যদি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মিলিটারি শক্তির তালিকা বানানো হয়,তাহলে পশ্চিমের প্রচলিত নামগুলোই যে আধিপত্য করবে এমন আর নয়।বহু দেশই এখন অঢেল টাকা ঢালে তাদের দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে এবং নিজেদের শক্তির নিদর্শন হিসেবেও।বিশ্বের শক্তিশালী মিলিটারি ক্ষমতার তালিকায় নতুন কিছু নামের আগমনে বিস্মিত হবেন না।পশ্চিমি দেশের ক্ষমতার দিকে ভারি পাল্লার দিশা বদলাচ্ছে।এশীয় বহু দেশ,এমনকি ভারত ও চিনের বর্ধিত প্রতিরক্ষা বাজেট তারই প্রমাণ।উন্নত সুদক্ষ মিলিটারি ক্ষমতার নিদর্শন দেখিয়ে ও আশে পাশের দুর্বল দেশগুলোর ওপর কর্তৃত্ব ফলিয়ে তারই জানান দিচ্ছে সে।
এই প্রবন্ধে আমরা পৃথিবীর সব চেয়ে ক্ষমতাশালী সৈন্যদের দেখব।এই সৈন্যদলের স্তরভেদ করার ভিত্তি হল,মিলিটারি প্রযুক্তির উন্নতির মাত্রা,ভাল সৈন্য তৈরী করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রণালী ও যুদ্ধচালনার নিপুণতা।এই তালিকায় থাকা বেশ কিছু নাম আবার বৃহত্তম সৈন্যবাহিনীর তালিকাভূক্তও হয়ে পড়েছে।আরও জানার জন্য পড়ুন...
বর্দ্ধমান শক্তির ক্রমান্বয়ে প্রস্তুত করা হল এই তালিকা...
১০.ইজরায়েল
একদিকে যেমন দেশটা তার ক্ষমতার প্রদর্শন সর্বদা করে চলেছে, আবার অন্যদিকে বিগত পাঁচ দশক ধরে তার সীমান্তে চলেছে অনবরত যুদ্ধ - সে হল ইজরায়েল।প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধচালনায় অনেকটাই এগিয়ে থাকা এই দেশটির আছে অন্যতম সেরা শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী।এই ক্ষমতার নিদর্শনে বড় অংশে সহায়ক তার অতুলনীয় মিলিটারি প্রযুক্তি।বার্ষিক বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ খরচা করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়।
৯.দক্ষিণ কোরিয়া
চিন ও উত্তর কোরিয়ার মত অনির্দেশ্য প্রতিবেশীর সাথে প্রতিযোগীতা ও আক্রমণের আশঙ্কায়,দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মিলিটারি খাতে খরচা অনেকটাই বাড়িয়েছে।১৯৫০-রা সময়কার কোরিয়ার যুদ্ধের পর থেকে লেগে থাকা উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মোকাবিলা সর্বজন বিদিত সর্বক্ষণের।উন্নতমানের মিসাইল-এর পরীক্ষা নিরীক্ষা লেগেই আছে।এখন দেখতে হবে ৪০ বিলিয়ন ডলারের মিলিটারি খরচার প্রত্যুত্তর কী হয়।
৮.জাপান
এরপরেই শক্তিমান মিলিটারির তালিকায় নাম আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর সময় থেকে আক্রমণ প্রবণ বলে পরিচিত, সে হল জাপান।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর ধ্বংসের পর জাপান বাধ্য হয় তার মিলিটারি সৈন্যর মাপ অস্বাভাবিক রকম ভাবে কমাতে।তা সত্ত্বেও পৃথিবীর তৃতীয় বৃহৎ মিলিটারি এক প্রকান্ড পরিমাণের টাকা খরচা করে তার দেশের প্রতিরক্ষার জন্য, মূলত চিন ও রাশিয়ার মধ্যে বর্দ্ধমান চাপানোতরের জন্য।
৭.জার্মানী
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে,জার্মানীর অর্থনৈতিক ও মিলিটারি ক্ষমতা অদ্বিত্বীয়।ন্যাটোর এক সক্রিয় সদস্য হিসেবে জার্মানীর মিলিটারি প্রযুক্তিগত ভাবে প্রশংসনীয় মা্ত্রা অর্জন করেছে।দেশটি নিজের মিলিটারি ব্যবস্থার থেকে বেশি প্রাধান্য দেয় নিজের অর্থনৈতিক উন্নতিতে। এরই ফলস্বরুপ দেশটি অনেক বড় বড় ক্ষমতাবান দেশের থেকে খুব একটা পিছিয়ে নয়।
৬.ফ্রান্স
২০১৩ সালে ফ্রান্স নিজেদের মিলিটারির খরচা অনেকটা কমিয়ে দেয়।খরচা প্রায় ১০শতাংশ কমানো হয়,কারণ তখন তাদের কাছে প্রাধান্য পায় গবেষণা ও উচ্চমানের প্রযুক্তি সম্পন্ন উপকরণ কেনা।৪০বিলিয়নের কিছুটা বেশি ফ্রান্সের খরচা মিলিটারির ওপর।এছাড়াও,আপগানিস্তান ও আফ্রিকায় মোতায়েন তাদের সক্রিয় সৈন্যদলের কাছে প্রচুর অভিঞ্জতা যা খুব মূল্যবান।
৫.ভারত
ভারতের মনযোগ এখন নিজের সৈন্যর আধুনিকীকরণ। এর জন্য তার মিলিটারির প্রতি খরচা বেড়েছেও প্রচুর।প্রায় ১.১কোটি সেনার অধিকারি ভারতীয় সেনাবাহিনী পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী।প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার খরচা করা হয় প্রতিরক্ষার জন্য, এবং সংখ্যাটা আরও বাড়বে।ভারত পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সামগ্রীর ক্রেতাও।
৪.ইংল্যান্ড
গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিরক্ষার খাতে খরচা শেষ পাঁচ বছরে প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে।পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের মিলিটারি সৈন্যর আয়তন প্রায় ২০ শতাংশ কমানো হবে।এই মুহূর্তে দেশে প্রাধান্য পাচ্ছে প্রযুক্তিগত উন্নতি ও গবেষণা।পৃথিবীর শক্তিশালী মিলিটারি ক্ষমতার তালিকায় গ্রেট ব্রিটেনের স্থান চতুর্থ।
৩.চিন
চিন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনীর অধিকারি ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরচা করার তালিকায় প্রতিরক্ষার জন্য।চিন এই খরচা ক্রমশ বাড়াচ্ছে তীব্রগতিতে।বিদিশী জিনিসের আমদানী কমিয়ে এখন তার নজর এখণ নিজের দেশেই প্রযুক্তি গড়ে তোলায়।সাম্প্রতীক কালে প্রতিবেশী দেশদের সাথে মোকাবিলার ফলে চিন আরও গম্ভীরভাবে মনোনিবেশ করেছে নিজের প্রতিরক্ষা আরও সুদৃঢ় করে তুলতে।চিনের সেনাবাহিনীর সংখ্যা অকল্পনীয় ২.৫কোটি।
২.রাশিয়া
আজকের দিনের রাশিয়ার মিলিটারি ব্যবস্থা অনেক বেশি শক্তিশালী আগের সোভিয়েট ইউনিয়নের থেকে।গত কয়েক বছর ধরে তাদের এই খাতের খরচা বেড়েই চলেছে এবং মূল কেন্দ্র শ্রেষ্ঠ কার্যোপযোগী মিলিটারি প্রযুক্তির গবেষণা।যুদ্ধ সামগ্রী রপ্তানিতে অন্যতম বৃহৎ স্থান রাশিয়ার।বৃহতাকার ১৫,৫০০ যুদ্ধ ট্যাঙ্কের অধিকারী এই দেশ।সক্রিয় সেনাবাহিনী প্রায় ৭৬,০০০।
১.আমেরিকা
৬১২ বিলিয়ন ডলারের অপ্রতিরোধ্য প্রতিরক্ষা বাজেট,আমেরিকার শক্তি ও শৌখিনতা অতুলনীয়।কল্পনাতীত ১৯টি এয়ারক্রাফ্ট,পুরো পৃথিবীর সম্মিলিত এয়ারক্রাফ্টের সংখ্যার চেয়ে বেশি।সারা পৃথিবী মিলিয়ে ১৪টি এয়ারক্রাফ্ট আছে।আমেরিকা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষার পিছনে খরচা করে এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনী। পরবর্তী ১০টি দেশ যোগ করেও তার চেয়ে বেশি আমেরিকার খরচার অঙ্ক।