি টাওয়েল ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে লাগান – এতে আপনার ঘাড় এবং মাথা উভয়ই শীতল থাকবে।
ত্বকে কৃত্রিম ক্রিম ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করার চেষ্টা করুনঃ আমাদের প্রকৃতিতেই অনেক পণ্য পাওয়া যায় যা দিয়ে আমরা খুব সহজেই প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। মূলত এসব প্রাকৃতিক উপাদানে কোনোরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।
চলুন এবার জেনেনিই কোন ধরণের ত্বকের যত্ন কিভাবে নেয়া যাবেঃ
আমাদের ত্বক তৈলাক্ত, শুষ্ক এবং সাধারণ এই তিন ধরণের। আর এই তিন ধরণের ত্বকের যত্ন নিতে হয় আলাদা তিন পদ্ধতিতে।
তৈলাক্ত ত্বকঃ তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা তৈরি হয় বিশেষ করে গরম কালে। এসময় তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে বাইরে বের হলেই বিরক্তিকর এক অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা বেশী বেশী মুখ ধুবেন। আপনি পানি দিয়ে ত্বক ধুলে আপনার ত্বক অনেকটাই শীতল থাকবে। এছাড়া আপনি মেথির গুড়ো, শসার রস এবং চালের গুড়ো দিয়ে খুব সহজেই একটি প্যাক তৈরি করে আপনার তৈলাক্ত ত্বকে প্রয়োগ করতে পারবেন। এতে আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব অনেকটাই হ্রাস পাবে। দিনে দুইবার এই প্যাক লাগালে আপনার ত্বকের ব্রণ হবার প্রবণতাও অনেকটাই কমে যাবে কারণ ব্রণ তৈলাক্ত ত্বকের একটি প্রধান সমস্যা।
শুষ্ক ত্বকঃ শুষ্ক ত্বকের মানুষের বিড়ম্বনা বেশী সইতে হয় শীত কালে। সাধারণত ত্বক শুষ্ক হলে ত্বকে একটি খস খসে ভাব দেখা দেয়। কাঠবাদাম, সয়াবিন পাউডার ও দুধ দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে দিনে অন্তত একবার মাখলে ত্বক অনেক মসৃণ হয়ে যায়, পাশাপাশি ত্বকের শুষ্ক ভাব অনেকটাই কমে যাবে।
সাধারণ ত্বকঃ যাদের ত্বক সাধারণ তাদের অনেকটা বিড়ম্বনা কম। তবে তাই বলে ত্বকের যত্ন নিতে হবে না তা নয়। সাধারণ ত্বকের অধিকারীগণ ত্বকের যত্ন নিতে আমলকি, সয়াবিনের গুঁড়া ও সামান্য একটু কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন।
সব ধরণের ত্বকের ক্ষেত্রে বয়সের ছাপ একটি কমন সমস্যা। আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার ত্বক অনেকটাই মলিন হতে থাকে এবং এতে বলিরেখা দেখা দিতে থাকে। আপনি বয়সের সাথে ত্বকের উজ্জ্বল দীপ্তি ধরে রাখতে চাইলে তিল, পুদিনাপাতা, সয়াবিন পাউডার, কাঁচা হলুদ আর মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে নিয়ম করে সকালে মাখুন; এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং টান টান হবে। আপনার বয়সের ছাপ অনেকটাই কমাতে এটি সাহায্য করবে।