নিম্নচাপটির প্রভাবে চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারি বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার আভাসও দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
এ প্রেক্ষাপটে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঊপকূলবর্তী এলাকায় রোববারের জেএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
রাত ৯টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
“এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল (রোববার) সকাল নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে,” বলা হয় বুলেটিনে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত নামিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে।
এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ২-৩ ফুট উঁচু জোয়ার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ।
দুর্যোপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য জেএসসির রোববারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও কুমিল্লা বোর্ডের, জেডিসি স্থগিত হয়েছে সারা দেশে।
নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে শুক্রবার সকাল থেকে। শনিবারও তা অব্যাহত রয়েছে।
এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তার নাম হবে ‘নাদা’। এ নামটি ওমানের দেওয়া।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল এ অঞ্চলে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের একটি তালিকা করে রেখেছে। কোনো নিম্নচাপ সাইক্লোনের রূপ নিলে ওই তালিকা থেকে নির্ধারিত নামটি বরাদ্দ হয়।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে মিয়ানমারের প্রস্তাব অনুসারে নাম নাম দেওয়া হয় কায়ান্ট, যার অর্থ কুমির। কায়ান্ট দুর্বল হয়ে আবার সাগরেই নিম্নচাপে পরিণত হয়; সেটি উপকূল অতিক্রম করেনি।
সংকলন ও সূত্র- /বিডিনিউজ ২৪/