অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়াতেই কি বন্ধ হচ্ছে ‘ইচ্ছেনদী’? অন্তত খবর রটেছে এমনটাই। যদিও এ কথা একেবারেই মানতে নারাজ ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলী। তাঁদের যুক্তি, প্রতিটা ধারাবাহিকের গল্পেরই একটা শেষ থাকে। ‘ইচ্ছেনদী’র ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
‘ইচ্ছেনদী’র প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। গত ২৯ এপ্রিল ভোরে দুর্ঘটনার পর আক্ষরিক অর্থেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল ‘স্টার জলসা’র এই জনপ্রিয় ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ। শ্যুটিংয়ে বিক্রমের অনুপস্থিতির কারণে বদলে ফেলতে হয়েছিল ধারাবাহিকের গতিপথও। গল্পে দেখানো হয়েছিল, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় পড়ে অনুরাগ (ধারাবাহিকে বিক্রমের চরিত্র)। তারপর থেকে সে নিখোঁজ। কী বলছেন ‘ইচ্ছেনদী’ ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায়? তাঁর কথায়, ‘‘বিক্রমের কারণেই ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাচ্ছে, এটা একেবারেই ভুল কথা। ‘ইচ্ছেনদী’ প্রায় আড়াই বছর ধরে চলছে। গল্পের নিয়ম মেনে ধারাবাহিকটা শেষ হতোই।’’ কবে শেষ হচ্ছে ‘ইচ্ছেনদী? লীনার উত্তর, ‘‘চ্যানেল থেকে অফিশিয়ালি এখনও কিছু জানানো হয়নি। তাই এখনই নির্দিষ্টভাবে কোনও কিছু বলা মুশকিল।’’ একই কথা জানালেন অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায়ও। তিনি বলছিলেন, ‘‘বিক্রমের সঙ্গে ধারাবাহিকটা শেষ হওয়ার কোনও যোগ নেই। শুনেছি, গল্পটা শেষ হতে চলেছে। তবে চ্যানেল এখনও আমাদের কিছু জানায়নি।’’
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার পর শ্যুটিংয়ে ফিরেছেন বিক্রম। গত ৮ এবং ৯ মে ‘ইচ্ছেনদী’র শ্যুটিংও করেছেন অভিনেতা। লীনা বলছিলেন, ‘‘শ্যুটিং করতে তো বিক্রমের কোনও বাধা নেই। আমরা লিগ্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। তবে এই মুহূর্তে গল্পে বিক্রমকে লাগছে না। তাই ও ফ্লোরেও আসছে না। কয়েকদিন পর যখন গল্পে বিক্রমকে প্রয়োজন হবে, তখন ওকে শ্যুটিংয়ে ডাকা হবে।’’
টালিগঞ্জের কাছে রানিকুঠির মোড়ের একটা স্টুডিওতে শ্যুটিং হয় ‘ইচ্ছেনদী’র। কিন্তু, গত ৮ এবং ৯ মে ধারাবাহিকে বিক্রমের দৃশ্যগুলোর শ্যুটিং হয়েছে শহরতলির অন্য একটি স্টুডিওয়। যে জায়গাটা টালিগঞ্জ থেকে বেশ খানিকটা দূরে। প্রশ্ন উঠেছিল, হঠাৎ স্টুডিও বদল কেন? বিক্রমকে আড়াল করতেই কি? লীনার কথায়, ‘‘সেদিন যে দৃশ্যগুলোর শ্যুট করার ছিল, সেই মতো সেট ওই স্টুডিওটিতেই ছিল। সেই কারণেই স্টুডিও বদল। বিক্রমকে আড়াল করতেই স্টুডিও বদলের প্রসঙ্গটা অবান্তর।’’ বিক্রমের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর একদিকে আইনি জটিলতা, অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমের চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিক্রম। মানসিক চাপে ঠিক মতো নাকি খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছেন না তিনি। পরিবারের অনেকের আশঙ্কা, পরিস্থিতির চাপে পড়ে ‘খারাপ’ কোনও পদক্ষেপ না করে বসেন বিক্রম। অবস্থা বুঝে, বিক্রমকে সব সময় আগলে রাখছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এমনকী, রাতে শোওয়ার সময়ও তাঁর সঙ্গে পরিবারের কেউ উপস্থিত থাকছেন।
- এবেলা ডট ইন