এইমাত্র পাওয়া

  • কাপ জিতেই ছাড়ব, জন্মদিনে শপথ মেসির
  • প্রাথমিকে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জুলাইয়ে, থাকছে ৬০% নারী কোটা
  • ঝালকাঠিতে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুবতারা’র দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠান
  • ঝিনাইদহে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার
  • দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে
  • ফাঁটা পায়ের যত্নে কিছু পরামর্শ !!
  • ডায়াবেটিস রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবে?
  • ওজন কমাবে কালো জিরা
  • হলুদ দাঁতের সমস্যা সমাধান করুন নিমিষেই
  • কিশিমিশের পানি খেলে যে উপকার পাবেন
Updated

খবর লাইভ

ছোটদের জন্য লেখা

?? ?? ???? ??:??:?? ???? 163044532 ভোট:5/5 1 Comments
Star ActiveStar ActiveStar ActiveStar ActiveStar Active
ছোটদের জন্য লেখা

সেদিন একটি মেয়ে খুব দুঃখ করে আমাকে একটা চিঠি পাঠিয়েছে। মেয়েটি লিখেছে, সে যখন ছোট ছিল তখন স্কুলে রীতিমতো কাড়াকাড়ি করে বই পড়েছে। তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ ছিল গল্পের বই পড়া। তার পর দীর্ঘশ্বাস ফেলে লিখেছে, তার একটা ছোট ভাই ক্লাস সেভেনে পড়ে, সে মোটেও কোনো বই পড়তে চায় না। এখন পর্যন্ত কোনো গল্পের বই পড়েনি, সময় কাটায় ফেসবুক করে। মেয়েটি আমার কাছে জানতে চেয়েছে, কেন এমন হলো? আমি এ রকম চিঠি আজকাল মাঝেমধ্যেই পাই। শুধু যে চিঠিপত্র পাই তা নয়, নানা রকম ভয়ের গল্পও শুনি। একটা ভয়ের গল্প এ রকম : মা নানা কাজে খুব ব্যস্ত থাকেন, তাই ছোট শিশুটিকে সময় দিতে পারেন না। আবিষ্কার করেছেন, ছোট শিশুর হাতে একটা স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ধরিয়ে দিলে সেটা নিয়ে সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যস্ত থাকে। তাই শিশুটিকে ব্যস্ত রাখার জন্য তার হাতে স্মার্টফোন দিয়ে দিলেন। একদিন কোনো কারণে শিশুটিকে একটু শাসন করার প্রয়োজন হলো। সামনে দাঁড়িয়ে যখন তাকে শক্ত গলায় কিছু বললেন, তখন হঠাৎ আবিষ্কার করলেন, শিশুটি তার দিকে তাকিয়ে বাতাসের মাঝে হাত বুলিয়ে তাকে সরিয়ে কিংবা অদৃশ্য করে দিতে চেষ্টা করছে। স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের স্ক্রিনে হাত দিয়ে স্পর্শ করে ঘষে দিলেই সেটা সায় পায় কিংবা অদৃশ্য হয়ে যায়। শিশুটি মায়ের শাসনটুকু পছন্দ করছে না, তাকে সামনে থেকে সরিয়ে অদৃশ্য করার জন্য একই কায়দায় হাত বুলিয়ে তাকে অদৃশ্য করার চেষ্টা করছে। যখন মা অদৃশ্য হয়ে গেল না কিংবা সরে গেল না, তখন শিশুটি অবাক এবং বিরক্ত হয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকল। এই মা যখন তাঁর সন্তানের এই গল্পটি আরেকজনের সঙ্গে করছিলেন তখন তিনি ভেউ ভেউ করে কাঁদছিলেন, নিজেকে শাপ-শাপান্ত করছিলেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই দেশে অনেক মা (এবং বাবা) আছেন, যাঁরা এ ধরনের ঘটনার মধ্যে সন্তানদের বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তিতে আকর্ষণ আবিষ্কার করে আনন্দে আটখানা হয়ে যান। আমার ধারণা, ছোট শিশুদের নিয়ে আমরা কঠিন একটা সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। শুধু আমরা নই, সারা পৃথিবীতেই মোটামুটি একই অবস্থা। তবে অন্য অনেক দেশের মানুষজনের মাত্রাজ্ঞান আছে; মা-বাবার কমনসেন্স আছে। যতই দিন যাচ্ছে, আমার মনে হচ্ছে আমাদের দেশের অভিভাবকদের অনেকেরই মাত্রাজ্ঞান বা কমনসেন্স, কোনোটাই নেই। গত অল্প কয়েক দিনে আমি যে চিঠি পেয়েছি তার মাঝে একজন জানিয়েছে, তার পরিচিত একটি ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রস্তুতিটি বিচিত্র, পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে পুরো পরিবার ফেসবুকে নজর রাখছে। কোনো একটা কারণে তারা নিঃসন্দেহ যে প্রশ্ন ফাঁস হবে এবং সেটা দিয়েই চমৎকার একটা পরীক্ষা এবং অসাধারণ একটা গ্রেড পেয়ে যাবে! দ্বিতীয় চিঠিটি লিখেছে একটি মেয়ে। সে খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারত; তার খুব শখ ছিল ছবি আঁকা শিখবে। মা-বাবা তাকে কোনোভাবেই ছবি আঁকতে দেবে না; তাই সে ছবি আঁকতে পারে না। তার পরিচিত কেউ কেউ ছবি আঁকার ক্লাস নিয়ে এখন যখন সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকে, তখন সে তাদের দিকে হিংসাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আরেকজন লিখেছে, তার খুব শখ ছিল গণিত অলিম্পিয়াডে যাবে। মা-বাবার কাছে ইচ্ছেটা প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে তারা বকুনি দিয়ে বলেছে, পাঠ্যবইয়ের গণিত করাই যথেষ্ট—গণিত অলিম্পিয়াড নিয়ে আহ্লাদ করার কোনো প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনাটি গল্পের বই নিয়ে—শিশুটি বই পড়তে চায়, মা-বাবা কিছুতেই বই পড়তে দেবে না। শিশুটিকে উচিত একটা শিক্ষা দেওয়ার জন্য তারা বই পুড়িয়ে ফেলেছে! এই ঘটনাগুলো শোনার পর ঠিক করেছি, এখন থেকে সুযোগ পেলেই সবাইকে বোঝাতে থাকব, পৃথিবীতে একজন শিশুকে গড়ে তোলার যতগুলো উপায় আছে, তার মাঝে সবচেয়ে সহজ আর সবচেয়ে চমকপ্রদ উপায় হচ্ছে বই পড়া। পৃথিবীতে বই পড়ে এখনো কেউ নষ্ট হয়নি; কিন্তু বই না পড়ে পুরোপুরি অপদার্থ হয়ে গেছে, সে রকম অসংখ্য উদাহরণ আছে। ২. বই পড়ার কারণে মানুষের জীবনে কী অসাধারণ ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা আমি আমার নিজের চোখে দেখেছি। মনোবিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানী গবেষকরা হয়তো এটা আগে থাকতেই জানেন—আমরা জানতাম না এবং আমার স্ত্রীর কারণে এটা হঠাৎ করে আমরা আবিষ্কার করেছিলাম। বিষয়টা বোঝানোর জন্য একেবারেই আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনা বলতে হবে, আগেই সে জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোটামুটি একই সময়ে পিএইচডি শেষ করেছিলাম। যখন পোস্ট-ডক করছি, তখন আমাদের প্রথম পুত্রসন্তান জন্ম নেয় এবং আমার স্ত্রী কোনো চাকরি-বাকরি না করে ঘরে বসে আমাদের ছেলেটিকে দেখেশুনে রাখার সিদ্ধান্ত নিল। কয়েক মাসের একটা বাচ্চাকে নানাভাবে ব্যস্ত রাখার একটি প্রক্রিয়া হিসেবে সে আমাদের ছেলেটিকে বই পড়ে শোনাতে শুরু করল। প্রথম প্রথম সে বইটি টেনে নিয়ে সেটাকে দিয়ে কোনো এক ধরনের খেলা আবিষ্কারের চেষ্টা করলেও, আট মাস বয়স হওয়ার পর হঠাৎ করে সে বইয়ের দিকে নজর দিতে শুরু করল। আমরা মোটামুটি বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করলাম, দুরন্ত ছটফটে একটা শিশুকে খুব সহজেই বই পড়ে শুনিয়ে শান্ত করে ফেলা যায়। আমাদের ছেলের বয়স যখন আড়াই বছর, তখন আমাদের মেয়ের জন্ম হয় এবং আমার স্ত্রী তার দুই ছেলেমেয়েকে দুই পাশে শুইয়ে বই পড়ে যেতে লাগল। দুজন ছোট শিশু তাদের মায়ের দুই পাশে শুয়ে গম্ভীরভাবে বই পড়া শুনে যাচ্ছে, দৃশ্যটি খুব মজার। আমি বেশ অবাক হয়ে সেটি উপভোগ করতাম। আমার ছেলের বয়স যখন ঠিক চার বছরের কাছাকাছি, তখন আমাদের একজন আমেরিকান প্রতিবেশী তার ছেলের জন্মদিনে আমাদের ছেলেকে দাওয়াত দিয়েছে। বিকেল বেলা গাড়ি করে বাসা থেকে তুলে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা পর ভদ্রমহিলা আমাদের ছেলেকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রীকে বলল, ‘তুমি তো আমাকে কখনো বলনি যে, তোমার ছেলে সবকিছু পড়তে পারে।’ আমার স্ত্রী আকাশ থেকে পড়ল; বলল, ‘না, আমার ছেলে মোটেও পড়তে পারে না, তাকে আমরা একটা অক্ষরও পড়তে শেখাইনি।’ আমেরিকান ভদ্রমহিলা বলল, ‘আমার কথা বিশ্বাস না হলে তুমি পরীক্ষা করে দেখ। জন্মদিনে আমার ছেলে অনেক গিফট পেয়েছে, গিফটগুলো জুড়ে দেওয়ার জন্য সঙ্গে যে ইনস্ট্রাকশন শিট ছিল, তোমার ছেলে সেটা পড়ে পড়ে শুনিয়েছে, অন্য সব বাচ্চা মিলে তখন সেগুলো জুড়ে দিয়েছে।’ আমেরিকান ভদ্রমহিলা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার হতবাক স্ত্রী একটা সিরিয়ালের বাক্স নামিয়ে আমার ছেলের হাতে দিয়ে বলল, ‘এখানে কী আছে পড়ো দেখি।’ আমার ছেলে গড়গড় করে সেটা পড়ে শোনাল। আমার স্ত্রী একটা শব্দ দেখিয়ে বলল, ‘এটা বানান করো দেখি।’ আমার ছেলে ফ্যালফ্যাল করে আমার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে রইল, ‘বানান? সেটা আবার কী?’ আমার স্ত্রী একটু পরেই আবিষ্কার করল, সে একটা অক্ষরও চেনে না, কোনটা কোন অক্ষর জানে না; কিন্তু সবকিছু পড়তে পারে। আমি নিজের চোখে না দেখলে এটা বিশ্বাস করতাম না যে, একজন মানুষ কোনো অক্ষর না জেনে পুরোপুরি পড়ে ফেলতে পারে। অনেক পরে সে যখন স্কুলে গিয়েছে, তখন সে এ-বি-সি-ডি শিখেছে! অনেকের ধারণা হতে পারে, আমি খুব সূক্ষ্মভাবে আমার ছেলেকে অসাধারণ একজন মেধাবী শিশু হিসেবে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কারণ, এটা মোটেও সে রকম কিছু নয় এবং আমার মেয়ের বেলাতেও হুবহু সেই একই ব্যাপার ঘটেছে। এটা হওয়া সম্ভব জানার পর আমি সবাইকে এটা বলেছি। যারা আমাদের কথা বিশ্বাস করে, তাদের ছোট শিশুদের বই পড়ে শুনিয়েছেন, তাদের সবার বাচ্চা চার বছর বয়সে কিংবা তার আগেই বই পড়তে শিখে গেছে। আমার সহকর্মীরা যখন বিয়ে করে এবং যখন তাদের ঘর আলো করে একটা ছোট শিশুর জন্ম হয়, তখন আমরা সবার আগে এই তথ্য দিই : একেবারে ছেলেবেলা থেকে তোমাদের বাচ্চাকে বই পড়ে শোনাও; দেখবে কত তাড়াতাড়ি তারা বই পড়তে শিখে যাবে। আমি খুব ছোট বাচ্চাদের জন্য রং-ঢংয়ের ছবিসহ কয়েকটা বই লেখারও চেষ্টা করেছিলাম। কোনো সহকর্মীর সন্তান জন্ম হয়েছে খবর পেলে সেই বইগুলোর এক-দুটিও তাদের হাতে ধরিয়ে দিই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, অবধারিতভাবে শিশুদের বাবা কিংবা মা কিছুদিন পর আমার কাছে আরেক কপি বই নিতে আসেন। সব সময়েই দেখা যায়, শিশুটিকে অসংখ্যবার একটা বই পড়িয়ে শোনাতে শোনাতে বইটি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। পড়তে পড়তে একটা বই ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হওয়ার মতো সুন্দর ঘটনা আর কী হতে পারে! ছোট শিশু যখন নিজে নিজেই পড়তে শিখে যায়, তখন আরেকটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে। এই শিশুটির সময় কাটানো নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না। আমরা সবাই নিশ্চয়ই দেখেছি, চার-পাঁচ বছরের একটা বাচ্চাকে নিয়ে মা-বাবাদের খুব ব্যস্ত থাকতে হয়; বাচ্চা ঘ্যানঘ্যান করে কাঁদছে, প্রথমে আদর করে শান্ত করার চেষ্টা করছেন, তার পর যখন পরিবেশটুকু অসহ্য হয়ে গেছে তখন বাচ্চাকে বকুনি দিচ্ছেন, বাচ্চা আরো জোরে গলা ফাটিয়ে কাঁদতে শুরু করেছে—এ রকম দৃশ্য কে দেখেনি? কিন্তু একটা শিশু যখন পড়তে শিখে যায়, তখন আর এই সমস্যা হয় না; শিশুটির হাতে একটা মোটা বই ধরিয়ে দিতে হয়, শিশুটি গভীর মনোযোগে সেই বই পড়তে থাকে। একটি ছোট শিশু গভীর মনোযোগ দিয়ে আকারে তার থেকে বড় একটা বই পড়ছে, এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য পৃথিবীতে নেই। আমাদের সবার ঘরে ঘরে এই দৃশ্য হওয়া সম্ভব। আমি বাজি ধরে বলছি, নতুন মা- বাবারা পরীক্ষা করে দেখুন। বিফলে মূল্য ফেরত! ৩ আমাকে মাঝেমধ্যেই টেলিভিশনে ইন্টারভিউ দিতে হয়, বিষয়টি আমি একেবারেই উপভোগ করি না; কিন্তু আমার কিছু করার নেই। আগে শুধু ঢাকা শহরে সাংবাদিকরা টেলিভিশন ক্যামেরা নিয়ে ঘোরাঘুরি করতেন। আজকাল ছোট-বড় সব শহরেই সব চ্যানেলে তাদের পাওয়া যায়। মাঝেমধ্যেই সাংবাদিকরা আমাকে বলেন, ‘ছোটদের জন্যে কিছু একটা বলেন।’ আমি অবধারিতভাবে ছোটদের উদ্দেশ করে বলি, ‘তোমরা অনেক বেশি বেশি বই পড়বে এবং অনেক কম কম টেলিভিশন দেখবে।’ আমি জানি না, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আমার এই বক্তব্য প্রচার করে কি না। কিন্তু কেউ যেন মনে না করে, আমি কৌতুক করে বা হালকাভাবে কথাগুলো বলি। আমি যথেষ্ট গুরুত্ব নিয়েই কথাগুলো বলি। একটা বই পড়ে একজন বইয়ের কাহিনী, বইয়ের চরিত্র, ঘটনা সবকিছু কল্পনা করতে পারে। যার কল্পনাশক্তি যত ভালো, সে তত সুন্দর করে কল্পনা করতে পারে, তত ভালোভাবে বইটা উপভোগ করতে পারে। টেলিভিশনে সবকিছু দেখিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, দুঃখের দৃশ্য কিংবা ভয়ের দৃশ্যগুলোর সঙ্গে সে রকম মিউজিক বাজতে থাকে। কাজেই যে টেলিভিশন দেখছে, তার কল্পনা করার কিছু থাকে না! কেউ যদি শুধু টেলিভিশন দেখে বড় হয়, তার মানসিক বিকাশের সঙ্গে একজন বই পড়ে বড় হওয়া শিশুর খুব বড় একটা পার্থক্য থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপকের একবার ধারণা হলো, খুব শিশু বয়সে বেশি টেলিভিশন দেখলে একজন শিশুর অটিজম শুরু হতে পারে। তিনি নানাজনকে বিষয়টি একটু গবেষণা করে দেখতে অনুরোধ করলেন। কিন্তু অধ্যাপক ভদ্রলোক মনোবিজ্ঞানী নন, ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের। তাই কেউ তাঁর কথার কোনো গুরুত্ব দিল না। কর্নেল ইউনিভার্সিটির সেই অধ্যাপক তখন নিজেই নিজের মতো করে একটা গবেষণা শুরু করলেন। সেটি মোটেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণা নয়—অর্থনীতি বা ব্যবসা প্রশাসন ধরনের গবেষণা। তিনি চিন্তা করে বের করলেন, বৃষ্টি বেশি হলে বাচ্চারা বেশি ঘরে থাকে; বাচ্চারা বেশি ঘরে থাকলে বেশি টেলিভিশন দেখে। তাই যেসব এলাকায় বেশি বৃষ্টি হয়, সেখানে বাচ্চারা বেশি টেলিভিশন দেখতে বাধ্য হয়। যদি টেলিভিশন বেশি দেখার সঙ্গে অটিজম বেশি হওয়ার একটা সম্পর্ক থাকে, তাহলে যেসব এলাকায় বৃষ্টি বেশি হয়, সেখানে নিশ্চয়ই বেশি বাচ্চা অটিজমে আক্রান্ত হয়। কর্নেলের অধ্যাপক দেখতে পেলেন, সত্যি সত্যি যেসব এলাকায় বৃষ্টি বেশি হয়, সেসব এলাকায় অটিজম-আক্রান্ত শিশু বেশি। তিনি এখানেই থামলেন না, গবেষণা করে দেখালেন, আমেরিকায় যেসব স্টেটে কেবল টেলিভিশন দ্রুত বেড়ে উঠেছে, সেসব এলাকায় অটিজমও দ্রুত বেড়ে উঠেছে। মজার ব্যাপার হলো, তাঁর গবেষণাটি বৈজ্ঞানিক মহল মোটেও গ্রহণ করলেন না। শুধু তা-ই নয়, উল্টো গবেষণা করে এ রকম একটা তথ্য আবিষ্কার করে সবাইকে বিভ্রান্ত করে দেওয়ার জন্য সবাই তাঁকে অনেক গালমন্দ করতে শুরু করল। আমি ১৮ বছর আমেরিকায় ছিলাম। আমি এর সঙ্গে আরেকটা তথ্য যোগ করতে পারি। আমেরিকায় টেলিভিশনের ব্যবসা এতই শক্তিশালী যে, সেই দেশে সত্যি সত্যি যদি গবেষণা করে দেখা যায়, টেলিভিশনের সঙ্গে অটিজমের একটা সম্পর্ক আছে, সে তথ্যটাও কেউ কোনোদিন প্রকাশ করার সাহস পাবে না! (আমেরিকার যেকোনো মানুষ যখন খুশি দোকান থেকে একটা বন্দুক, রাইফেল কিংবা রিভলবার কিনে আনতে পারবে

আপডেট ?? ?? ???? ??:??:?? ????
Loading...
advertisement
সর্বশেষ সংবাদ
এ বিভাগের সর্বশেষ