মেয়েরা সাধারণত একটু লম্বা হলেই ছেলেদের তুলনায় বেশ লম্বা দেখায়। আর সত্যিকার অর্থেই লম্বা হলে তো কথাই নেই। ৫ ফিট ৬/৭ ইঞ্চির মেয়েদেরই অনেক লম্বা দেখায়। এর চাইতেও বেশি লম্বা হলে মেয়েরা বেশ বিপদেই পড়ে যান। বিশেষ করে আমাদের দেশে লম্বা মেয়েদের সমস্যা একটু বেশীই।
কারণ আমাদের দেশে বেশি লম্বা মেয়ে সাধারণত দেখা যায় না। বাইরে বের হলে মানুষজনের অবাক দৃষ্টি এবং নানা ধরণের মন্তব্য শুনতে শুনতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে যান। এছাড়াও আরও নানা ধরনে অদ্ভুত হাস্যকর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় লম্বা মেয়েদের।
(১) যেখানেই যাওয়া হোক না কেন সকলেই উচ্চতার কথা জিজ্ঞেস করেন: বন্ধু বান্ধবের পরিবার থেকে শুরু করে চাকরির ইন্টার্ভিউয়ের মেম্বার পর্যন্ত সকলেই অন্তত একবার প্রশ্ন করেন ‘আপনার উচ্চতা কতো?’। বিশেষ করে যখন কোনো পছন্দের খাটো মানুষটি হুট করে এই প্রশ্ন করে বসেন তখন লজ্জায় পড়ে যান অনেকেই। আরও সমস্যা হয় যখন সকলেই প্রশ্ন করেন ‘বাসার সবাই কি লম্বা’।
(২) হিল জুতো পড়লে সকলেই অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকে: মেয়েরা একটু হিল জুতো পড়তেই পারেন। কারণ মেয়েদের জন্যই হিল জুতো তৈরি করা হয়। কিন্তু লনবা মেয়েরা ভুলেও হিলের দিকে নজর দিতে পারেন না। নিজের কোনো সমস্যার কারণে নয়। কারণ সকলের একই কথা ‘এমনিতেই লম্বা, তার ওপর আবার হিল পড়ার কি দরকার’।
(৩) প্রেম করার জন্য ছেলে এবং বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না: অনেক লম্বা মেয়েকেই এই সমস্যায় পড়তে হয়। বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গেলে নিজের চাইতে খাটো কিংবা টেনেটুনে নিজের সমান পাত্রের গলায় বাধ্য হয়ে মালা পড়ান অনেক মেয়ে।
(৪) নিজের বন্ধুবান্ধবের সার্কেলে একমাত্র লম্বা মেয়ে: অনেক সময় শুধুমাত্র মেয়ে বন্ধু নয় অনেক ছেলেবন্ধুদের মাঝেও অনেক মেয়ে লম্বা হয়ে যান। একসাথে কোথাও ঘুরতে গেলে তখন বেশ অদ্ভুত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় লম্বা মেয়েদের।
(৫) দুজন লম্বা মেয়েও একজন অপরজনের দিকে তাকিয়ে থাকেন: যেহেতু আমাদের দেশে লম্বা মেয়ে সচরাচর চোখে পড়ে না তাই যখন একজন লম্বা মেয়ে অন্য কোনো লম্বা মেয়ে দেখেন তখন তারা বেশ খানিকক্ষণ দৃষ্টি বিনিময় করেন কিংবা মুচকি হাসেন। কারণ দুজনেই জানেন দুজনের পরিস্থিতির কথা এবং দুজনেই ভুক্তভুগি।
(৬) নিজেকে খাটো মনে হয় এমন কোনো মানুষের সাথে দেখা হওয়া: সারাজীবন সব জায়গায় লম্বা উপাধি পেতে পেতে বিরক্তি ধরে যাওয়ার পর যখন এমন কারো দেখা পাওয়া যায় যাকে দেখলে নিজেকে খাটো মনে হতে থাকে তখন এক অদ্ভুত হাস্যকর অনুভূতি হয়। মনে হয় লম্বা নিয়ে নিজে যতোটা বিরক্ত হয়েছেন তাকেও খানিকক্ষণ সেভাবে বিরক্ত করা যায়।
(৭) খাটো কোনো ছেলের কাছ থেকে প্রেম বা বিয়ের প্রস্তাব: সব চাইতে হাস্যকর যে সমস্যায় পড়েন লম্বা মেয়েরা তা হলো নিজের চাইতে খাটো কোনো ছেলের কাছ থেকে প্রেম বা বিয়ের প্রস্তাব পাওয়া। কারণ কাউকে মুখের ওপর বলে দেয়া যায় না ‘আপনি খাটো’।
(৮) নিজের আকারের পোশাক আশাক ও জুতো খুঁজে পাওয়া যায় না: লম্বা মেয়েদের সবচাইতে যন্ত্রণার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় নিজের আকারের পোশাক আশাক এবং জুতো খুঁজে না পাওয়া। অনেক খুঁজে পেতে যদি কোনো পোশাক বা জুতো পছন্দ হয় তবে তার সাইজ কোনোমতেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর অন্যদের কাছে যে জামাটি পাতের পাতা পর্যন্ত লম্বা হয় সেটি লম্বা মেয়েদের জন্য হাঁটু সমান। পোশাক বানাতেও অনেকটা কাপড়ের প্রয়োজন পড়ে লম্বা মেয়েদের।
(৯) বন্ধুবান্ধবের সাথে ছবি তোলার সমস্যা: ছবি তোলার সময় সবার পেছনে দাঁড়াতে হয় লম্বা মানুষকেই। সব চাইতে মুশকিল হয় তখনই যখন উচ্চতার কারণে ছবিতে মাথা কাটা পড়ে যায় অথবা বন্ধুদের সম্মান রক্ষার্থে নিজেকে কিছুটা বাঁকা করে দাঁড়াতে হয়।
(১০) যখন ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ব্যবহার হতে হয়: ভিড়ের মধ্যে বন্ধুবান্ধব কেউ হারিয়ে গেলে তখন ফোনে যোগাযোগ করা যায় ঠিকই কিন্তু সহজে নজরে পড়েন একজন লম্বা মানুষই। তখন বন্ধু বান্ধবের সাথে থাকলে বন্ধুরা আপনার নাম নিয়ে বলেন ‘ওকে দখেতে পেলেই হবে’।
(১১) অদ্ভুত সব নামকরণ: বিরক্তিকর আরেকটি যে সমস্যা লম্বা মেয়েরা সহ্য করেন তা হলো অদ্ভুত রকমের নামকরণ। লম্বু, বগী, খাম্বা ধরণের অদ্ভুত হাস্যকর নামে পরিচিত হয়ে যান বন্ধুমহলে।
(১২) মানুষ ধারণা করে নেন মেয়েটি মডেল কিংবা বাস্কেটবল খেলোয়াড়: লম্বা মেয়েদের নিয়ে মানুষজনের কৌতূহলের সীমা নেই। তাদের ধারণা মেয়েটি লম্বা মানেই হয়তো মেয়েটি মডেলিং করেন নতুবা তারা বাস্কেটবল বা ভলিবল খেলোয়াড়।