এমন হিরের খোঁজ পেলে গুপী-বাঘাকে নতুন 'অ্যাসাইনমেণ্টে' পাঠাতেনই ব্রহ্মানন্দ৷ মাণিকজোড়কে হয়তো সেজন্য আরও দুই কুড়ি বয়স কমানোর লোভ দেখাতে হত৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কার্যসিদ্ধি করিয়েই ছাড়তেন রত্নলোভী ওই সাধু৷ কেন না এমন রত্নের জুড়িদার এবিশ্বে বড় একটা নেই৷
নিটোল চৌকো কোল বালিশের আকৃতি৷ দৈর্ঘ্য-প্রস্থ অনেকটা চিঠির উপরে আটকানো স্ট্যাম্পের মতো৷ তবে এর আসল গুণ হল এর রং৷ খাঁটি গোলাপি৷ ‘খাঁটি' বলার কারণ আছে৷ হিরের রং যাই হোক, আলোর প্রতিফলনে অনেক সময়ে নানা রং বিচ্ছুরিত হয় তার থেকে৷ কিন্তু, এই হিরে এক্কেবারে আলাদা৷ আলো যেভাবেই পড়ুক না কেন, গোলাপি ছাড়া অন্য কোনও রঙের বিচ্ছুরণ হয় না৷ এইখানেই স্বতন্ত্র এই হিরে৷ ওজনে বিশেষ বড় নয়৷ ১৬.০৮ ক্যারাট৷ এর থেকে অনেক বড় আর জনপ্রিয় গোলাপি হিরে রয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় হিরের তালিকায়৷ অন্যতম মূল্যবান এক হিরের নাম 'স্টেইনমেটজ পিঙ্ক'৷ ওজন ৫৯.৬০ ক্যারাট৷ দাম দু'কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার৷ অথচ তার ওজনের প্রায় চার ভাগের একভাগ হয়েও নতুন হিরেটির দাম হতে চলেছে অনেক বেশি৷ আগামী ৬-১০ নভেম্বর নিলামে উঠতে চলেছে হিরেটি৷ বিখ্যাত নিলাম সংস্থা ক্রিস্টি ওই হিরের দাম নির্ধারণ করেছে দু'কোটি ৮০ লক্ষ মার্কিন ডলার৷ ভারতীয় মূল্যে যার পরিমাণ ১৮৩ কোটি ৪৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা৷ আগামি শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে হিরেটির প্রদর্শনী সফর৷ লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, হংকং-সহ বিশ্বের একাধিক শহরে দেখার জন্য রাখা হবে হিরেটি৷ শেষে ৬-১০ নভেম্বর জেনেভায় প্রদর্শনী চালাকালীনই হবে নিলাম৷ নিলামে হিরেটির দাম আরও বাড়তে বলে বিশ্বাস ক্রিস্টি নিলাম সংস্থার৷
আপাতত ওই হিরে বসানো রয়েছে প্ল্যাটিনামের একটি আংটিতে৷ গোলাপি হিরের চারপাশে খোদাই করে বসানো রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট হিরে৷ ১০বছর আগে ওই হিরের আংটি কিনেছিলেন এক আমেরিকাবাসী৷ সম্প্রতি তাঁর থেকেই হিরেটি কিনে নেয় ক্রিস্টি নিলাম সংস্থা৷ এখনও পর্যন্ত উজ্জ্বল গোলাপি ওই হিরের কোনও নাম নেই৷ নভেম্বর নিলামে সর্বোচ্চ দাম দিয়ে যিনি ওই হিরে কিনবেন, তিনিই পাবেন নামকরণের সম্মান৷ এযাবত বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান গোলাপি হিরে বিক্রির রেকর্ড রয়েছে ২০১০ সালে৷ সাদবির নিলাম ঘরে ২৪.৭৮ ক্যারাট ওজনের একটি গোলাপি হিরে বিকিয়েছিল চার কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলারে৷ এখন দেখার নতুন হিরেটি সেই রেকর্ড ভাঙতে পারে কি না৷