অর্থ, ক্ষমতার লিপ্সা তখত দখলের লড়াইয়ে জীবন বিপন্ন ছোট্ট রতনের। রতনের মাও মারা গিয়েছেন গুপ্ত আততায়ীর হাতে বোমায়। আহত মৃত্যুপথ যাত্রী বাবা ছেলের প্রাণসংশয় শঙ্কিত। কাতর আবেদনে দিয়ার সঙ্গে নিজের ছেলের বিয়ে দেন যাতে রতনকে পাহারা দিতে পারে দিয়া। সব বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্যই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করা হয় ৯ বছরের রতন আর ১৮ বছরের দিয়াকে। শুরুর আগে থেকেই শো-টি ছিল চর্চার বিষয়। অন্যরকম কাহিনি, চলতি ছক ভাঙা, ‘প্রোগ্রেসিভ’ কনসেপ্ট—শোনা গেছে অনেক কিছু। আবার বিতর্ক ঘনিয়েছে এই অসমবয়সী বিবাহ (বাল্য বিবাহে প্রশ্রয়?) গৃহপ্রবেশে, এমনকী ‘ফুলশয্যার দৃশ্যে। অবশ্য শুরুটাও ছিল চমকপ্রদ। ৯ বছরের ছোট্ট ছেলেটি তার দ্বিগুণ বয়সী দিয়ার সৌন্দর্যে আত্মহারা হয়ে গোপনে পিছু নেয় এবং ছবি তোলে। (চাইল্ড স্টকিং)! এখন চলছে রতন-দিয়ার সুইজারল্যান্ডে হানিমুন প্ল্যানিং নিয়ে চর্চা। ৯ বছরের ছোট্ট বালক, বিবাহিত সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে এত ভেবে সব ব্যবস্থা করে ফেলছে। দিয়ার সিঁথিতে সিদুর পরানো, শ্বশুরালয় কেশর মহলে গৃহপ্রবেশে বরণডালা জোগাড়, বিয়ে হলেও মহলে (এত বাড়ি ভরতি লোক থাকা সত্ত্বেও) পরিবারের সদস্যের অনুপস্থিতি, চাল ভরতি ঘটের বদলে পপকর্ন দিয়ে ঘট ভরে আনা—এতসব বিষয়ে নিয়ম নিষ্ঠা, উপাচার ৯ বছরের ছেলের জানাটা বিসদৃশ্য, অবান্তর অবিশ্বাস্য। কীভাবে ওইটুকু ছেলে দিয়ার পিছু নেয়, লুকিয়ে ছবি তোলে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়—বোধগম্য হয় না। কারণ এই অল্পবয়সী বিয়ে তো স্বাভাবিক সম্পর্কের কাহিনিই নয়। যদিও ধারাবাহিক নির্মাতার আত্মপ্রতিষ্ঠিত কাহিনি। তার বিতর্কের পালে আরও হাওয়া লেগেছে ধারাবাহিকটির বিরুদ্ধে হওয়া একটি পিটিশনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ। যাই হোক নানা চাপানউতোর চলছে ধারাবাহিকটি নিয়ে। কনসেপ্ট অন্যরকম হলেও এতে গলদ আছে। বিসদৃশ্য, অবান্তর বিষয় ও দৃশ্যের অবতারণায় ‘গুরুত্ব হ্রাস পাচ্ছে। তবে স্বরাগিনী খ্যাত তেজস্বী প্রকাশ (দিয়া) এবং ছোট্ট রতনের ভূমিকায় আফন খানকে মানিয়েছে বেশ। অন্য চরিত্রে পরমিত শেঠি (রতনের বাবা), কিশোরী সাহানে, সূর্যশ রায় প্রমুখ রয়েছেন। বিতর্কের আঁচে পড়ে জনপ্রিয়তা পেলেও ভুলভাল কনসেপ্টের জন্য কতদিন টিঁকে থাকবে ধারাবাহিকটি, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সংকলন - বর্তমান পত্রিকা