জুই, অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী, পড়াশুনায় বেশ ভালো, দেখতেও বেশ স্মার্ট কিন্তু তার বার বার বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে উচ্চতার কারনে। ওর ইচ্ছা একটু যদি লম্বা হতে পারতাম। তাই ওর জন্য আজ লম্বা হওয়ার টিপস...
বাড়াতে চাই উচ্চতা, হতে চাই লম্বা। কিন্তু চাইলেই কি আর লম্বা হওয়া যায়। তার জন্য করতে হয় কত সাধনা। না খেয়ে বসে থাকতে হবে বা নিতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ। কি ভয় পেয়ে গেলেন শুরুতেই। না এমন কিছুই করতে হবেনা আপনাকে।
উচ্চতা বাড়াতে শুধু দরকার নিম্নোক্ত সাতটি ব্যায়াম অভ্যাস করার। সঠিক নিয়মে পালন করতে পারলে আপনার উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে অনেকাংশেই। তবে ঠিকভাবে করতে না পারলে ফল হবেনা কোনভাবেই।
এই ব্যায়ামগুল করার আগে হাল্কা একটু পরিশ্রম করে নিতে ভুলবেন না যেন। এতে ব্যায়াম করতে গিয়ে হঠাত ব্যাথা পেয়ে বিপদ ঘটার সম্ভাবনা কমে আসবে। এবার আসুন জেনে নেই এই ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে-
১. দেয়ালের সাথে পিঠ লাগিয়ে দাঁড়ান। এভাবে দাড়িয়ে নিজেকে দেয়ালের সমান্তরালে সোজা রাখবার চেষ্টা করুন। সেই সাথে চেষ্টা করতে হবে, আপনার শরীরের পেছন দিকটির পায়ের গোড়ালি থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত যেন দেয়াল স্পর্শ করতে পারে। এভাবে দেয়াল স্পর্শ করে সোজা হয়ে স্ট্রেচ করার চেষ্টা করুন। এভারে ৮ থেকে ১০ বার করুন ব্যায়ামটি।
২. প্রথম ব্যায়াম শেষ হবার পরে এই পর্যায়ে রিং বা বারের সাহায্যে হাতের ভরে ঝুলে পড়ুন। শরীররের ভার ছেড়ে দিন। পা দুটিকে দুলতে দিন পেন্ডুলামের মত। অনুভব করুন মধ্যাকর্ষণ শক্তি নিজের উপরে।
এভাবে ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত ঝুলে থেকে ছেড়ে দিন নিজেকে। আবার একই প্রক্রিয়ায় করুন এই ব্যায়াম। এক সেটে ৮ থেকে ১০ বার করতে পারেন।
৩. এবার আবার রিং ধরুন। তবে এবার ঝুলে থাকতে হবেনা। বরং রিং ধরে নিজেকে উপরে উঠানোর চেষ্টা করুন। এভাবে একবার উপরে উঠতে পারলে তারপর নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিন। ছেড়ে দিয়ে প্রায় ৩ মিনিট পর্যন্ত ঝুলে থাকুন।
এভাবে এই ব্যায়ামটি ৬ সেটে শেষ করুন। মনে রাখবেন শুরুতেই ৩ মিনিট ধরে ঝুলবেন না। আপনার শরীর যে পরিমাণ নিতে পারবে সে পরিমাণ করবেন। ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে ৩ মিনিট করুন।
৪. এই পর্যায়ে এসে শুধুমাত্র রিং বা বার ধরে ৩ মিনিট করে ঝুলে থাকুন। এভাবে ৬ বার করুন।
৫. এই পর্যায়ে এসে ব্যায়ামটি একটু কঠিন মনে হবে। এবার আপনাকে রিঙে বা বারে উল্টা হয়ে পায়ের হাঁটুর ভাজের সাহায্যে ঝুলতে হবে। উল্টা হয়ে ঝুলে নিজের শরীর ছেড়ে দিন। হাত দুটিকে ঝুলতে দিন। এভাবে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে থাকুন।
গোনা শেষ হলে নেমে পড়ুন। এই পর্যায়টি সম্পন্ন করতে কারো সাহায্য নিন। ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করুন। একবারে না পারলে জোর খাটাবেন না নিজের প্রতি। ধীরে ধীরে শেখার চেষ্টা করুন। তারপরও আয়ত্তে আনতে না পারলে এই ব্যায়ামটির সব থেকে কাছাকাছি যতটুকু করতে পারবেন তাই করবেন। তাতে কিছুটা হলেও সাহায্য হতে পারে।
৬. আপনি যদি এই পর্যায়ে এসে পড়েন তবে আপনার জন্য সুখবর হল, সব থেকে কঠিন পর্যায় পার করে এসেছেন আপনি। এরপরে আর রিং বা বারে ঝুলতে হবেনা আপনাকে।
এবার যা করতে হবে তা হল আপনি যেখানে দাড়িয়ে আছেন সেখান থেকে আপনার বাম দিকে দীর্ঘ একটি লাফ দিন প্রথমে। সেই সাথে চেষ্টা করুন ডান পায়ের ভরে অবতরন করতে।
অর্থাৎ লাফ দিয়ে নামার সময় ডান পা আগে মাটি স্পর্শ করবে। লাফ দেয়ার সময় চেষ্টা করবেন যত দীর্ঘ সম্ভব তত দীর্ঘ লাফ দিতে।
৭. এই পর্যায়ে আমরা আমাদের ব্যায়াম রুটিনের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছি। এই পর্যায়ে আপনি আপনার পেটের ভরে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। আপনার শরীর এবং পা থাকবে সোজা এবং টানটান।
হাতদুটোকে তুলে দিন আপনার পেছন দিকে এবং টানটান অবস্থায় রাখুন। এবার এই অবস্থায় থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব বাঁকা করে তুলে ধতে চেষ্টা করুন। আপনার মাথা এবং ঘাড় থাকবে সামনের দিকে সোজা অবস্থায়। এভাবে ৮ থেকে ১০ বার চেষ্টা করুন।
মনে রাখবেনঃ
এভাবে সপ্তাহে ৩ দিন করে নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এগুলো মূলত স্ট্রেচিং ব্যায়াম যা আপনার শরীরের আড়ষ্টতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। শরীরের আড়ষ্টভাব কেটে গেলে উচ্চতা বাড়তে শুরু করে।
তবে এ সবই সম্ভব হবে যদি আপনার বয়স ২৫ এর নিম্নে হয়ে থাকে তবেই। কারণ ২৫ বছর পর্যন্তই কেবলমাত্র আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে যখনই ব্যায়াম করবেন না কেন আগে কিছু ফ্রি হ্যান্ড বা হাল্কা দৌড়ে শরীর ব্যায়াম করার উপযোগী করে নিতে ভুলবেন না যেন।
সেই সাথে আরও খেয়াল রাখবেন যে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল নয়। মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়াম করলে দ্রুত উচ্চতা বাড়বে তা যদি ভেবে থাকেন তবে ভুল করবেন। বরং অতিরিক্ত ব্যায়াম অনেক সময় উচ্চতার বৃদ্ধি রোধ করে দেয়।
তবে শুধু ব্যায়াম করলেই হবেনা। সুষম খাদ্যও গ্রহন করতে হবে। সেই সাথে জীবনযাত্রায় আনতে হবে পজিটিভ মনোভাব। এসবের সাথে ত্যাগ করতে হবে সব খারাপ জীবনাচার এবং খারাপ অভ্যাসগুলোকেও। তবেই সম্ভব হবে সুস্থতার সাথে আপনার উচ্চতার বৃদ্ধি।