শুধু ব্যায়াম করলেই পেটের মেদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়না। খাবার দাবারেও সতর্ক থাকতে হবে। খাবার সতর্কতা এবং শরীরের বিশেষ কয়েকটি ব্যায়াম আপনার পেটের চর্বিকে কমিয়ে দিবে এবং ভবিষ্যতে এধরনের চর্বি জমা থেকে আপনাকে মুক্ত রাখবে।
খাবারে সতর্কতা
------------------
১. প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবু ও একটু লবণ দিয়ে শরবত তৈরি করে খাবেন।
২. শরবতটি খাওয়ার পর দুই বা তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে ভাল ফল পাবেন। তাহলে আপনার শরীরে ওজন কমানোর প্রক্রিয়িাটি দ্বিগুন গতিতে হবে। একই সঙ্গে আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন হবে মসৃণ গতিতে।
৩. সকালের নাশতাতে অন্য খাবারের কম খেয়ে একবাটি করে ফল খেলে পেটের চর্বি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৪. পানি শরিরের পরিপাক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষতিকর সব কিছু শরীর থেকে বের করে দেয়। সেজন্য সকল ডাক্তারদের পরামর্শ বেশি বেশি পানি খেতে হবে।
৫. ভাতের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আটার তৈরি খাবার বেশি খেলে অনেক উপকার পাবেন।
৬. খাবার রান্না করার সময় দারুচিনি, আদা, কাঁচা মরিচ বেশি ব্যবহার করুন।এগুলো শরীরের রক্তে শর্করার
মাত্রা কমিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
৭. চিনি জাতীয় খাবার শরীরে বিশেষ করে পেট ও উরুতে চর্বি জমতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সুতরাং চর্বি থেকে বাচতে হলে এ জাতীয় খাবারের লোভ সংবরণ করতে হবে।
৮. প্রচুর পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন শাক সবজি, আমড়া, চালতা খেতে হবে।
৯. চর্বি জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড এবং সফট ড্রিংকস (কোকাকোলা, পেপসি ইত্যাদি) খাওয়ার অভ্যাস কমাতে হবে। একদমই না খেলে আরও ভাল হয়।
উপযুক্ত ব্যায়াম
-----------------------
বেলি স্ট্রোক পেশীর আকৃতি সুন্দর করলেও পেটের মেদ কমাতে খুব একটা কাজে দেয় না। পেটের মেদ কমাতে হলে প্রয়োজন পুরো শারীরিক ব্যায়াম।
১। প্রতিদিন ৪০-৪৫ মিনিটের জগিং রক্তে চলমান ফ্যাটকে ধ্বংস করে দেহে সঞ্চিত ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে।
২। সাইকেলিং করতে পারেন কমপক্ষে ১ ঘন্টা।
৩। দড়ি লাফানোর অভ্যাস করতে পারেন। ৩০ মিনিট করে করুন।
ভুড়ি কমিয়ে সুন্দর মেদহীন পেটের আকৃতি পেতে কিছু ব্যায়ামঃ
-----------------------------------------------------
- প্রথমেই শক্ত বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে মাথার পেছনে দুই হাত সোজা করে রাখুন। পা মাটির সঙ্গে জোড়া করে লাগানো থাকবে। এবার পুরো শরীর আস্তে আস্তে ওপরে তুলে হাত দিয়ে পা স্পর্শ করতে হবে। এভাবে ১০ বার করে তিনবার করুন।
- শোয়া অবস্থাতেই এবার হাত থাকবে কোমরের নিচে, দুই পা থাকবে সোজা। শরীর ও হাত স্থির হয়ে থাকবে। এবার পা দুটো আস্তে আস্তে একসঙ্গে ওপরে তুলতে হবে আবার নামাতে হবে। পুরো সময়ে পা মাটিতে ছোঁয়ানো যাবে না। এভাবে ১০ বার করে তিনবার করুন।
- বিছানায় শুয়ে থেকেই এবার দুই হাত ভাঁজ করে মাথার পেছনে নিন। ডান পা ভাঁজ করে মাটি থেকে তুলে ডান হাঁটু বাঁ কনুইয়ে লাগানোর চেষ্টা করুন। এবার হবে ঠিক উল্টো, বাঁ পা ভাঁজ করে মাটি থেকে তুলে বাঁ হাঁটু ডান কনুইয়ে লাগানোর চেষ্টা করুন। এভাবে ১০ সেকেন্ড করে তিনবার করুন।
যাদের পেটে এখনও মেদ নেই তাদের জন্য করনীয়ঃ
---------------------------------------------
নিয়মিত পরিকল্পনা মাফিক ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করলে শুধু পেটের মেদই না, সারা দেহের মেদ কমে গিয়ে সুন্দর ফিগার তৈরি হবে এবং সাথে সাথে সুন্দর ও সুস্থ জীবন কাটাতে পারবেন।
১। প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে নিয়ম করে ১০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটুন।
২। চর্বি জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড এবং সফট ড্রিংকস না খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৩। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে আঁশ জাতীয় খাদ্য রাখুন।
৪। বেশি বেশি ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫। খাওয়ার পরপরই বসে থাকা কিংবা শুয়ে থাকা যাবে না।
৬। একাধারে অনেকক্ষণ বসে থাকা যাবে না।
৭। চলাচলের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে রিকশা কিংবা গাড়ি ব্যবহার না করে হেটে গন্তব্যে পৌছতে চেষ্টা করুন। তবে অবশ্যই হাটার সময় জোরে জোরে হাটতে হবে।