নিজের থেকে অন্তত তিনগুণ বড় সাইজের শার্ট, টিশার্ট বা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ঘুরঘুর করা সেই কুট্টি ভূতের কাণ্ডকারখানা দেখতে রোজ রাতে টিভির পর্দায় প্রায় আঠা দিয়ে চোখ সেঁটে বসেন অন্তত কোটি খানেক মানুষ। টিআরপি বাড়ত রকেট গতিতে। আর তাই চ্যানেলের তুরুপের তাসই ছিল এই খুদে নায়িকা। একদম ঠিক, আমরা কথা বলছি ভুতু সিরিয়ালের ছোট্ট ভুতুর। কিন্তু হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় এই সিরিয়াল। টিভির পর্দায় ভুতুর অনুপস্থিতি নিয়ে সবার মনে একটাই প্রশ্ন, এখন কী করছে ভুতু?
নিয়মিত স্কুলে যাওয়া পড়াশুনায় মন দিয়েছেন জি ডি বিড়লা স্কুলে ক্লাস ওয়ানের ছাত্রী আর্শিয়া মুখোপাধ্যায়। মানে ছোট্ট ভুতু। সিরিয়াল চলাকালীন যা হত না একদমই। ‘‘এখন মেয়ের পড়াশোনায় বেশ মন। রোজ স্কুল থেকে এসে প্রথমেই আমাকে বলে, মা, আজ এর সঙ্গে ঝগড়া করলাম, কাল ওর সঙ্গে ভাব করলাম, আজ এই খেলাটা খেলেছি। স্কুলের আন্টি আমাকে গুড দিয়েছে। এমন হাজারো কথা…’’ গলায় পরম তৃপ্তি নিয়ে জানিয়েছেন আর্শিয়ার মা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের। তবে আবশ্য সিরিয়াল চলার সময় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া না হলেও পড়াশোনায় একটুও ফাঁকি দেননি আর্শিয়া।
যে বিল্ডিংয়ে আর্শিয়া থাকে, সেখানে তাঁর বয়সি ছেলেমেয়ে কম, কাছাকাছি খেলার মাঠও নেই। তাই স্কুল থেকে ফিরে আর্শিয়া কখনও মায়ের তৈরি তার প্রিয় পুডিংয়ের বাটি নিয়ে কখনও আবার তার মনের মতো চিকেন খেতে-খেতে মজে যায় টিভিতে প্রিয় কার্টুন ডোরেমনে।
সিরিয়াল থেকে ছুটি পেয়েছে আর্শিয়া। কিন্তু এর মধ্যেই অন্য সিরিয়ালের অফার এসেছে ভাস্বতী ও দীপঙ্করবাবুর কাছে। কিন্তু তাঁরা চাইছেন আরও বেশ কিছুদিন তাঁর মেয়ে এই স্বাভাবিক জীবনে থাকুক। তারপর তাঁরা ভেবে দেখবেন মেয়ে অভিনয় করবে কি না। আর্শিয়া অবশ্য নিজে এখন স্কুল নিয়েই মেতে আছে। শুধু একটা জিনিসই সে খুব মিস করে। সেটা পটেটো চিপস। সিরিয়ালের শ্যুটিংয়ের সময় নবীনা সিনেমা হলের মালিক তাকে রোজ এক প্যাকেট করে চিপস উপহার দিত। সেটা আর পাওয়া হচ্ছে না। এইটুকুই যা দুঃখ!