ঈদে খাওয়া-দাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনা অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। উৎসবের আমেজে খাওয়া একটু বেশিই হয়ে যায়। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ তাই ঈদের পরপরই ওজন ঝরাতে উঠেপড়ে লাগেন। কিন্তু সেই চেষ্টায় মাঝে মাঝে এমন কিছু ভুল হয় যে, ওজন কমার বদলে যায় বেড়ে। এবার আসুন জেনে নিই তেমনই কিছু বিষয় –
১. ক্র্যাশ ডায়েটে নেই ভরসা
বেশির ভাগ মানুষই চটজলদি ওজন কমাতে ক্র্যাশ ডায়েটের (স্বল্পমেয়াদি) কর্মসূচি নেন। এতে দ্রুত ওজন কমানোও যায়। এভাবে মানুষের শরীরে প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবে যে ক্যালরি গ্রহণ হয়, তার পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়। এর ফলে শরীরের ওজনও কমে আসে। তবে এই ডায়েটের প্রতিক্রিয়াও আছে। মনে রাখতে হবে, যখন আপনি কম ক্যালরি গ্রহণ করবেন, তখন শরীরের বিপাক ক্রিয়াও ধীর হয়ে আসে। ওজন কমানোর এই স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা যখন শেষ হয়ে যায়, তখন মানুষের শরীর এমন একটি অবস্থায় থাকে, যা অনেক ধীরে ধীরে ক্যালরি খরচ করে। তাই খাওয়া-দাওয়ায় ন্যূনতম নিয়ন্ত্রণ না থাকলে মানুষের শরীরের ওজন সহজেই বেড়ে যেতে পারে।
২. সকালের খাবার বাদ দেওয়া
সহজে ক্যালরি কমানোর জন্য অনেকেই সকালের খাবার বাদ দেন। কিন্তু এতে করে সারা দিন খিদে লেগেই থাকে। আর তা মেটাতে দিনভর অপরিকল্পিতভাবে খাওয়া চলতে থাকে। খিদে বাড়িয়ে দেয় দুপুরের খাবারের পরিমাণও। ফলে ওজন বেড়েই যায়। কিন্তু সকালে আমিষ ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেলে, তা দিনভর শরীরকে চাঙা রাখে। খিদেও কমে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা সকালের খাবার বেশি করে খান, তাঁদের স্বাস্থ্যই ভালো থাকে বেশি।
৩. কম চর্বি মানেই কম ক্যালরি নয়
ওজন কমানোর জন্য কম চর্বির খাবার খান অনেকে। কিন্তু কম চর্বি মানেই ক্যালরি কম হবে, এমন নয়। তাই বাজারের প্রচলিত কম চর্বির খাবার খেলেই ওজন কমে না। সে ক্ষেত্রে ক্যালরি কী পরিমাণ আছে, তা-ও জানতে হবে। তাই খাবার পছন্দের সময় চর্বি ও ক্যালরির পরিমাণ জেনে নিলে ওজন কমানো সহজ হবে।
৪. কম পানি খেলে ওজন কমে না
ওজন কমাতে গিয়ে এই ভুলটি প্রায়ই হয়। অনেকেই ওজন কমাতে পানি কম খান। কিন্তু মনে রাখতে হবে, পানি ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। যদি মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, তবে বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এতে করে ওজন কমার হারও কমে আসে। তাই প্রতিবার খাওয়ার পরই এক গ্লাস করে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫. দুগ্ধজাত খাবার একেবারে বন্ধ নয়
দুধ, মাখন ও আইসক্রিম—ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই এই তিনটি খাবার খাওয়া একদম বন্ধ করে দেন। কিন্তু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এতে উল্টো প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কারণ এসব খাবারে ক্যালসিয়াম বেশি পরিমাণে থাকে। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে, তা বেশি ক্যালরি পোড়াতে পারে না। এতে করে শরীরে চর্বির পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে। তাই দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয়। বরং বাজারে যেসব কম চর্বির দুগ্ধজাত খাবার পাওয়া যায়, সেগুলো বেছে নিলে ভালো হবে।