অর্জুন রণতুঙ্গার অভিযোগ সত্যি হলে যেমন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট গড়াপেটার কালো মেঘে ঢাকা পড়তে পারে। তেমনই ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের গর্বেও কালো দাগ লাগতে পারে।
বিশ্বকাপ জয়ী শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক রণতুঙ্গা শুক্রবার এক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন ২০১১-র বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। তদন্তেরও দাবি তুলেছেন তিনি। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘ওই ফাইনালের তদন্ত হওয়া উচিত। শ্রীলঙ্কা কেন সে দিন ভারতের কাছে হেরেছিল, তার তদন্ত করলেই সত্যিটা বেরোবে।’’ রণতুঙ্গার ইঙ্গিত বোধহয় গড়াপেটার দিকেই।
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেই ফাইনালে টিভি ধারাভাষ্যকার হিসেবে হাজির ছিলেন রণতুঙ্গা। উইনিং কম্বিনেশনে চার-চারটি পরিবর্তন করে ফাইনালে দল নামিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, রঙ্গনা হেরথ, অজন্তা মেন্ডিস ও চামারা সিলভার জায়গায় সে দিন থিসারা পেরেরা, সুরজ রনদিভ, নুয়ান কুলশেখরা ও চামারা কপুগেদারাকে খেলানো হয়। যা নিয়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু রণতুঙ্গার মতো এত স্পষ্ট ভাষায় কাউকে এই ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে শোনা যায়নি।
ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হার নিয়ে রণতুঙ্গার বক্তব্য, ‘‘সেই ফাইনালে ঠিক কী হয়েছিল, তা ক্রিকেটারদের স্বীকার করার সময় এসে গিয়েছে। এ বার সেই ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। আমিও তখন ভারতে ছিলাম। আমি জানি আসল ঘটনাটা কী। কিন্তু এখন বলব না তদন্ত হলে সব প্রমাণ-সহ বলব।’’
এই মন্তব্যে ব্যাপক চটেছেন সেই ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ৯৭ রান করে সেই জয়ে অবদান রাখা গৌতম গম্ভীর যেমন বলেন, ‘‘অবাক হয়ে গিয়েছি। এমন সম্মানীয় ব্যক্তির মুখে এই অভিযোগ খুব গুরুতর। ওঁকে এর প্রমাণ দিতে হবে।’’ সেই দলের আর এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আশিস নেহরাও এর প্রতিবাদ করে বলেন, ‘‘এরকম মন্তব্যকে গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল। রণতুঙ্গার মতো ক্রিকেটার এমন মন্তব্য করলে খারাপ লাগে।’’ তবে হরভজন সিংহ এই নিয়ে কোনও মন্তব্যে রাজি হননি। আসলে কুমার সঙ্গকারা ও মাহেলা জয়বর্ধনে সম্পর্কে রণতুঙ্গার এক মন্তব্য থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এই দুই তারকা পরবর্তী প্রজন্মকে তুলে আনার চেষ্টাই করেননি। এই মন্তব্য উড়িয়ে সঙ্গকারা পাল্টা মন্তব্য করতে গিয়ে দাবি করেন, ‘‘২০০৯-এ আমাদের কেন যথেষ্ট নিরাপত্তা না দিয়ে পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছিল, তার তদন্ত হোক।’’ সেই সফরেই লাহৌরে শ্রীলঙ্কার টিম বাসের উপর জঙ্গিহানা হয়েছিল। রণতুঙ্গা তারই উত্তরে বলেন, ‘‘তদন্ত করতে হলে আগে বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে তদন্ত হোক।’’