কিছুই না, স্রেফ ভাত সেদ্ধ করার জল নিয়ে মুখ ও চুলে লাগিয়েছিলেন। তাতেই ফলে অবিশ্বাস্য ফল। ঠিক কীভাবে এই কৌশল প্রয়োগ করতে হবে, তা এখন নিজের ব্লগেও জানাচ্ছেন ভেরোনিকা।
ভেরোনিকা হ্যাজেল ক্যালিফোর্নিয়ার এক বিউটিশিয়ান। মানুষকে সুন্দর করে তোলাই তাঁর পেশা। প্রতিদিনই অজস্র মানুষ তাঁর কাছে আসতেন ত্বক ও চুলের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে। ভেরোনিকা সাধ্যমতো সমাধানও বাতলে দিতেন তাঁদের। কিন্তু অভিজ্ঞ এই সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ এটাও জানতেন যে, নিজের কাস্টমারদের স্কিন ও হেয়ার প্রবলেমের জন্য যে সমস্ত বিউটি প্রোডাক্ট তিনি রেকমেন্ড করছেন, সেগুলিতে কোনও একটি নির্দিষ্ট সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি যেমন মিলছে, তেমনই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে অন্য কোনও দিক থেকে। কারণ বাজার চলতি সমস্ত বিউটি প্রোডাক্টেই ব্যবহৃত হচ্ছে নানাবিধ রাসায়নিক, যেগুলি কোনও না কোনওভাবে শরীরের ক্ষতি করছেই।
ভেরোনিকা ভাবতে শুরু করেন, যখন এই সমস্ত আধুনিক বিউটি প্রোডাক্টের উদ্ভাব ঘটেনি, সেই প্রাচীন কালে মহিলারা কীভাবে করতেন রূপচর্চা? নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তিনি শুরু করেন গবেষণা। বেশ কয়েক মাসের পড়াশোনার পরে ভেরোনিকা আবিষ্কার করেন প্রাচীন যুগে এশীয় মহিলাদের মধ্যে প্রচলিত রূপচর্চার এক আশ্চর্য কৌশল, যা আজ লুপ্ত।
সেই কৌশল নিজের কাস্টমারদের উপর প্রয়োগ করার আগে, ভেরোনিকা স্থির করেন, নিজের উপরেই প্রয়োগ করে দেখবেন। কয়েক মাস ধরেই মুখে কালো দাগ আর রুক্ষ চুলের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সেই প্রাচীন কৌশল তিনি প্রয়োগ করেন নিজের ত্বকে এবং চুলে। হপ্তাখানেকের মধ্যেই তাঁর ত্বক ও চুলের চেহারা যায় বদলে। মুখের কালো দাগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি, তাঁর চুলও হয়ে ওঠে রেশমের মতো কোমল।
ঠিক কী করেছিলেন ভেরোনিকা? কিছুই না, স্রেফ ভাত সেদ্ধ করার জল নিয়ে মুখ ও চুলে লাগিয়েছিলেন। তাতেই ফলে অবিশ্বাস্য ফল। ঠিক কীভাবে এই কৌশল প্রয়োগ করতে হবে, তা এখন নিজের ব্লগেও জানাচ্ছেন ভেরোনিকা। আসুন, জেনে নেওয়া যাক সেই কৌশল।
ভাত রান্নার সময়ে, ভাত যখন ফুটে এসেছে, তখন রান্নার পাত্র থেকে তুলে নিন তিন চা-চামচ ভাত-সিদ্ধ জল। তাতে মিশিয়ে দিন এক চা-চামচ পাতি লেবুর রস। এবার এই মিশ্রণটি ঘণ্টাখানেক রেখে দিন ফ্রিজে। ফ্রিজ থেকে বের করে নিলেই আপনার রূপের আশ্চর্য ফর্মুলা রেডি। এবার এই মিশ্রণে এক টুকরো তুলো ডুবিয়ে মুখে বুলিয়ে মুখটা পরিষ্কার করুন দিনে বার দুয়েক। হপ্তাখানেকের মধ্যেই দেখবেন মুখের কালো ভাব, মুখের অতিরিক্ত তেলা-ভাব এবং ব্রণ-ফুসকুড়ির দাগ অনেকখানি উধাও হয়েছে।
চুলের ক্ষেত্রে ভাত-সিদ্ধ জল প্রয়োগের নিয়ম একটু আলাদা। ভাত সিদ্ধ হওয়ার সময়ে পাত্র থেকে তুলে নিন এক কাপ জল। সেই জল ঠান্ডা হতে দিন। চান করার আগে ওই জল দিয়ে চুল ধুয়ে মিনিট পনেরো অপেক্ষা করুন। তারপর স্বাভাবিকভাবে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন। কয়েক দিনের মধ্যেই চুল পড়া ও রুক্ষ চুলের সমস্যা থেকে মিলবে নিষ্কৃতি।
কিন্তু কীভাবে ত্বক ও চুলের উপকার করে ভাত-সিদ্ধ জল? স্কিন কেয়ার ইনস্টিটিউট অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এই প্রশ্নের উত্তরে জানাচ্ছেন, ভাত-সিদ্ধ করা জল আসলে ভিটামিন বি, সি, ই এবং বিবিধ খনিজ লবণ ও অ্যামাইনো অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। লেবুর রস ও ভাত-সিদ্ধ জল দিয়ে মুখ ধুলে তা স্কিন টোনিং-এ সহায়তা করে। ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। চুলের সমস্যার ক্ষেত্রেও কাজে আসে ভাত-সিদ্ধ জলের প্রাকৃতিক গুণাবলী।