ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী গ্রামের জঙ্গী আস্তানায় অপারেশ দক্ষিনের থাবা (সাউথ-প) সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখানে কোন জঙ্গী পাওয়া যায় নি। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমান বিস্ফোরক ও রাসায়নিক দ্রব্য। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত সতর্কতার সাথে আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ওই বাড়িতে অপারেশন পরিচালনা করেন। মুল অপারেশ শুরু করে শনিবার সাকাল ৯টার দিকে। চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। অপারেশন শেষে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ দিদার আহম্মেদ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, বিভাগীয় পর্যায়ের ৩/৪ জন জঙ্গী এই বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। বাড়িটি জঙ্গীদের বোমা তৈরীর কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। প্রেস বিফ্রিংকালে তিনি বলেন জঙ্গি আব্দুল্লাহ’র বাড়িটি নিউ জেএমবি’র সদস্যরা বোমা তৈরীর কারখানা হিসাবে ব্যবহার করতো।
এ আস্তানায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উচ্চ পর্যায়ের জঙ্গিরা আসা যাওয়া করতো। কারা এ বাড়িতে আসতো তাদের নাম ঠিকানা জানা গেলেও তদন্তের স্বার্থে বলা যাবে না বলে ডিআইজি জানান। এই জঙ্গী আস্তানা থেকে ২০টি রাসায়নিক কনটেইনার, সুইসাইডাল বেল্ট ৯টি, একটি প্রেসার কুকার বোম, ৩টি সুইসাইডাল ভেষ্ট, ৮/১০টি মাইন সাদৃশ্য বস্তু, প্রচুর পরিমানে ইলেক্ট্রিক সার্কিট, একশ প্যাকেট লোহার ছোট বল, ১৫টি জেহাদী বই, ৭ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। বোমা নিস্ক্রিয় করার সময় বোমার আঘাতে জঙ্গি আস্তানাটির ঘরের চালা উড়ে যায় ও দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে। অভিযানে ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের ৭জন বোমা নিস্ক্রিয়কারী সহ ৩০জন সদস্য, খুলনা রেঞ্জ পুলিশ, ঝিনাইদহ পুলিশ, এলআইসি টিম ও পিবিআই টিম সহ ৪’শ সদস্য এ অভিযানে অংশ নেন।
অভিযানকালে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে টেরিরিজম ইউনিটের এডিসি নাজমুল, বোমা ডিসপোজালের এডিসি রহমত, ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সদরের পোড়াহাটি গ্রামে নওমুসলিম আব্দুল্লাহ’র বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা হিসাবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট সদস্যরা ঘিরে ফেলে। রাত ১০টার দিকে ডিআইজি দিদার আহমেদ অভিযানের বিরতি দেন। শনিবার সকাল সোয়া ৯টা থেকে আবার অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে জঙ্গি আস্তানাটির ৫শ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বর্তমানে ওই জঙ্গি আস্তানাটিতে পুলিশ অবস্থান করছে।
/মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক/ঝিনাইদহ