এইমাত্র পাওয়া

  • কাপ জিতেই ছাড়ব, জন্মদিনে শপথ মেসির
  • প্রাথমিকে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জুলাইয়ে, থাকছে ৬০% নারী কোটা
  • ঝালকাঠিতে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুবতারা’র দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠান
  • ঝিনাইদহে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার
  • দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে
  • ফাঁটা পায়ের যত্নে কিছু পরামর্শ !!
  • ডায়াবেটিস রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবে?
  • ওজন কমাবে কালো জিরা
  • হলুদ দাঁতের সমস্যা সমাধান করুন নিমিষেই
  • কিশিমিশের পানি খেলে যে উপকার পাবেন
Updated

খবর লাইভ

রামুতে বন্যায় চরম দূর্ভোগে ২ লাখ মানুষ

06 July 2017 14:21:10 PM 209942245 ভোট:5/5 1 Comments
Star ActiveStar ActiveStar ActiveStar ActiveStar Active
রামুতে বন্যায় চরম দূর্ভোগে ২ লাখ মানুষ

কক্সবাজারের রামুতে কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারনে বন্যা দেখা দিয়েছে। দুইদিন ধরে বাঁকখালী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বিভিন্নস্থানে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর সময় পার করছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধ্বসে বেশ কিছু বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁকখালীর নদীর পানি এবং পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার-টেকনাঢ সড়ক, রামু-মরিচ্যা সড়ক, রাজারকুল-চেইন্দা সড়কসহ প্রত্যন্ত এলাকার আরো অসংখ্য সড়ক। এসব সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মানুষের দূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বুধবার রাত আটটায় মোবাইল ফোনে জানান, পুরো রামুতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। দুপুরে পানি বন্দি মানুষের সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৩০ হাজার। রাত আটটায় সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখে। এসব এলাকাগুলোতে আক্রান্ত লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, আক্রান্তদের উদ্ধার তৎপরতা ছাড়াও প্রাথমিকভাবে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে শুকনো খাবার (চিড়া-গুড়) বিতরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী বরাদ্ধ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন দুপুরে (বুধবার) বন্যা দূর্গত এলাকা ও গর্জনিয়ায় বাঁকখালী নদীতে ঝূঁকিপূর্ণ সেতু পরিদর্শনের জন্য রামু যান। কিন্তু রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের কাউয়ারখোপ এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় তিনি গর্জনিয়া যেতে পারেননি। তিনি কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের গাছুয়াপাড়া এলাকায় বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসক বন্যা দূর্গত মানুষের জন্য দ্রুত ত্রান সামগ্রী দেয়ার আশ্বাস দেন।

রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. নিকারুজ্জামান জানিয়েছেন, খুনিয়াপালং সহ রামুর বিভিন্নস্থানে ২০টি স্পটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকগুলো বসত বাড়ি পুরোপুরি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক প্রদক্ষেপ এর ফলে এসব পাহাড় ধ্বসে ঘটনায় তেমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের স্ব স্ব এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন ও পাহাড় ধ্বস বন্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ফেরার পথে তিনি নিজেও রামু ফিরতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রথম রামু-মরিচ্যা সড়ক দিয়ে আসলেও ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে বেড়িবাধ ভেঙ্গে সড়ক ব্যাপক পানির কারনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে তিনি রাজারকুল-চেইন্দা সড়ক হয়ে ফেরার চেষ্টা করলে দক্ষিন মিঠাছড়ি এলাকায় এসে সেখানেও বন্যায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তিনি আটকে পড়েন। রামুর তেমুহনী এলাকায় দায়িত্বরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারি (ওয়াটার রিডার) রুহুল আমিন রোহেল বুধবার সন্ধ্যায় জানান, তখন বাঁকখালী নদীর পানি বিপদ সীমার এক মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। নদীর পানি তখনও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। আলহাজ্ব ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এবং লম্বরীপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। একারনে আশপাশের এলাকাগুলো পানিতে একাকার হয়ে গেছে। গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাঁকখালী নদীতে ঝূঁকিপূর্ণ সেতু ও এপ্রোচ সড়ক রক্ষায় তিনি প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। তিনি সকলের সহায়তা কামনা করেছেন। জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছেন, ইউনিয়নের মালা পাড়া, চর পাড়া, পূর্ব পাড়া, নয়া পাড়া, সওদাগর পাড়া, ফরেষ্ট অফিস, উপরের পাড়া, পূর্ব নোনাছড়িসহ বিভিন্ন গ্রাম পানিতে একাকার হয়ে গেছে। একারনে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের হাজার হাজার মানুষ মানবেতর সময় পার করছে।

ইউনিয়নের ছোট-বড় সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানিয়েছেন, প্রবল বর্ষণে ইউনিয়নের টেইলাপাড়া ও পাহাড় পাড়া এলাকায় পাহাড় ধ্বসে দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। তিনি আরো জানান, বন্যায় এ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭/৮ হাজার মানুষ। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো জানিয়েছেন, পুরো ইউনিয়ন এখন পানিতে একাকার হয়ে গেছে। ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আক্রান্তরা দ্বিতল বাড়ি ও আশ্রং কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। জরুরীভাবে তিনি আক্রান্তদের নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ইউনিয়নের হাজ্বী পাড়া, বড়–য়াপাড়া, পশ্চিম রাজারকুল, নাশিরকুল, দেয়াংপাড়াসহ অনেক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। শিকলঘাট সেতুর পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হলে তিনি এবং ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটির বস্তা দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ইউনিয়ন ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে বলে তিনি জানান। চাকমারকুল ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার জানিয়েছেন, ইউনিয়নের ১০ হাজারের বেশী মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামীন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মানুষের দূর্ভোগ বেড়ে গেছে। কয়েকটি আশ্রয কেন্দ্রে রাত পর্যন্ত মানুষ অবস্থান নিয়েছে। এছাড়াও রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া, রশিদনগর, ঈদগড় ও খুনিয়াপালং ইউনিয়নে বন্যায় ব্যাপক বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত ও হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ইউনিয়নগুলোতে গ্রামীন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জনদূর্ভোগ বেড়ে গেছে।

আপডেট 06 July 2017 14:24:25 PM
Loading...
advertisement
সর্বশেষ সংবাদ
এ বিভাগের সর্বশেষ