আমাদের মাঝে অনেকে আছেন যারা প্রতিদিন গোসল করাটাকে একেবারে অলঙ্ঘনীয় নিয়ম বলে ধরে নেন। অনেকে আবার একেবারে বাধ্য না হলো অমুখো হন না। কিন্তু বিজ্ঞান কি বলে? আসলেই কি প্রতিদিন গোসল করাটা জরুরী? ডার্মাটোলজিস্টদের প্রতিদিন গোসল করাটা একেবারে জরুরী না হলেও বাংলাদেশের মতো আর্দ্র আবহাওয়ার দেশের জন্য প্রতিদিন গোসল করাটাই স্বাভাবিক অনেকের জন্য। তবে যারা প্রতিদিন গোসল করার ব্যাপারটাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করেন, তাদের সমর্থনেই কথা বলছেন গবেষকেরা।
নিউ ইয়র্কের ডার্মাটোলজিস্ট ডক্টর জশুয়া জিকনার এর মতে, আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোর মানুষেরা আসলে অতিরিক্ত ঘন ঘন গোসল করে থাকে। মূলত সাংস্কৃতিক প্রভাবের কারনেই তারা প্রতিদিন গোসল করাটাকে জরুরী মনে করে থাকে। এদের দেখাদেখি উন্নয়নশীল দেশের মানুষেরাও দৈনিক গোসলকে অপরিহার্য বলে ধরে নেন।
আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর বিভিন্ন সাবানের বিজ্ঞাপনে নিয়মিত গোসল করার ব্যাপারটাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু আসল ব্যাপারটি কি? গবেষকদের মতে, আপনি শারীরিকভাবে কতোটা সক্রিয় তার ওপরে গোসলের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই নির্ভরশীল। যারা প্রতিদিন জিমে গিয়ে ঘাম ঝরিয়ে আসেন তাদের জন্য দিনে একবার এমনকি একাধিকবার গোসল করাটা স্বাভাবিক এবং দরকারি। বাইরে ট্রাভেল করে শরীর ময়লা হয়ে গেলেও দরকারি গোসল। গ্রীষ্মকালে যে সময়ে কোন কাজ না করেই শরীর ঘেমে একাকার হয়ে যায় সে সময়েও দৈনিক গোসলটা জরুরী।। কিন্তু এ সময়ের কথা ভাবুন।। শীতকালে বেশ ভারী কাজ না করলে শরীর ঘামবে না, শরীর ময়লাও হবে না। এ সময়ে দৈনিক গোসল করাটা আসলে অতটা জরুরী নয়।
এখানে আরেকটি ব্যাপারে জেনে রাখা দরকারি। শীতকালে আপনি যদি প্রতিদিন গরম পানিতে গোসল করতে থাকেন, তবে ত্বকের ক্ষতি বই উপকার হবে না। এর পাশাপাশি ত্বকের দরকারি ব্যাকটেরিয়াগুলোও পানির সাথে ধুয়ে চলে গিয়ে আপনার রোগ-বালাই হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। দৈনিক গোসল না করে কতো ঘন ঘন গোসল করাটা জরুরী? উত্তপ্ত আবহাওয়া, ভারী কাজ বা ময়লা পরিবেশে না গেলে দুই-তিন দিন পর পর গোসল করাটাই যথেষ্ট। যদি বেশি জরুরী মনে হয় তবে শরীরের যেসব অঙ্গে ঘাম বেশি হয় ও ময়লা জমে(মুখ, বগল, স্তনের নিচে, জননাঙ্গ এবং পশ্চাদ্দেশ) সেসব অঙ্গ আলাদাভাবে ধুয়ে নিতে পারেন। আর মনে রাখবেন, দৈনিক গোসল করাটা জরুরী না হলেও আন্ডারগার্মেন্টস প্রতিদিন পরিবর্তন করাটা জরুরী।