কলকাতা ছেড়ে মুম্বই-পাড়ি দিল ভুতু থুড়ি আর্শিয়া মুখোপাধ্যায়। আপাতত তিন বছরের জন্য সে মুম্বইয়ের বাসিন্দা! ‘জি বাংলা’-র সিরিয়াল ‘ভুতু’র জনপ্রিয়তার খবর আরব সাগরের তীরে গিয়ে পৌঁছেছে। ফলাফল? কিছু দিনের মধ্যেই হিন্দিতে ‘ভুতু’র শ্যুটিং শুরু হবে আর টেলিকাস্ট হবে সম্ভবত অগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে! হিন্দি ‘ভুতু’তে আর্শিয়া ছাড়া বাকি চরিত্রেরা নতুন। আনন্দ প্লাস-কে এর আগে আর্শিয়ার মা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিরিয়াল চলার সময় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া না হলেও, মেয়ের পড়াশোনায় ফাঁকি পড়তে দেননি তিনি। শ্যুটিংয়ের ফাঁকে আলাদা ঘরে মেয়েকে নিয়ে বসে যেতেন, কখনও ছড়া শেখাতেন, কখনও ম্যাপ দেখে দেশ চেনাতেন। এখন মেয়ের পড়াশোনার কী হবে? ‘‘সত্যি বলতে কী, প্রথম যখন অফারটা পেয়েছিলাম, তখনই আমি ও আমার স্বামী দীপঙ্কর দু’জনেই রাজি হতে পারিনি। চ্যানেলের প্রতিনিধিকে বলেছিলাম, আপনারা ওখানকার কোনও বাচ্চাকে নিয়ে করুন! কিন্তু প্রতিনিধিরা নাছোড়বান্দা, ওঁদের বক্তব্য ওপরওয়ালার আদেশ ভুতু চরিত্রের জন্য আর্শিয়াকেই চাই। অগত্যা রাজি হতে হল। বড় চিন্তা ছিল আমার বড় মেয়ে অদ্রিজাকে নিয়ে। ওর এখন ক্লাস সেভেন। পড়াশোনার যথেষ্ট চাপ। আর এই সময়টাই তো আসল। আমাদের অসুবিধের কথা জানাতে, চ্যানেল শুধু আর্শিয়ার নয়, অদ্রিজারও মুম্বইয়ের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমাদের থাকার ব্যবস্থা তো করেইছে। ওরা বলেছিল, আপনারা শুধু চলে আসুন। বাকিটা আমাদের উপর ছেড়ে দিন,’’ ভাস্বতীর কথায় খুশির গন্ধ। ছোট মেয়ের এই অফারটাকে এখন ভাস্বতী ও দীপঙ্কর বড় সম্মানপ্রাপ্তি হিসেবেই দেখছেন। কিন্তু এতে ছোট্ট আর্শিয়ার কী প্রতিক্রিয়া? লুক টেস্টের পর সারা স্টুডিয়ো ছুটে বেড়াচ্ছে সে। ঝকঝকে ফ্লোর তার বেশ মনে ধরেছে। দারুণ খুশি। কিন্তু সে কি হিন্দি বলতে পারবে? এর উত্তর মা নয় স্বয়ং মেয়েই দিল, ‘‘হ্যাঁ, আমি হিন্দি বলতে পারি,’’ উচ্চস্বরে আর্শিয়ার উত্তর। আসলে জন্মের পর তিন বছর রাজস্থানে থাকার সুবাদে হিন্দিতে সে বেশ সড়গড়। কলকাতাকে কতটা মিস করছে আর্শিয়া? বিশেষ করে কলকাতার স্কুল, স্কুলের বন্ধুদের? গলায় ভরপুর উত্তেজনা নিয়ে সে আবার বেশ জো়রের সঙ্গে বলল ‘‘না, আমি মিস করছি না। এখানে আমার দারুণ লাগছে।’’
এ দিকে হিন্দি অভিযানের আগে আরও কাণ্ড করে ফেলেছে ছোট্ট আর্শিয়া। সেটা কী? বড় পরদায় ডেবিউ করে ফেলেছে সে! কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘ককপিট’ ছবিতে ছোট্ট একটি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছে। ‘‘ছ’দিনের শ্যুটিং ছিল। সিরিয়ালের থেকে সিনেমার আবহ ও টেকনিক অনেকটাই আলাদা। সেটা ওর কাছে নতুন ছিল। নতুন পরিবেশে আর্শিয়া বেশ এনজয় করেছে। তবে ফ্লোরে ওকে আর্শিয়ার চেয়ে ভুতু নামেই ডাকত সকলে। এ বার বোধহয় মেয়ের নামটা ভুতুই হবে যাবে,’’ প্রাণখোলা হাসির মধ্যে পরম তৃপ্তি আর্শিয়ার মা ভাস্বতীর। সিনেমা সিরিয়ালের গণ্ডি পেরিয়ে আর্শিয়া হয়ে উঠেছে বিজ্ঞাপনেরও চেনা মুখ। বেসরকারি বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি সে সুযোগ পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞাপনেও।