এক বছর আগে যাঁকে সরিয়ে অনিল কুম্বলেকে কোচ করেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়দের কমিটি, সেই রবি শাস্ত্রীকেই ফিরিয়ে আনতে হল তাঁদের। যদিও কোচ নিয়োগ নিয়ে চূড়ান্ত নাটক চলল দিনভর। শুধু তা-ই নয়, শাস্ত্রীকে হেড কোচ করা হলেও তাঁর সঙ্গে বোলিং কোচ হিসেবে জাহির খান এবং বিদেশে ব্যাটিং কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়কে আনা হয়েছে। যা দেখে কারও কারও মনে হচ্ছে, এত সব বড় বড় নাম একত্রিত হলে আরও বড় ব্যক্তিত্বের সঙ্ঘাত ঘটবে না তো? বিশেষ করে যেখানে কোহালি-কুম্বলে দু’টো বড় নামের মধ্যে বিকর্ষণ ঘটে এত সব কাণ্ড ঘটে গেল! সৌরভদের কমিটির সঙ্গে সহকারী কোচদের নিয়ে হেড কোচ শাস্ত্রী একমত হলেন কি না, তা নিয়েও সংশয় থাকছে। দ্রাবিড়কে বরাবরই খুব পছন্দ করেন শাস্ত্রী। এমনিতে জাহির খানকে নিয়েও তাঁর কোনও অসুবিধে নেই। কিন্তু শাস্ত্রীর সময় উনিশ মাস ভারতীয় দলের বোলিং কোচ ছিলেন ভরত অরুণ। তিনি খুব বড় নাম না হলেও অশ্বিনদেরও আস্থা জিতে নিয়েছিলেন।
আইপিএলে কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বোলিং কোচ তিনি। কুম্বলে হেড কোচ হয়ে আসার পর তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শোনা যাচ্ছিল শাস্ত্রী ফিরলে অরুণও ফিরবেন। সেটা আপাতত স্থগিত। আবার ব্যাটিং কোচ হিসেবে সঞ্জয় বাঙ্গার রয়েছেন। যাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন স্বয়ং কোহালি। যদি দ্রাবিড় বিদেশের মাটিতে ব্যাটিং কোচ হিসেবে যান, তা হলে বাঙ্গারের ভবিষ্যৎ কী? দ্রাবিড় নিজে এখন জুনিয়র দলেরও কোচ। না কি কোহালির কথা মেনে নিলেও ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির একাংশ বুঝিয়ে দিতে চাইল যে, আমাদের কথাও শুনতে হবে? ওয়াকিবহাল মহল এই ব্যক্তিত্বের সঙ্ঘাত কিন্তু উড়িয়ে দিতে পারছে না। শাস্ত্রী এবং ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির অন্যতম সদস্য সৌরভের মধ্যে তিক্ততার কথা সকলের জানা। তাতে নতুন বারুদ যোগ হতে পারে শাস্ত্রীর সহকারীদের নির্বাচন নিয়ে। ‘‘কোহালি অনড় বলে শাস্ত্রীকে ফেরাতেই হচ্ছে। কিন্তু শাস্ত্রীর ইচ্ছা মতো সহকারী দেওয়া হল না,’’ বলছেন ওয়াকিবহাল বোর্ড কর্তারা।
এমনিতে সৌরভ নিজে গত কাল বলেছিলেন, তাঁরা এখনই কোচের নাম জানাবেন না। কোহালি ফিরলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ) পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, এ দিনই কোচের নাম ঘোষণা করতে হবে। সেটাও কমিটিকে খুব প্রসন্ন করল কি? প্রশ্ন থাকছে। বরং ঘটনার জেরে কমিটির দু’একজনের পদত্যাগের জল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির তারকা ত্রয়ী ভিডিও কলে কথা বলেন নিউ ইয়র্কে ছুটি কাটাতে যাওয়া কোহালির সঙ্গে। অধিনায়ক জোর দিয়েই বলে দেন, তিনি শাস্ত্রীকেই চান। বীরেন্দ্র সহবাগ বা টম মুডিকে নিয়ে জল্পনা ওখানেই বুদবুদের মতো মিলিয়ে যায়। এর পরেই বোর্ডের ফোন পান শাস্ত্রী— আপনিই হেড কোচ!