আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

অতিরিক্ত ওজনের কারনে হতে পারে ১৩ রকমের ক্যান্সার

দেহের অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলত্বের সঙ্গে নতুন করে আট রকম ক্যান্সারের যোগসূত্র আছে বলে দেখতে পেয়েছেন চিকিৎসা-বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে মোট ১৩ জাতের ক্যান্সারের যোগসূত্রের কথা প্রকাশ করা হলো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’র নতুন এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনের  কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা আগের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি বলেও এতে মনে করা হচ্ছে।

আগে চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, জরায়ু, অন্ত্র, বৃক্ক বা কিডনি এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সারের সঙ্গে দেহের স্থূলত্বের সম্পর্ক আছে। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র বা আইএআরসি এ তালিকায় আরো আট রকমের ক্যান্সারের নাম যুক্ত করেছে। এগুলো হলো গর্ভাশয়, পাকস্থলী, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, পিত্ত থলি, থাইরয়েড, অস্থিমজ্জার ক্যান্সার মেলোমা এবং বিশেষ  এক জাতের মস্তিষ্কের টিউমার- মেনিনগিওমা।

দুই দশক আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রথম বুঝতে শুরু করেন যে, খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামহীন নিষ্ক্রিয় জীবন-যাপনের সঙ্গে কিছু কিছু ক্যান্সারের যোগসূত্র আছে।

২০০২ সালে পাঁচ ক্যান্সারের তালিকা প্রকাশ করে আইএআরসি। এটি জানায়, দেহের মাত্রাতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে এ সব ক্যান্সারের সম্পর্ক থাকতে পারে। একই বিজ্ঞানী দল এবারে এ তালিকার বিস্তার ঘটিয়েছেন। এবারে সব মিলিয়ে তালিকায়  উঠে এসেছে ১৩ ক্যান্সারের নাম। সেইন্ট লুইসের ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।

মাত্রাতিরিক্ত চর্বির কারণে দেহে কিছু হরমোনের উৎপাদন অতিমাত্রায় হতে থাকে। এতেই ক্যান্সার সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা ।

কেবলমাত্র বংশগতির কারণে ক্যান্সার হয়- অতীতে এমনটি বিশ্বাস করতেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সম্প্রতি চিকিৎসকরা বলছেন, স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করলে ক্যান্সারের প্রকোপ কমিয়ে আনা যায়। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত নিবন্ধে ডা. কোল্ডিৎস বলেছেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখা এবং ব্যায়াম করা একান্তভাবে প্রয়োজনীয়। এর পাশাপাশি ধূমপান থেকে বিরত থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। ক্যান্সার ও দেহ ওজনের সম্পর্ক নিয়ে  এক হাজারের বেশি সমীক্ষার ভিত্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

চিকিৎসা-বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, এভাবে ৪০ শতাংশ ক্যান্সার এবং ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ হৃদরোগ এড়ানো যেতে পারে।

কাজেই আপনি ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ে জীবন কাটাবেন নাকি নিয়মিত ব্যায়াম করে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং ওজন বজায় রেখে  ধূমপান না করে  মানসম্পন্ন জীবন যাপন করবেন এবারে সে সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে!