সমাজ এগিয়েছে ঠিকই। কিন্তু যৌনতা নিয়ে আমাদের সমাজে এখনও ‘কিন্তু কিন্তু’ ভাব রয়েছে। দোকানে কন্ডোম কিনতে গেলে অনকেই বাঁকা চোখে তাকান। শুধু তাই নয়, লোকসমক্ষে কন্ডোম কেনাটাও যেন একটা ‘অপরাধ বোধ’ বলে মনে হয় অধিকাংশেরই।
যৌন সংক্রান্ত রোগ এড়াতে কন্ডোম ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম, এনজিওগুলো সচেতনতা প্রচার চালায়। ফলে এর ব্যবহারে আগের তুলনায় অনেকটাই সক্রিয় হয়েছে সমাজ। এগিয়ে এসেছে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। কিন্তু দোকান থেকে খোলা বাজারে কন্ডোম কেনার ব্যাপারে কিন্তু ‘লজ্জাবোধ’ দূর হয়নি।
গত এপ্রিল থেকে অনলাইনে বিনামূল্যে কন্ডোম দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে এডস হেল্থকেয়ার ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা। ৬৯ দিনের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষ কন্ডোমের অর্ডার দেওয়া হয়েছে ভারত থেকে। এর মধ্যে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার কন্ডোমের অর্ডার এসেছে বিভিন্ন এনজিও-র থেকে। বাকি ৪ লক্ষ ৪১ হাজার কন্ডোম ব্যক্তিগত ভাবে অর্ডার দেওয়া। ব্যক্তিগত ভাবে কন্ডোমের অর্ডার সবচেয়ে বেশি এসেছে দিল্লি এবং কর্নাটক থেকে।
ভারতে এডস হেল্থকেয়ার ফাউন্ডেশনের এই বিশেষ কর্মসূচির ডিরেক্টর ভি শ্যাম প্রসাদ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “ভাবতেই পারিনি জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই স্টক শেষ হয়ে যাবে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দোকানে গিয়ে কন্ডোম কেনাটা অনেকেই অস্বস্তিকর মনে করেন। সেই অস্বস্তি এড়াতেই অনলাইনে কন্ডোম পাওয়ার সুযোগ মিলতেই লোকে সে দিকে ঝুঁকছেন। অন্যদের অজান্তেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে চাহিদা মতো কন্ডোম। এমনকী ডেলিভারি পার্সনও জানতে পারবেন না, প্যাকেটে কী রয়েছে গ্রাহকের জন্য। পুরোটাই গোপন থাকবে।
ভারতে যে কন্ডোম কেনা নিয়ে মানুষের মধ্যে কিন্তু কিন্তু ভাব রয়েছে সেটা কন্ডোম প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোও স্বীকার করেছে। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে-র একটি সমীক্ষা বলছে, কর্নাটকে ১.৭ শতাংশ, বেঙ্গালুরুতে ৩.৬ শতাংশ মানুষ কন্ডোম ব্যবহার করেন। তুলনায় কলকাতা (১৯ শতাংশ) ও দিল্লিতে (১০ শতাংশ) কন্ডোম অনেকটাই বেশি ব্যবহৃত হয়। ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (ন্যাকো)-র হিসেব বলছে, বছরে ২০০-২২০ কোটি কন্ডোম বিক্রি হয় ভারতে।