বয়সের তুলনায় একটু তরুণ দেখানোর জন্য সকলেই নানা ধরণের পদ্ধতির অবলম্বন করে থাকেন। চেহারার বয়সের ছাপ কিংবা দেহে আসা একটু-আধটু বার্ধক্য ঢাকার জন্য চেষ্টা করছেন আজকাল? কিন্তু বয়সের ছাপ দূর করা কি এতোই সহজ? মোটেও নয়।
তার চেয়ে বরং ত্বকে এবং দেহে বয়সের ছাপ পড়তে না দেয়াটাই কি বুদ্ধিমানের কাজ। চলুন আজকে দেখে নেয়া যাক শরীর ও ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখতে কী কী কাজ করতে হবে আপনাকে।
ধূমপান ও মদ্যপান করবেন না একেবারেই
ধূমপান এবং মদ্যপানের কারণে আপনার ত্বকে এবং দেহে খুব সহজেই বার্ধক্য এসে ভর করে। নিকোটিন এবং অ্যালকোহল ত্বকের নিচের রক্ত ও অক্সিজেন সঞ্চালন বন্ধ করে দেয় সে কারণে ত্বকে বয়সের আগেই পড়তে থাকে বার্ধক্যের ছাপ। ত্বকের নানা সমস্যা সহ হলদেটে দাঁত ও নখ আপনাকে আরও অনেক বেশি বয়স্ক করে তোলে।
এবং আমাদের হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক, লিভার সব কিছুর কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট করে ফেলে। তাই ধূমপান ও মদ্যপান থেকে যতোটা সম্ভব দূরে থাকাই ভালো।
নিয়মিত সানস্ক্রিন লাগান ত্বকে
শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা বছরের কোনো সময়েই সানস্ক্রিন লাগানোর কথা ভুলবেন না কোনো ভাবেই। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি আমাদের ত্বকের সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে।
এবং ত্বকে বয়সের ছাপ, রিংকেল, ত্বক ঝুলে পড়া এবং চোখের কোণে ফোলাভাবের জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে দায়ী সূর্যের রশ্মি। তাই বছরের প্রতিটা দিনেই বাসা থেকে বাইরে বেরুনোর আগে অবশ্যই ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাবেন।
অতিরিক্ত চিনি খাওয়া বন্ধ করুন
চিনি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায় এবং দেহের শিরাউপশিরায় বন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে দেহে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। চিনি আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য যতোটা খারাপ ঠিক ততোটাই খারাপ আমাদের ত্বকের জন্যও।
চিনির গ্লাইকেশন নামক উপাদান আমাদের ত্বকের কোলাজেন টিস্যুর মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। এতে ত্বক একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যায় ও ত্বক ঝুলে পড়ে। তাই বেশি চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
আজেবাজে খাবার, ফাস্ট ফুড, এনার্জি ড্রিংক ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এবং স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়। হাড়ের সুস্থতার জন্য খান ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এবং দেহের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন ও পুষ্টিকর খাবার। কলেস্টোরলের মাত্রা কমিয়ে রাখুন।
দেখবেন দেহে বার্ধক্য দেরিতে আসবে। ত্বকের জন্য ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার রাখুন খাদ্য রালিকায়। প্রচুর পানি পান করে দেহ ও ত্বককে হাইড্রেট রাখুন। দেখবেন দেহ ও ত্বকে ধরে রাখতে পারছেন তারুণ্য।
খুব বেশি মানসিক চাপ নেবেন না
মানসিক চাপ আমাদের মস্তিস্কের জন্য অনেক বেশি খারাপ তা আমরা সকলেই জানি। স্মৃতিশক্তি লোপ এবং চিন্তাশক্তি লোপের মতো রোগ মানসিক চাপ নেয়ার ফলেই হয়ে থাকে। এরই সাথে মানসিক চাপ আমাদের ত্বকের জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকর।
আমরা মানসিক চাপে থাকলে আমাদের দেহে যে কার্টিসোল নামক হরমোনের নিঃসরণ ঘটে তা আমাদের ত্বকের কোষ ভেঙে ফেলে ফলে বয়সের ছাপ পড়ে যায় দ্রুত। এছাড়াও মানসিক চাপের ফলে মাথার চুলের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চুল সাদা হওয়া শুরু করে। তাই মানসিক চাপ নেয়া কমিয়ে ফেলুন।