আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

ফের পরিবর্তন আসছে বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতিতে!

বিসিএস পরীক্ষায় পরিবর্তন আনতে ফের নতুন চিন্তাভাবনা চলছে। বিসিএসের এমসিকিউ পদ্ধতির পরীক্ষা কোনো মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষা নয়। এটি ভাগ্য পরীক্ষা মাত্র। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এমসিকিউয়ের সঙ্গে ৫০ নম্বরের রচনামূলক পরীক্ষার প্রস্তাব করা হয়।

কিন্তু বাদ সাধে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তারা যুক্তি দেখায়, লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক সময়ের প্রয়োজন হয়। এ কারণে ফলাফল প্রকাশে দেরি হয়। এই বিরাট সমস্যার কারণে ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সবদিক বিবেচনা করে পিএসসির নতুন আইন করা হচ্ছে। তবে ওই আইনে পরীক্ষার পদ্ধতিতে কোনো পরিবর্তন আনা হবে কি না তা বিবেচনা করা হচ্ছে। সংসদের ৭ম অধিবেশনে উত্থাপিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রথম রিপোর্টে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

ওই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন এইচ এন আশিকুর রহমান। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জানান, পিএসসির নতুন আইন হচ্ছে। আইনটি সচিব কমিটিতে আলোচনার সময় বিসিএসের এমসিকিউ পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে পরীক্ষাটিকে ভাগ্য পরীক্ষা বলা হয়।

বিসিএসের ২৭টি ক্যাডারসহ নন-ক্যাডার পদে পিএসসি নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। এসব নিয়োগের জন্য তিন স্তরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম স্তরে ২০০ নম্বরের এমসিকিউ টেস্ট। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে দ্বিতীয় স্তরে বিষয়ভিত্তিক ৯০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। তৃতীয় স্তরে ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই চূড়ান্ত করা হয়। পরীক্ষার বিষয়টি বৈঠকে উত্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বেতন ও চাকরি কমিশন-২০১৩ এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।


 

চাকরীর সকল খবর পেতে যোগ দিন আমাদের গ্রুপে


 

তিনি বলেন, এমসিকিউ কোনো মেধার পরীক্ষা নয়। তাই মেধা যাচাইয়ের জন্য অন্য কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় কি না সে বিষয়ে পিএসসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করেন বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেয়া প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।

পরে তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের পরে কয়েকবার ৫০০/৬০০ জন করে একসঙ্গে নিয়োগ দেয়ায় সৃষ্ট সমস্যা বর্তমান সরকারকে বহন করতে হচ্ছে। ২০০৬ সালে বিসিএস পরীক্ষার কোনো গুরুত্বই ছিল না। একটি ভবন থেকে আসা তালিকা ধরে নিয়োগের সুপারিশ করা হতো। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ অবস্থার পরিবর্তন হয়।

তিনি বলেন, এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত অনেকগুলো বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা অতীতে হয়নি। এর আগে পিএসসির কন্ট্রোলার কমিটিকে জানান, নন ক্যাডার পদেও পিএসসি নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে থাকে। নন ক্যাডার পদে দু্‌ হাজারের কম হলে দুই স্তরের পরীক্ষা এবং প্রার্থী ২ হাজারের ওপরে হলে তিন স্তরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পদের ৪৫ ভাগ মেধা কোটা এবং বাকি ৫৫ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বিভিন্ন কোটায় নিয়োগের সুপারিশ করা হয়ে থাকে।

তিনি জানান, ২০০৮ সালের জুন হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৭টি বিসিএস পরীক্ষায় ১৮ হাজার ৬৩৬ জনকে এবং একই সময়ে নন ক্যাডার পদে এক হাজার ১৯৫ জনকে পিএসসি নিয়োগের সুপারিশ করে। বর্তমানে বিসিএস ক্যাডারে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ না থাকায় তাদেরকে নন-ক্যাডার ১ম শ্রেণির পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সম্প্রতি দ্বিতীয় শ্রেণির পদেও ক্যাডার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়।

এদিকে কমিটির রিপোর্ট প্রসঙ্গে সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন দক্ষ জনবল।

আর দক্ষ জনবল উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংসদীয় কমিটি মনে করে, প্রজাতন্ত্রের জনবল রিক্রুটমেন্টের সময় প্রার্থীর দেশপ্রেম ও দেশের মৌলিক নীতি ও আদর্শে বিশ্বাস যাচাই করা সমীচীন।

source of information: Banglanews