থানার লকআপে রয়েছেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। তাই অযথা লকআপের সামনে ঘোরাঘুরি আটকাতে রয়েছে নজরদারি। শুক্রবার অভিনেতাকে তিনদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখান থেকে থানায় আনার পর কয়েক মিনিট বসিয়ে রেখে তদন্তকারী অফিসারের রুমে চলে বিক্রমকে জিজ্ঞাসাবাদ। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় লকআপে। তবে তার আগে অভিনেতা নিজের টিশার্ট এবং জিন্সের ট্রাউজার্স বদলে পুলিশের দেওয়া পোশাক পরে লকআপে ঢোকেন। সঠিক সময়ে বিক্রমকে রাতের খাবার দেওয়া হয়। তারকা বলে মেনুতে কোনও বিশেষ ব্যবস্থা ছিল না। অন্য বন্দিদের মতো ভাত-ডাল এবং সব্জি খেতে দেওয়া হয়েছিল। বিক্রম খেয়েছিলেন বটে, তবে কম পরিমাণে। সূত্রের খবর, মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতারের আগে বিক্রম পুলিশকে যে তথ্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে তথ্য প্রমাণের ফারাক রয়েছে। শুক্রবার আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেছিলেন, অভিনেতা ভুল তথ্য দিয়েছেন। নিজেদের হেফাজতে পাওয়ার পর সেই সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে যে জায়গায় অসঙ্গতি রয়েছে, সেই বিষয়গুলি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বিক্রমকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাতে চান তদন্তকারীরা। ঘটনার রাতে কোন কোন ক্লাবে গিয়েছিলেন তিনি, কতক্ষণ সময় কাটিয়েছিলেন, কোন কোন রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, দুর্ঘটনার আগে কী হয়েছিল— সেই সব বিষয় জানতেই পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এদিন খুব সকালেই তাঁকে মেডিক্যাল চেকআপ করিয়ে আনা হয়। থানায় ফেরার পর চা-বিস্কুট খেয়ে লকআপে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন বিক্রম। তিনি কারও সঙ্গেই কথা বলছেন না। চুপচাপ রয়েছেন। দুপুরে বিক্রমের সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁর আইনজীবী। মিনিট দুয়েক কথা হওয়ার পর থানা থেকে বেরিয়ে যান আইনজীবী অর্ণব পাঁজা। পরে তিনি বলেন, ‘‘ও ভাল আছে। বাবা-মা’কে চিন্তা করতে বারণ করেছে।’’ বিক্রমের এক ঘনিষ্ঠের দাবি, গ্রেফতারের পর থেকে অভিনেতা খুব ভেঙে পড়েছেন। সূত্রের খবর, এদিন আইনজীবীর কাছে জামিনের ব্যাপারেও কথা বলেন বিক্রম। অর্ণবের কথায়, ‘‘জামিনের বিষয়টা জানতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। দেখলাম, ভেঙে পড়েছে।’’ সন্ধ্যায় বিক্রমকে ফের এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।